বিতর্ক বিভাগ - চিলেকোঠা সরগরম

এই সংখ্যার বিষয়ঃ
সমকামিতা ভারতীয় সংস্কৃতির পরিপন্থী

(বিশেষ সূচনাঃ এই বিভাগে প্রকাশিত প্রতিটি মন্তব্য অংশগ্রহণকারীর একান্তই নিজস্ব মতামত, এ বিষয়ে চিলেকোঠা অয়েবজিন কোনোভাবে দায়ী নয়)



পক্ষেঃ


১) রূমনি সেন

সমকামিতা প্রকৃতি-বিরুদ্ধ ঘটনা-


সমকামিতা হল এক অস্বাভাবিক, অপ্রাকৃতিক,অনুচিত মানবাধিকার বিরোধী কাজ। দুঃখের বিষয় এটা উচিত কি অনুচিত এ নিয়েও বিতর্ক হচ্ছে। মহাশ্বেতা দেবী বলেছিলেন,এমনই এক সমাজে আমরা বাস করি যেখানে আকাশ নীল, গাছের পাতা সবুজ, জল তরল এবং নীচের দিকে যায় ইত্যাদি স্বতঃসিদ্ধ বিষয়েও বহুপাক্ষিক আলোচনার প্রয়োজন হয়।

দুটি পুরুষ পরস্পরের সাথে স্বাভাবিক যৌন সম্পর্ক করতে পারে না, প্রাকৃতিক কারনে। প্রকৃতির নিষেধ আছে বলে কোন পশুপাখি সমলিঙ্গের মধ্যে সেক্স করে না । সেক্স এর উদ্দেশ্যই হল রিপ্রোডাকশন, যেটা বিপরীত লিঙ্গের মধ্যে সেক্স এর ফলেই সম্ভব।

সমকামী বিবাহিতরা অনেক সময় টেস্টটিউব বেবী বা দত্তক সন্তান পালনের কথা বলে। কিন্তু এই সন্তানেরা তাদের স্বাভাবিক মা বা বাবাকে পায় না,এবং একজনের সাথে তাদের রক্তের সম্পর্ক থাকে না কোন ।এই সব শিশুরা পরবর্তী কালে Identity Crises এর শিকার হয়, সমাজে নিজেদের স্থান খুঁজে পায় না ।

সমকামিতাপন্থীদের নানা অপযুক্তি আছে । এই সব তার্কিকদের বক্তব্য হল, সমকামিতা মানুষের একটা অধিকার, সুপ্রীম কোর্টের রায় এই অধিকার খর্ব করেছে।

বস্তুত সমকামিতা একটা অসম্ভব ব্যাপার। যখন দুজন পুরুষ সেক্স করে তখন একজন স্ত্রীলোকের ভূমিকা পালন করে, এবং সে তার শরীরটা ব্যবহৃত হতে দেয়, যাতে অপর পুরুষটি সেক্সের আনন্দ উপভোগ করতে পারে। এটাই মানবাধিকারের সবচেয়ে বড় উল্লঙ্ঘন।

সমকামিতার ফলে এডস রোগের মহামারী শুরু হবে,তা' বলাই যায়। শুধুমাত্র এডস মহামারী থেকে বাঁচতে সমকামিতা বর্জনীয়। বাৎস্যায়ন বলেছিলেন, যে ব্যক্তি অকাম নারীতে (যে আসলে পুরুষ ! ) অভিগমন করে সে অনন্ত নরকের অধিবাসী হয়।

সুতরাং বোঝা যাচ্ছে দুজন ব্যক্তি সেক্স করছে, অথচ একজন আনন্দ উপভোগ করছে আর একজন যন্ত্রণা, এটা ভারতীয় ঐতিহ্যের পরিপন্থী। সুপ্রীম কোর্টের রায় বিশেষভাবে কেবল সমকামিতার বিরুদ্ধেই দেওয়া হয় নি, বরং সমস্ত আনন্যাচারাল সেক্স এর বিরুদ্ধে দেওয়া হয়েছে। পশুর সঙ্গে মানুষের সেক্সও এই ক্যাটিগরিতে পড়ে।

