সম্পাদকীয় - জানুয়ারী ২০১৬




চিলেকোঠা ওয়েবজিনের তরফে সকলকে ইংরাজি নতুন বছরের গোচ্ছা শুভেচ্ছা। প্রাণে থাকুন, মনে থাকুন, চিলেকোঠায় থাকুন।

নতুন বছরের সম্পাদকীয়তে আসুন একটু র‍্যাপিড ফায়ার খেলি। চটপট জবাব দেবেন আপনারাঃ

১) এই ওয়েবজিনের নিয়মিত পাঠক হিসেবে এই নতুন বছরে দশে কত নম্বর দেবেন একে?
২) লেখাগুলির গুণমান কেমন? ভালো না অ্যাভারেজ?
৩) লুক-ওয়াইজ, অর্থাৎ বহিরঙ্গে কেমন? সহজ না একটু জটিল? জানতে চাইছি, ইউজার-ফ্রেন্ডলি না টাফ?

আমাদের এই ওয়েবজিনকে সমৃদ্ধ ও আরও শানদার করবে আপনার ত্বরিত উত্তর।

কলকাতা বইমেলাতে চিলেকোঠা তার মুদ্রিত পত্রিকা নিয়ে উপস্থিত থাকবে। বইমেলার কোথায়, তা জানতে চোখ রাখুন চিলেকোঠায়... 

কবিতা - অনুপম দাশশর্মা

সাধ্যের
অনুপম দাশশর্মা


সাধ্যের সাথে কথা হলে সে শুধু মুচকি হাসে
জোরাজুরি করলে বড়জোর হাত নাড়ে আশ্বাসের
ওইটুকুই, বুঝে নিই সীমান্তের রেখাচিত্র
অনেকদিন পর হারমোনিয়াম নিয়ে বসলে
রিডগুলো খিলখিলিয়ে হেসে ওঠে
ধুলো উড়ে যায়, অনভ্যাসের কথা মনে করিয়ে

সূর্য বেপাড়ায় চলে গেলে নক্ষত্ররা একজোট হয়
মাটিতে তখন যে যার নিজস্ব স্পন্দন খুঁজে নেয়
যারা অন্ধকারে আলোকিত হয়..
তাদের কথা ভাবে কোন কোন
কলমের অনামিকা,
তাদের পৃথিবীর আকাশ স্বচ্ছ, কোন তান্ত্রিকের
বশীভূত নয়

অকাল বৃষ্টি হয়, ভিজে যায় বিষাদের ক্ষেত্রফল
একা একা দেয়ালে কান পাতি
প্রতিধ্বনিত হয়ে চলে সাধ্যের পরম্পরা
সেখানে ঠাঁই নেই অসম্ভবের সোনার পাথরবাটির!

কবিতা - শমীক জয় সেনগুপ্ত

সূর্যভ্রম
শমীক জয় সেনগুপ্ত
 
অনেক ত' কালি ঘাঁটা হল
অনেক ত' কালি এসে ছিটেছে শরীরে-
 আনাচে কানাচে শুধু সূর্যভ্রম হয়,
আসলে সে অন্ধ বিবর
 আমাদের মনে মনে জমে প্রশ্রয়।
 মাঝরাতে টেলিফোনে আমি ডাকি,
আয়, আয়
আরো বেশি কাছাকাছি আয়।
 আমার সে ডাকে ভ্রম বেড়ে চলে...
 আলো ভেবে যে সূর্য ধারন করেছি
 সে আমাকে দিয়ে যায় কৃষ্ণ গহ্বর।
ভাবি সুখে একা থাকা যাবে
অসুখটা নিয়ে...
তবু স্মৃতি পিছন ছাড়ে না।
পূর্বাশা ফিকে হয়ে জাগে।

কবিতা - পারমিতা চ্যাটার্জী

দুটি পথ
পারমিতা চ্যাটার্জী

শহর থেকে গেছি অনেক দূরে
আমি, তুমি, সে, আরও অনেকে
সেদিন ছিল আষাঢ়ের পূর্ণিমা,
সমুদ্রতীরে চাঁদের মায়াবী আলো আর
দূরন্ত ঢেউয়ের ওঠা পড়া
তুমি যথারীতি ব্যস্ত তোমার বন্ধু বান্ধবীদের নিয়ে,
আমি বালুকাবেলার এক ধারে বসে জোৎস্নাভরা রাতটাকে উপভোগ করছিলাম
এমন সুন্দর রাত, সামনে উত্তাল সমুদ্র,
আকাশভরা চাঁদের আলো----,
তবু যেন নিজেকে খুব একলা আর নিঃস্ব মনে হচ্ছিল
হঠাৎ সে পাশে এসে বসল ---,
বলল ---কি, একা একা?
এই সমুদ্র দেখছি ;
আমি বললাম দেখুন --
ওই দূরে ছোট্ট নৌকাটা কেমন ঢেউয়ের ধাক্কায় টাল খাচ্ছে ---;
সে বলল যদি ঝড় ওঠে নৌকাটা হয়তো তলিয়ে যাবে, তবু সওয়ারিরা নৌকা বেয়ে এগিয়ে চলেছে, পরে কী হবে ভেবে আজকের যাত্রাটি থামিয়ে দেয়নি --;
আমি বললাম সত্যি কথা--
সে বলল জানো তিথি--,
আমাদের জীবনও কিন্তু এই সমুদ্রের মতন--,
অনবরত ওঠাপড়া, তারই মাঝে আমরা সবাই
আমাদের জীবনের তরীটাকে বেয়ে নিয়ে চলি থেমে যাই না ---;
আমি মুগ্ধ হয়ে শুনছিলাম তার কথা--
সে বলল ---
জীবনের একটা পাড় ভেঙে গেলে অন্য পাড়টা ঠিক গড়ে ওঠে


তারপর আমাদের এই সফরটায় তুমি যখন অন্য জীবন নিয়ে ব্যস্ত থাকতে, আমরা দুজনে তখন
অনেক কাছে এসে গিয়েছিলাম, তুমি জানতে পারোনি বা জানতে চাওনি
আমরা ভেসে চলেছিলাম এক অন্য স্রোতে,
যে স্রোতে আমি আমার হারিয়ে যাওয়া আমিকে খুঁজে পেলাম
তার উৎসাহে আমি লিখতে আরম্ভ করি, নতুন করে গান গাইতে আরম্ভ করি
এখন আমি লেখিকা বলে বেশ নাম করেছি
অনেক সভায় যাওয়া আসা করি,
সেও তার জীবন নিয়ে ব্যস্ত;
অনেকদিন পর একটা সাহিত্যসভায় তার সাথে আমার দেখা হল ---,
সে এগিয়ে এল আমায় দেখে---
বলল---
কত গল্পইতো লিখলে--
আমাদের গল্পটা লিখবে না?
দুটি নদী শুধুই বয়ে গেল,
মোহনায় মিলে গেল না--
আমি বললাম--
এবার লিখব--

তারপর----?
আবার যে যার পথে---,
আজও পূর্ণিমা --