প্রেম
নন্দিনী সেনগুপ্ত চক্রবর্তী
জীবন বড়োই আনন্দময়। জীবন এক হঠাৎ পাওয়া খুশির উপহার। আর প্রেম ভালোবাসা হল সেই জীবনের সবচেয়ে বড় এক উপহার। রবি-কবি নিজেকে শুধিয়েছেন,‘ভালবাসা কারে কয়,সে কি কেবলই যাতনাময়!’ জীবনের সবচেয়ে বড় কাম্য বস্তু হল ভালবাসা। মানুষ তারই সন্ধানে সারা জীবন কাটিয়ে দেয়।
আমার ভালোবাসার প্রতি এই অনুরাগ জন্মেছে বেশ ছোট বয়স থেকে। ঠাকুমা বলতেন,‘পৃথিবী ভালোবাসার স্থান,ভালবাসিয়া ধন্য হও।‘ আমার কাছে ভালবাসা হল,সূক্ষ্ম,সুন্দর,কিছু অস্পষ্ট,দখিণা বাতাসে ভেসে আসা এক শিহরন জাগান অনুভব। ভালবাসা হল এক প্রাপ্তি,যা একটি কথা,কি দৃষ্টি-বিনিময় বা ভাব-বিনিময় থেকে পাওয়া যায়,যা মনের মধ্যে একটা অদ্ভুত সুখের আলোড়ন তুলতে পারে,যার রেশ ফিকে হতে অনেক সময় বয়ে যায়।
আমার ছেলেবেলায়,হয়ত বছর ৯-১০ বয়স তখন আমার,সমবয়সী একটি ছেলে খেলার ছলে বলেছিল,‘তোকে ভালবাসি!’সেই অদ্ভুত অনুভূতি আর সেই ছেলেটির চোখের সরল দৃষ্টি আজও আমার মনে নাড়া দিয়ে যায়। সেই রোমান্টিক ভালবাসা আজো আমাকে আকর্ষণ করে।
ছেলেবেলায় আমার মা খুব কড়া স্বভাবের মানুষ ছিলেন, আমায় আগলে রাখতেন সবসময় । মায়ের ভয়ে ছেলেরা আমার ধারে কাছে আসতে ভয় পেতো। আর প্রেমে বিশ্বাসী হলেও সাহসে কুলোয় নি,তাই প্রেম করে বিয়ে করাও হয়ে ওঠেনি।
কিন্তু তাই বলে প্রেমে যে পড়িনি সে কথা বলা যাবে না,কারন ছেলেদের থেকে রোম্যান্টিক আহ্বানের কথা তো সত্যের খাতিরেই স্বীকার করতে হবে।
প্রেম পর্বের যে ব্যাপারটি আমায় সবচেয়ে আকর্ষণ করে সেটি হল,সদ্য প্রেমে পড়ার পরবর্তী অবস্থা। একটি ছেলেকে ভাল লেগে গেল,তারপর তাকে নিয়ে শুরু হল ভাবনা চিন্তা। পড়াশুনা,কাজকর্ম,স্নানাহার সব তখন মাথায় উঠল, সবসময় মনে চিন্তা,কখন তাকে দেখতে পাবো বা এখন যদি সে থাকতো সাথে কি ভালোই না হতো ! এমনকি সিনেমা দেখতে গিয়ে,নিজের জীবন নিয়ে নানা কল্পনা। উচাটন মন! আবার যদি তার সাথে দেখা হয়ে যায় তো হয়ে গেল; তার প্রতি পদক্ষেপ,কথা বলার ভঙ্গি,একটু তাকানো,হাসি,~ তার সব কিছুকে খেয়াল করা,ভাল লাগা,শিহরন – সে এক অনাস্বাদিতপূর্ব অনুভূতি !