সব শেষে বলি, যা' প্রকৃতি-বিরুদ্ধ, তা' কখনো গ্রহনীয় হতে পারে না, নানা কারণে প্রকৃতি-বিরুদ্ধতায় মানুষের সভ্যতা বহুবার ধ্বংস হয়ে গেছে অতীতে।



২) শ্রীশুভ্র

একথা বলাই বাহুল্য সমকামিতা ভারতীয় সংস্কৃতির সাথে খাপ খায় না! বরং হতবাক হতে হয় এই বিষয়ে বিতর্ক উঠতে দেখেই! যারা বলবেন বহুবিচিত্র ভারতীয় সংস্কৃতিতে সবই খাপ খেয়ে যায়, তাদের সবিনয়ে বলি, তবে তো বর্তমান ভারতীয় আর্থসামাজিক রাজনৈতিক পরিসরের ব্যপক দুর্নীতিকেও ভারতীয় সংস্কৃতি বলে গর্ববোধ করতে হয়!

না, কোনো ভারতীয়ই যেমন দুর্নীতি চলছে বলেই তাকে দেশীয় সংস্কৃতি বলে মেনে নেবেন না, তেমনি সামান্য কজন ব্যতিক্রমী প্রচলিত সুস্থ মানসিকতার বিপ্রতীপে অবস্থানরত মানুষের প্রবৃত্তিকে ভারতীয় সংস্কৃতি বলে মেনে নিতে আপামর ভারতীয়র মতো আমরাও অপারগ! দুঃখিত !

এবার আসা যাক আমাদের ঘরগেরোস্থালীর পরিসরে !
কটি পরিবারে সমকামী সম্পর্কের চর্চা হয়? ভাবা যায়, আমাদের ছেলেমেয়েরা ঘরেঘরে সমকামের চর্চা শুরু করে দিয়ে আজীবন সুস্থ সুন্দর জীবনযাপন করছে? কজন চাইবে , তার মেয়েটি আর একটি মেয়ের সাথে ঘরসংসার করছে দেখতে? কজন, ছেলের বউয়ের বদলে ছেলের বরকে বরণ করবেন বড়ো মুখ করে? এবং সবচেয়ে বড়ো কথা আমাদের ভারতবর্ষীয় মানসিকতায় আমরা কজন চেতন অবচেতনের অতলে সমলিঙ্গের সঙ্গসুখ কামনা করি ? যারা তথাকথিত সমকামী বলে ঢাক পেটাতে পছন্দ করেন, খোঁজ নিলে দেখা যাবে হয়ত অনেকেই আজীবন সমলিঙ্গ সঙ্গসুখ ও সংসার যাপনের দায়িত্ব কর্তব্য সম্বন্ধেও ওয়াকিবহাল নন ততটা! ক’দিনের মোহ ক’দিন টিকবে কে বলতে পারে ?

যারা সনাতন ভারতীয় বৈদিকসংস্কৃতির দৃষ্টান্তের কথা বলে সমকামিতার পক্ষে কোলাহল করেন তাঁরা ভুলে যান যে, সে রামও নেই, সে অযোধ্যাও নেই! একদিন তপোবনে গুরুগৃহে অধ্যয়ন থেকে বাণপ্রস্থ গমন সবই ভারতীয় সংস্কৃতির অন্তর্ভুক্ত ছিল বলেই আজকের যুগে তার অপ্রাসঙ্গিকতা নিয়ে যদি বিতর্ক না ওঠে, তবে সেই পুরানো কাসুন্দী ঘেঁটে আর লাভ নেই! বুঝতে হবে পরিবর্তিত সহস্রাব্দের ভারতীয় সংস্কৃতিতে সমকামিতা অচল এবং অগৌরবের! যে প্রবণতা সমাজ সংসারে শতাংশের হারে অতি নগন্য তাকে আর যাই হোক দেশীয় সংস্কৃতির স্বরূপ বলে চালানোর প্রয়াস অযৌক্তিক এবং অবৈজ্ঞানিক! তাই সুস্থ বিবেচনার পরিধিতে একথা স্বীকার্য, যে ভারতীয় সংস্কৃতির অঙ্গনে সমকামিতা অচল!

