সম্পাদকীয় - মে ২০১৫




দীর্ঘ দু’মাসের বিরতির পর “চিলেকোঠা ওয়েবজিন” আবার আমাদের মাঝে ফিরে এলো।   লেখক’কুল ও পাঠক’কুল এর কাছে বিনীত আবেদন আপনারা পুনরায় লেখা পাঠান ও পড়ুন।

পাশাপাশি কি ধরনের লেখা বা বিভাগ আপনাদের পছন্দ তাও আমাদের জানান।

ইংরাজী কবিতা - দূর্বা মিত্র

WHY DID YOU MAKE ME A MOTHER?
DURBA MITRA




At last the sound of my baby..

After a thousand years..

"Cerebral Palsy"-the doctors nodded.

Ah.. He was special.. very special..

And made me the happiest Ma.

.

After a quarter of a century..

Almighty took him back..

Allah ..God..and Hari..

Allow him to return..else.. Allow me to go to him.

কবিতা - ভাস্কর রায়



জন্ম নেব বাউলের ঘরে
ভাস্কর রায়

                        আরও একবার জন্ম যদি হয়ে
                      এই ভবের সংসারে
                       ইচ্ছা করে জন্মাই যে
                              কোনও এক বাউলের ঘরে ।।
                        বাউল হয়ে গান শোনাবো
                        বাউল গানে মন ভরাবো
                                 তুলসী মালা গলে দিয়ে
                                 কেন্দুলি মেলাতে গিয়ে
             গান শুনিয়ে মন মাতাবো
                          বাউল গানের সুরে
                 ইচ্ছা করে থাকবো আমি
                   কোন এক বাউলের ঘরে ।।
                    গান গাইবো আর সুর বাঁধবো
                        বাউল বসন পরে
                   সুরে তালে মন রাঙাবো
                     একতারাটি হাতে ।।
                   জাত জানি না পাত মানি না
              আমি জাতের বিচার করি না
                 জাত পাতের মিলন হবে
                  বাউল গানের সুরে ।।
                ভবের হাটে থাকবো আমি
               ওগো ভবের হাটে থাকবো আমি
                        একতারাকে সঙ্গী করে
                  ইচ্ছা করে জন্ম নেবো
                     কোন এক বাউলের ঘরে  ।।

কবিতা - অরূপ দাস

খেলা
অরূপ দাস


প্রগাঢ় অন্ধকারে অন্তহীন খেলা ,
কালের সন্ধ্যায় ভেজা মাটির সঙ্গে
নগ্ন শরীরের আলিঙ্গন
আঁধারের ঘেরাটোপে সরীসৃ্পের আস্ফালন
বড়ই অদ্ভুত |
আকর্ষণ-আলিঙ্গন-আস্বাদন
অন্ধকারটা আদিমতাকেও ছাড়িয়ে যাচ্ছে |
সময়ের নিষেধ তুচ্ছ,
তুচ্ছার্থে যাওয়া-আসা আসা-যাওয়া
এবং ......
অন্তস্থল থেকে অন্তস্থলে |
সরীসৃ্পের ধারালো আক্রমণ
অগুন্তি জোনাকিগুচ্ছকে ছিঁড়ে ফেলে|
টিপটিপ করে ঝরে পড়ে আলো |
আলোর রোশনাইটা খুবই ক্ষণস্থায়ী
তবু তাকে স্বাগত জানায় কতগুলো চারপেয়ে|
কীসের অজান্তিক গন্ধে
লকলকে জিভটা আরও লোভনীয় হয়ে উঠছে|
অন্ধকারের তৃষ্ণা আরও গভীর থেকে গভীরে......সঙ্গমস্থলে|
সময় শেষ-রাত শেষ-অন্ধকার শেষ
ভোরের অস্ফুট আলোয়
দুটি পরিত্যক্ত খোলস ||

কবিতা - সৌভনিক বুবাই চক্রবর্তী

ভালোবাসা
সৌভনিক বুবাই চক্রবর্তী


মায়ের সাথে আঙুল দিয়ে বর্ণপরিচয়
ঠাকুরদার পাশে শুয়ে সন্ধ্যের পরীর রূপকথা
নাকে লেগে থাকা ঠাকুরমার সুপুরি দোক্তার ঘ্রাণ,
পৌষের পিঠে পায়েস – আশ্বিন সংক্রান্তির গারুর ডাল,
সদ্য ষোলোর শাড়িতে পাশাপাশি সরস্বতী বন্দনা,
আষাঢ়ের কাদা মাঠে ফুটবল –
শীতের দুপুরে পিঠে রোদ নিয়ে কুলের স্বাদ,
বেদম রাগে – কাঁচা বাংলায় খিস্তি খেউড়
প্রেমে, নরম নদী হয়ে আমি বাঙালি – ভাষায় বাঙালি –
প্রেমে বাঙালি শতকরা একশো শতাংশ বাঙালি।

কবিতা - বাবিন গাঙ্গুলি

সাধারন
বাবিন গাঙ্গুলি


মিথ্যের রথ চড়ে ঘুরে বেড়াই এই শহরে
মুক্তির তলাশে
মিথ্যে জীবন, প্রেম, মিথ্যের ভুমিকা নিয়ে বেঁচে থাকা
যৌবন উল্লাসে।
আমি আর আমাতে চলে সংঘাত।