এরপরে আসে প্রেম নিবেদনের পালা। আমাদের দেশে এখনও সাধারণতঃ ছেলেরাই মেয়েদের প্রেম নিবেদন করে, অবশ্য উল্টোটাও ঘটে আজকাল বেশ।
এই সদ্য প্রেমে পড়ার অধ্যায়টি ঠিক যেন বসন্ত কালের মত,কোথাও একটা মন কেমন করা আমেজ ছেয়ে যায় মনে,কোকিলের ডাক শুনে উড়ু উড়ু করে ওঠা মনের মতন। দুটি নরনারীর মধ্যে প্রেম জন্মায় প্রাথমিক বন্ধুত্ব থেকে,বন্ধু হতে পারলে পরবর্তী কালে সেটি প্রেমে পরিণত হয়। ক্রমশঃ সম্পর্ক গভীর হয়,একে অপরের কাছে নিজেদের মন মেলে ধরা, একে অপরকে জানতে পারা এবং মনের কথা বিনিময় দিয়ে।
এই সম্পর্ককে সুন্দরভাবে বয়ে নিয়ে যাওয়া বড় কঠিন, তার জন্য দু’পক্ষেরই সহযোগিতার বিশেষ প্রয়োজন। আমরা যেমন গাছে জল দিই,সার দিই, তেমনি সম্পর্কের প্রতিটি মুহূর্তকে লালন করার প্রয়োজন আছে খুব। তবে দুটি মানুষের মধ্যে যখন একটি প্রেমের সম্পর্ক তৈরি হয়,তখন তা’ বাঁচিয়ে রাখতে কয়েকটি বিষয় মনে রাখা বিশেষ প্রয়োজন ।
যেমন,প্রেম মানে কেউ কারুর সম্পত্তি নয়,প্রত্যেকের আলাদা মতামত বা ইচ্ছে থাকাটাই স্বাভাবিক। কারুর প্রয়োজন,পছন্দ অপছন্দগুলি অপরজনের উপর চাপিয়ে দেওয়া সঙ্গত নয়। বরং দুজনের বন্ধুত্ব বা একসাথে সময় কাটান যেন শেষপর্যন্ত দুজনের ভাল লাগায় এসে শেষ হয়। যে যেরকম তাকে সেই রকম ধরেই ভালবাসা প্রয়োজন ।এমন বন্ধু আশা করাই উচিৎ নয়, যে অপরের পছন্দ অনুযায়ী ব্যবহার করবে,যা চাই তাই দিতে থাকবে কিম্বা সবসময় অপর জনের প্রয়োজন মেটাতে প্রস্তুত থাকবে।
অপরদিকে বরং এমন একজন বন্ধু চাই,যে সর্বদা পাশে থাকতে রাজী। অর্থাৎ একজনের যদি স্বপ্ন থাকে সঙ্গীত শিল্পী বা অভিনেতা কিংবা অন্য কিছু হবার,তবে তাকে উৎসাহ দিয়ে যে কোনো ভাবে সাহায্য করাই প্রয়োজন। একে অপরের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়া ও পরস্পরের প্রতি সৎ থাকা খুব জরুরী। এই পৃথিবীতে প্রতিটি মানুষ আলাদা। দুজনের ভালবাসা পারস্পরিক সাহচর্য্যে যেন মধুর হয়ে উঠতে পারে, সেটিই দুজনের কাছে এক পরম কাঙ্খিত বিষয়।
নিজের অভিজ্ঞতা ও স্বল্প জ্ঞানের ভিত্তিতে প্রেম সম্পর্কে এই লেখাটি, সবার মতের সাথে মিলবেই,এমনটা আশা করিনা কখন । তাই যদি কোন মতের অমিল হয়, দয়া করে মার্জনা করে দেবেন আমায় !
জীবন বড়োই আনন্দময়। জীবন এক হঠাৎ পাওয়া খুশির উপহার। আর প্রেম ভালোবাসা হল সেই জীবনের সবচেয়ে বড় এক উপহার। রবি-কবি নিজেকে শুধিয়েছেন,‘ভালবাসা কারে কয়,সে কি কেবলই যাতনাময়!’ জীবনের সবচেয়ে বড় কাম্য বস্তু হল ভালবাসা। মানুষ তারই সন্ধানে সারা জীবন কাটিয়ে দেয়।
আমার ভালোবাসার প্রতি এই অনুরাগ জন্মেছে বেশ ছোট বয়স থেকে। ঠাকুমা বলতেন,‘পৃথিবী ভালোবাসার স্থান,ভালবাসিয়া ধন্য হও।‘ আমার কাছে ভালবাসা হল,সূক্ষ্ম,সুন্দর,কিছু অস্পষ্ট,দখিণা বাতাসে ভেসে আসা এক শিহরন জাগান অনুভব। ভালবাসা হল এক প্রাপ্তি,যা একটি কথা,কি দৃষ্টি-বিনিময় বা ভাব-বিনিময় থেকে পাওয়া যায়,যা মনের মধ্যে একটা অদ্ভুত সুখের আলোড়ন তুলতে পারে,যার রেশ ফিকে হতে অনেক সময় বয়ে যায়।
আমার ছেলেবেলায়,হয়ত বছর ৯-১০ বয়স তখন আমার,সমবয়সী একটি ছেলে খেলার ছলে বলেছিল,‘তোকে ভালবাসি!’সেই অদ্ভুত অনুভূতি আর সেই ছেলেটির চোখের সরল দৃষ্টি আজও আমার মনে নাড়া দিয়ে যায়। সেই রোমান্টিক ভালবাসা আজো আমাকে আকর্ষণ করে।
ছেলেবেলায় আমার মা খুব কড়া স্বভাবের মানুষ ছিলেন, আমায় আগলে রাখতেন সবসময় । মায়ের ভয়ে ছেলেরা আমার ধারে কাছে আসতে ভয় পেতো। আর প্রেমে বিশ্বাসী হলেও সাহসে কুলোয় নি,তাই প্রেম করে বিয়ে করাও হয়ে ওঠেনি।
কিন্তু তাই বলে প্রেমে যে পড়িনি সে কথা বলা যাবে না,কারন ছেলেদের থেকে রোম্যান্টিক আহ্বানের কথা তো সত্যের খাতিরেই স্বীকার করতে হবে।
প্রেম পর্বের যে ব্যাপারটি আমায় সবচেয়ে আকর্ষণ করে সেটি হল,সদ্য প্রেমে পড়ার পরবর্তী অবস্থা। একটি ছেলেকে ভাল লেগে গেল,তারপর তাকে নিয়ে শুরু হল ভাবনা চিন্তা। পড়াশুনা,কাজকর্ম,স্নানাহার সব তখন মাথায় উঠল, সবসময় মনে চিন্তা,কখন তাকে দেখতে পাবো বা এখন যদি সে থাকতো সাথে কি ভালোই না হতো ! এমনকি সিনেমা দেখতে গিয়ে,নিজের জীবন নিয়ে নানা কল্পনা। উচাটন মন! আবার যদি তার সাথে দেখা হয়ে যায় তো হয়ে গেল; তার প্রতি পদক্ষেপ,কথা বলার ভঙ্গি,একটু তাকানো,হাসি,~ তার সব কিছুকে খেয়াল করা,ভাল লাগা,শিহরন – সে এক অনাস্বাদিতপূর্ব অনুভূতি !
