কবিতা - মৌ দাশগুপ্তা

আলোর উৎসব
মৌ দাশগুপ্তা



দুগ্গিঠাকুরের বাপের বাড়ী ফেরত আসার উৎসব
শেষ হতে না হতেই
রোদ্দুরে গা সেঁকতে শুরু করলো
আধ কাঁচা মাটির প্রদীপ আর বাক্সবন্দী বাজি,
সবুজ পাতার আড়ে উঁকি মেরে
সাবালক হয়ে উঠলো প্রাক্‌ হেমন্তের চাঁদ।
আবার চোখের পলক ফেলতে না ফেলতেই
পেঁয়াজ খোসার মতো নানারঙের আবরণে সেজে
দেখা দিল বাহারী আলোর রোশনাই,
আকাশ ছোঁয়া সবুজ মাঠের প্রান্তে
আড়মোড়া ভাঙ্গলো আবার বাঁশের খাঁচা।
ইচ্ছার উজানে মনমাঝি গুনগুনিয়ে ধরলো
শ্যামাসঙ্গীতের সুর,
দিনরাতের এই মায়াবী পটভূমিকায়
নিতান্ত বেরসিকের মত
স্কুলপড়ুয়ার দল বইয়ের পাতায়
মন দিয়ে রচনা খুঁজতে লাগলো,
'আলোর উৎসব: দীপাবলি'।
সেই আলো আর উৎসবের সমারোহে
নিজেকে সামিল করতে,
আড়মোড়া ভেঙ্গে নৈশজাতক চাঁদকে ভুলে,
আদিমতমা মানবীর গন্ধ নিয়ে জেগে উঠলো
পাললিক অমাবস্যার রাত।
কানফাটানো শব্দ দূষণ ও কটূগন্ধী বাতাসের সম্ভাবনায়
শিউরে উঠলো আসন্ন সময়,
অথচ ছুটে যাওয়া মেঠো রং নদী, ফুল রঙা আকাশ,
আলো আঁধারি বন, আসন্ন শীতের নরম রোদ,
ঘরমুখো পাখি, মায়াবতী মেঘ, জবাফুল, নতুন কুঁড়ি,
নবীন কিশলয়, এরা কিন্তু সেসব ভুলে
ব্যস্ত রইলো উৎসবের আয়োজনে।
মা আসছেন যে, সন্তানের মঙ্গল করতে
চিন্ময়ী মা মৃন্ময়ী রূপে দশদিক আলোয় ভরিয়ে,
তমোবৃত প্রাণে আলোর দিশা নিয়ে আসছেন।


1 মতামত:

  1. দেবাশিস কাঞ্জিলাল১৪ নভেম্বর, ২০১৩ এ ৭:৩৯ AM


    মৌ দাশগুপ্তার 'আলোর উৎসব' কবিতাটি যেন এক চিত্রকল্প। প্রাক-পূজা শরতে সমস্ত বাঙ্গালির মননে যে সুর বাজতে থাকে,সেই সুরকে ধরে তিনি এক মুগ্ধ করার মত ছবি এঁকেছেন । তাঁর অন্যান্য লেখার মত এটিতেও তাঁর স্বকীয় পরিশীলতা পরিস্ফুট হয়েছে যথারীতি। অনেক শুভেচ্ছা রইল তাঁর প্রতি ।

    উত্তরমুছুন