সম্পাদকীয় - ডিসেম্বর ২০১৫



কোনও একটি পত্রিকা প্রকাশ হল, অথচ সম্পাদকীয় নেই – কেমন হবে ব্যাপারটা? এই যে নামীদামী দৈনিক সংবাপত্রগুলির তা-বড়ো তা-বড়ো বিজ্ঞাপন নজরে আসে, ঘোষণা থাকে, দৈনিক এত কপি বিক্রি! দৈনিক এতজন পড়ছে! ধরুন, স্বচ্ছ সমীক্ষা চালানো হল, ওই দৈনিক অতজন যে পড়লেন পত্রিকাটি, কতজনে সম্পাদকীয় কলামটি পড়লেন? একই সমীক্ষা চালানো যেতে পারে, দৈনিক না হয়ে সাপ্তাহিক, পাক্ষিক, মাসিক, দ্বিমাসিক, ত্রৈমাসিক সকলের ক্ষেত্রেই। থামুন মশায়, একটু থামুন। অঙ্ক দেখে চোখ আর কত ওপরে উঠতে পারে, কপাল আছে যে!

আর কে না জানে, কপালের নাম গোপাল। সম্পাদকীয় না থাকলে পত্রিকা বেরোয় না, বেরোলে আবার তার দিকে তাকায় না কেউ! কী গেরো...

ছাড়ুন, অত গভীরে না ঢুকলেও চলবে। শীত আসি আসি করছে। এমন আবহে বরং নজর থাকুক চিলেকোঠায়, তার ওয়েবজিনের পাতায় পাতায়, প্রতিটি বিভাগে। ভালো কথা, চালু হল নতুন বিভাগ, “ধারাবাহিক”। স্বস্তি এখন প্রতি কিস্তিতে।        

কবিতা - অদিতি সেন চট্টোপাধ্যায়



 তবুও মানুষ এই জীবনকে ভালোবেসে
অদিতি সেন চট্টোপাধ্যায়

নাগরিক, বড়ো নাগরিক এই জীবনযাপন
সুন্দরতর জীবনের খোঁজে বিজ্ঞাপন
সে বিজ্ঞাপন পেরিয়ে আজও তো চলেছি, চলেছি
মহার্ঘ এক জীবনানন্দ খুঁজেই ফিরেছি
আলোকিত যত হোর্ডিং সব হাতছানি দেয়
জ্বলছে আলেয়া পচা শহরের মিথেন গ্যাসে
একজনও তুমি বন্ধু পাবে না এপাশে ওপাশে
পুতুলখেলার সুতোতে এখানে কে যে টান দেয়?
কে যে দেয় টান? দেখেছ কি সেই অদৃশ্য হাত?
ছড়িয়ে কে দেয় মায়াবী যাতনা? স্বপ্নিল রাত ?
অলিতেগলিতে, বহুতল আর মনোরম মলে
তোমার আমার নিভৃত জীবনে ছলে আর বলে ?
বহুদিন ধরে খুঁজিনি তো আমি জীবনের মানে
যা তুমি দেখালে, যা তুমি বোঝালে, মেনে নিয়ে সব
চললাম, পথ চললাম, আজও চলছি তো শব
বয়ে নিয়ে, শব নিজেই আমার এখানে ওখানে
ছড়িয়ে ছিটিয়ে ছিলো যেন কারা, বহুদিন ধরে
হয়নি, গোছানো হয়নি কারা যে দূরে গেলো সরে
চেনা মুখ যেন, বড়ো চেনা মন মনে হয় আজ,
ব্যস্ত ছিলাম বড়ো, নিয়ে মিথ্যে সুখের সাজ
ক্লান্তি দেখোনি ? ঝুপ করে নামে জীবনের পারে
মাথায় তখন কে বুলায় হাত ? কোন প্রিয়জন?
বুঝেও বোঝনি, ভালোবাসাগুলি হারালে কখন
ভালো বাসাটির দরজায় আজ কে কে কড়া নাড়ে?
কড়া নাড়ে কেউ ঘুমহীন ওই চোখের পাতায়?
উঠে বসে কাটো কালির আঁচড় জীবন খাতায়
ওরা কি শব্দ ? ওরা কেন আসে নিভৃত রাতে ?
কী হিসেব তারা করতে এসেছে আজ কার সাথে ?
চলো তবে, আজ নতুন শব্দে হাত পাকাই
মায়াবী, নরম, নীলচে আলোর শব্দ না,
ভালোবেসে-বেসে দিয়েছে আমাকে যন্ত্রণা
যে সব শব্দ, তাদের আজকে ডাক পাঠাই
চলো তবে আজ ছুটে চলে যাই
ভুবন-ডাঙ্গার মাঠে
পরিচিত সেই আমের বাগানে
বড়ো চেনা পথেঘাটে
লাল সুরকির পথ, আর
তার দুপাশে দুইটি পুকুর
লাল-সাদা ফ্রক, লম্বা বেণীতে
লাল ফিতে বাঁধা খুকুর
এখনও কি তারা রেখেছে আমাকে
রেখেছে আমাকে মনে ?
খেজুর গাছে সে ঝোলানো হাঁড়িটা
বাগানের এক কোনে ?
পদ্মার পাড়ে যে লাল সূর্য
টুপ করে উঠে পড়তো
হাইটাই তুলে দাঁতটাত মেজে
কাজটাজ শুরু করতো ?
বাফার-পোস্টটা আছে কি এখনও ?
না কি সেটা ভেঙ্গে গেছে ?
কতো ছবি আছে সেটার সঙ্গে,
কতো স্মৃতি তোলা আছে
ছড়ানো ছেটানো স্মৃতির ভিড়েতে আটকে জীবন
কাঁদায় হাসায় খেলা করে নিয়ে মন তোমার
যে খেলা খেলছি তুমি আমি, এই খেলা তো সবার
সন্ধ্যা পেরোয়, জেগে ওঠে সুর শুদ্ধ ইমন