এরপরে আসে প্রেম নিবেদনের পালা। আমাদের দেশে এখনও সাধারণতঃ ছেলেরাই মেয়েদের প্রেম নিবেদন করে, অবশ্য উল্টোটাও ঘটে আজকাল বেশ।
এই সদ্য প্রেমে পড়ার অধ্যায়টি ঠিক যেন বসন্ত কালের মত,কোথাও একটা মন কেমন করা আমেজ ছেয়ে যায় মনে,কোকিলের ডাক শুনে উড়ু উড়ু করে ওঠা মনের মতন। দুটি নরনারীর মধ্যে প্রেম জন্মায় প্রাথমিক বন্ধুত্ব থেকে,বন্ধু হতে পারলে পরবর্তী কালে সেটি প্রেমে পরিণত হয়। ক্রমশঃ সম্পর্ক গভীর হয়,একে অপরের কাছে নিজেদের মন মেলে ধরা, একে অপরকে জানতে পারা এবং মনের কথা বিনিময় দিয়ে।
এই সম্পর্ককে সুন্দরভাবে বয়ে নিয়ে যাওয়া বড় কঠিন, তার জন্য দু’পক্ষেরই সহযোগিতার বিশেষ প্রয়োজন। আমরা যেমন গাছে জল দিই,সার দিই, তেমনি সম্পর্কের প্রতিটি মুহূর্তকে লালন করার প্রয়োজন আছে খুব। তবে দুটি মানুষের মধ্যে যখন একটি প্রেমের সম্পর্ক তৈরি হয়,তখন তা’ বাঁচিয়ে রাখতে কয়েকটি বিষয় মনে রাখা বিশেষ প্রয়োজন ।
যেমন,প্রেম মানে কেউ কারুর সম্পত্তি নয়,প্রত্যেকের আলাদা মতামত বা ইচ্ছে থাকাটাই স্বাভাবিক। কারুর প্রয়োজন,পছন্দ অপছন্দগুলি অপরজনের উপর চাপিয়ে দেওয়া সঙ্গত নয়। বরং দুজনের বন্ধুত্ব বা একসাথে সময় কাটান যেন শেষপর্যন্ত দুজনের ভাল লাগায় এসে শেষ হয়। যে যেরকম তাকে সেই রকম ধরেই ভালবাসা প্রয়োজন ।এমন বন্ধু আশা করাই উচিৎ নয়, যে অপরের পছন্দ অনুযায়ী ব্যবহার করবে,যা চাই তাই দিতে থাকবে কিম্বা সবসময় অপর জনের প্রয়োজন মেটাতে প্রস্তুত থাকবে।
অপরদিকে বরং এমন একজন বন্ধু চাই,যে সর্বদা পাশে থাকতে রাজী। অর্থাৎ একজনের যদি স্বপ্ন থাকে সঙ্গীত শিল্পী বা অভিনেতা কিংবা অন্য কিছু হবার,তবে তাকে উৎসাহ দিয়ে যে কোনো ভাবে সাহায্য করাই প্রয়োজন। একে অপরের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়া ও পরস্পরের প্রতি সৎ থাকা খুব জরুরী। এই পৃথিবীতে প্রতিটি মানুষ আলাদা। দুজনের ভালবাসা পারস্পরিক সাহচর্য্যে যেন মধুর হয়ে উঠতে পারে, সেটিই দুজনের কাছে এক পরম কাঙ্খিত বিষয়।
নিজের অভিজ্ঞতা ও স্বল্প জ্ঞানের ভিত্তিতে প্রেম সম্পর্কে এই লেখাটি, সবার মতের সাথে মিলবেই,এমনটা আশা করিনা কখন । তাই যদি কোন মতের অমিল হয়, দয়া করে মার্জনা করে দেবেন আমায় !
খুব ভালো লাগল, আসলে আপনি আমাদের সকলের মনের গভীরে সযতনে লালিত কথাটি সুন্দর ভাবে বলে দিয়েছেন। এমন লেখা আরও চাই পরবর্তী সংখ্যা গুলোতে।
উত্তরমুছুন