যখন স্বপ্নরা দলছুট হয়
সত্যের হাত ধরে জীবন যৌবন।

দরজার ভিতরে দরজায় পথ হারায় ইচ্ছেগুলো
ভেঙে চুরমার অলীক কল্পনা।

তখন... মন খুলে দেখি
এ সত্য জানতে চাওয়া – এক আছিলা।
একটা স্বপ্ন দেখতে চাই রঞ্জনা
তুমি কি দেখাবে ?
আমি আর সাধারন থাকব না।

কবিতা - তনুশ্রী চক্রবর্তী

লুকোচুরি
তনুশ্রী চক্রবর্তী


পাহাড়পুরের একমুঠো মেঘ সাজিয়ে রাখি তাকে ,
লুকিয়ে খেলা ‘ টুকি টুকি ’ কাজের ফাঁকে ফাঁকে –
হারিয়ে যাবো মেঘের সাথে , হারিয়ে যাবে মন
খুঁজবে তখন মেঘ বাহাদুর ? ‘কোথায় রে তুই? শোন’
হারিয়ে গেছি অন্তরালে , নাও না আমায় খুঁজে ;
‘দাও না সাড়া, তবেই না সই দিকটি নেবো বুঝে –’
চুপি চুপি আড়াল থেকে হাসবো মনে মনে
‘কোথায় গেলে , খুঁজবো কোথায় ! কৃষ্ণচূড়া বনে ?’
আসবে কাছে যেই না তুমি পরবো মেঘের শাড়ি ;
মুখ ফিরিয়ে আকাশপানে করবে না তো আড়ি ?
ভাঙতে আবেশ বৃষ্টি হয়ে ঝরবো রিমঝিম
তাল মেলাবে চিন্তামণি মাদল দ্রিমদ্রিম ।
সিক্ত হবে এমন ধারা ভাববে এলো নেমে,
চোখ খুলবে যেইনা তুমি নৃত্য যাবে থেমে ।
এমন সময় মেঘবালিকা বলবে কাছে এসে,
‘আর কোনদিন মেঘের মিনার দেবে ভালবেসে ?’

কবিতা - পিয়ালী বসু

অসুখ
পিয়ালী বসু


পায়ের পাতা গোড়ালি ছাড়িয়ে
আস্তে আস্তে সে জায়গা করে নিচ্ছে কানের লতিতে
বুকের গোপন খাঁজে, চিবুকে
বেগম আখতারের গানের সঙ্গে সঙ্গে
সেও ছড়াচ্ছে শিরা উপশিরায় ...

ঐতিহাসিক এই অসুখের মাঝেই
জমে আছে শত মৃত্যু !!

কবিতা - শমীক জয় সেনগুপ্ত

মা
শমীক জয় সেনগুপ্ত


মা, তোমার হাত দুটো পালটে মেয়েদের হাত করে নাও না কেন? মারলে বড্ড লাগে।
মা তোমার আঁচলে গীঁট বাঁধো- আমার পেন্সিল খুঁজে পাচ্ছি না। মা, আজ রাঁধবে না তুমি- আমার মাথায় হাত বুলিয়ে দাও। মা, আজ খাইয়ে দাও । মা, গল্প বল না- আম্মার গল্পগুলো পুরোনো হয়ে গেছে। মা, আমি আজ লিখেছি... তুমি পড়বে!! মা, আমিও আজ পুরোনো হয়ে গেছি; আমায় নতুন করে নাও।





উদ্ভ্রান্ত

নিস্তব্ধ রাস্তার বুকে চপ্পল চালিয়ে উদ্ভ্রান্ত বেসামাল চরণেরা চারণ হতে চায়; আর বে-আব্রু চাঁদ মাতাল হাওয়ার সাথে আশনাই করে দিক ভুল করিয়েছে এখন আমার। জানিনা যে দিকে তাকিয়েছি, তার আজ কি নাম হয়েছে; নৈঋতে নির্বেদ মনন হোঁচট খাক, চোট পেয়ে রক্ত ঝরাক! তবু গান্ধারীর চোখ অনিশ্চিত অন্ধত্বে অমর হয়ে থাক। চল আমরা গঙ্গার বুকে চুপচাপ হেঁটে আসি রাতে। তারপর মিশে যাব তারাদের সাথে, জনান্তিকে।


মা বাবা ও এক ছেলে আর তার ভালবাসা


আমার সাথে সাথে আরো দুজন আমার সাথে জন্মেছিল। একজন আমার মা, অন্যজন বাবা। আর তাদের সাথে সাথে জন্ম নেয়, বেড়ে ওঠে গাছ গাছালির সম্পর্কেরা। তবু তারা আমার সমব্যাথী নয়। তবু তাদের বয়স আমার ধারে কাছে আসে না। আমি ভালবেসে একটু ঝুঁকেছিলাম। বিশ্বাস করে ঝুঁকিও নিয়েছিলাম- তারা বলে উঠলো, গাছ হও ঝুঁকে যেও না। সময়ের সাথে সাথে তারাও তো পাথর হল, সে পাথরে আমি তবু দাগ নই- দাগ কাটা এ যুগেও কঠিন ভীষণ।