ভ্রমণকাহিনী - রানী সিনহা


লক্ষ্মৌতে
রানী সিনহা



অনেকদিন ধরেই আমাদের কাছে complimentary দুটো plane এর টিকিট পড়েছিল। কোথায় যাই কোথায় যাই ভাবছি, হঠাৎ মাথায় এলো লক্ষ্নৌ গেলে কেমন হয়?

যেই ভাবা সেই কাজ, নেটে হোটেল বুক করে ২২শে মে সকাল ৯।৩০ য়ে ইন্ডিগো তে লক্ষ্নৌর দিকে রওনা দিলাম। সকলেই প্রমাদ গুনলো, এই গরমে লক্ষ্নৌ????



কিন্তু আমাদের অতি উৎসাহে কোনও কিছু বাধা হয়ে দাঁড়ালো না। আড়াই ঘণ্টার মধ্যে আমরা পৌঁছে গেলাম। আমাদের pickup করার জন্য হোটেলের গাড়ী দাঁড়িয়ে ছিল। কাজেই গাড়ীতে উঠে আর গরম মালুম করতে পারলাম না। হোটেলে গিয়ে একটু fresh হয়ে নিয়ে আবার আমরা ঘুরতে বেড়িয়ে পড়লাম। লক্ষ্নৌ শহর ভীষণ পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন। মায়াবতী শহরটাকে খুব সুণ্দর করে সাজিয়েছেন। একটা park তৈরী করিয়েছেন, দেখার মত। মায়াবতীর symbol ছিল হাতী, তাই ওই park-এর চারিদিক হাতী দিয়ে সাজানো। রাস্তার মাঝখানে মায়াবতীর বিশাল বড়ো একটা statue আছে, যেটা দূর থেকে দেখা যায়। মায়াবতী যা করেছেন, অখিলেশ তা রক্ষা করছেন ও আরও সুন্দর করছেন। গাড়ীতে সারা শহর ঘুরে মোটামুটি একটা শহরের পরিচয় নিয়ে আমরা হোটেলে ফিরে গেলাম। আমরা তিন রাত ছিলাম ওখানে। ডিনারে কাবাব ছিল আমাদের মেনুতে, লক্ষ্নৌতে নবাবি খানা বিখ্যাত সকলেরই জানা। পরের দিনের ডিনারের জন্য বিরিয়ানী রেখে দিলাম…



পরের দিন এসি গাড়ী নিয়ে বেরোলাম লক্ষ্নৌর ভুলভুলাইয়া দেখতে। খুব অবাক লাগে ভাবতে, সেই সময় এখনকার মত এত কিছু ছিল না, কিন্তু কি সুন্দর ওদের কারুকাজ। এবার হচ্ছে আসল সময়, বাইরে এত গরম ছিল গেট থেকে নেবে ভুলভুলাইয়ার দরজা পর্যন্ত যেতে বেশ রোদের কবলে পড়েছি। ঠাণ্ডা গাড়ী থেকে নেবে আরও বেশী গরম লাগছিল। কিন্তু ভেতরে ঢুকে গেলে আবার ঠাণ্ডা।


একটা খুব মজার ঘটনা বলি—আমি আর আমার Husband গরমের জন্য মাথায় টুপি আর Sunglass পরেছিলাম; এখানে বলে রাখা ভালো, ভুলভুলাইয়ার টিকিটের দাম ৫০টাকা, আমাদের দেখে তারা চেয়ে বসলো ৫০০টাকা!! আমরা তো অবাক হয়ে চেয়ে রইলাম, যখন বুঝলাম ব্যাপারটা, তখন সোজা বাংলায় বললাম, আমরা বাঙালী...হা হা হা। তখন ৫০০ টাকা ৫০ টাকায় দাড়ালো। ভুলভুলাইয়ার ভেতরে ঢুকে এবার আমার মজা করার পালা। আমরা প্রথমেই সঙ্গে গাইড নিয়েছিলাম, তাই মজা করতে সাহস পেলাম। আমরা জানি ভুলভুলাইয়াতে কেউ হারিয়ে গেলে আর তাকে খুঁজে পাওয় যায় না। আমি গাইড কে বলে একটু লুকিয়ে পড়লাম, যেন হারিয়ে গেছি। আমার Husband ডাকছে বার বার, কিন্তু সাড়া না পেয়ে বেশ ভাবনায় পড়ে গিয়েছিল, ভাবলো, গেলো বোধহয় এই বয়সের সাথী, আমি কিন্তু ওর কাছেই একটু আড়ালে ছিলাম, তারপর সামনে এসে দাঁড়াতেই দুজনেই খুব হাসলাম।



1 মতামত:

  1. দেবাশিস কাঞ্জিলাল১৩ নভেম্বর, ২০১৩ এ ৫:০১ PM

    ভারী সুন্দর লেখা ! হারানো স্মৃতি ফিরিয়ে দিল !

    উত্তরমুছুন