৩) অরুণ চট্টোপাধ্যায়

কাম শব্দের আভিধানিক বহুল প্রচলিত অর্থ হল একটি প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষের সঙ্গে অপর একটি প্রাপ্তবয়স্ক মহিলার প্রকৃতি-সম্মত যৌনাচারের অভিলাষ । বলা বাহুল্য প্রকৃতি তার সৃষ্ট জীব বা উদ্ভিদের জীবনধারাকে প্রবাহিত রাখতেই উন্মুখ। আমরা সকলেই জানি বিপরীতধর্মী যৌনমিলন ছাড়া জনন বা Reproduction সম্পন্ন হয় না আর তৈরি হয় না ভবিষ্যৎ প্রজন্ম । অর্থাৎ ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্যই প্রকৃতি নরনারীর মধ্যে কাম নামক ইচ্ছাটির সৃষ্টি করেছেন বলে ধরে নেয়া যেতে পারে ।

ভারতীয় সংস্কৃতির আবহমণ্ডলে সমকামিতা স্থান পায় না । কারণ এই সংস্কৃতি মনে করে প্রাপ্তবয়স্ক নরনারীর কামচর্চা সঠিক পথে পরিচালিত হয়ে উভয়ের দেহ ও মনকে পরিতৃপ্তি দিক। কিন্তু সমকামিতা কিছুকালের জন্য কিছু ব্যক্তিকে পরিতৃপ্ত করলেও দীর্ঘকালের জন্য একটি সমাজকে তা পরিতৃপ্ত করতে পারে না । মানুষ সমাজবদ্ধ প্রাণী হবার সুবাদে সমাজের প্রতি তার কিছু দায়িত্বকে অস্বীকার করা যায় না । কিন্তু সেই দায়িত্ব পালনে ঘাটতি থেকে যেতে পারে যদি সমকামিতা নামক আত্মকেন্দ্রিকতাকে প্রশ্রয় দেওয়া হয় ।

“প্রকৃতি-বিরুদ্ধ্ব” এই কথাটা অনেকের কাছে হয়ত অপ্রয়োজনীয় মনে হতে পারে। অনেকে মনে করেন মানুষ বিজ্ঞান জানে তাই প্রকৃতি তার কিছুই করতে পারবে না । তাই তারা প্রকৃতির বিরুদ্ধে অনেক কিছু করবার চেষ্টা করে বা করে । তারা নদীর গতিপথে বাঁধ দিয়ে তার স্বাভাবিক পথ রুদ্ধ করে । পাহাড়ে কংক্রিটের জঙ্গল বানিয়ে পাহাড়কে অনাবশ্যক ভারাক্রান্ত করে । বিস্তৃত সাগর চায় তার একটি খোলামেলা বালুতট । সেখানে নির্মিত হয় সুসজ্জিত বহুতল । প্রকৃতি কিছুকাল সহ্য করে কিন্তু চিরকাল নয় । আর প্রকৃতির প্রতিশোধ কত নির্মম হয় সেটাও কি খুব কম বার আমরা দেখেছি ?

প্রকৃতি চায় নরনারীর যৌনাচার – সুন্দর ও অনাবিল একটি ভবিষ্যৎ প্রজন্মের স্বার্থে । প্রকৃতির কথা থাক মানুষ কি চায় না ? কিন্তু সমকাম বা homosexuality কি সেই অভিলাষ পূরণ করতে পারবে ? সমকাম শুধু কিছু নারীপুরুষের অস্বাভাবিক পথে যৌন তৃপ্তির সহায়ক হতে পারে এর বেশী কিছু নয় । তাছাড়া যৌন সংক্রমণ ঘটিত রোগগুলি যা সারা পৃথিবীকে গ্রাস করছে ক্রমশ তার কি আরও প্রসার কি হবে না এর ফলে ?

৪) নারায়ণ রায়
“সমকামিতা ভারতীয় সংস্কৃতির সঙ্গে খাপ খায় না”--, আমি এই যুক্তিকে সমর্থন করি। অনেকেই বলছেন একে অপরাধ বলার অর্থ মানুষের মৌলিক অধিকারে হস্তক্ষেপ করা।

তাদের কাছে আমার প্রশ্ন, মানুষের যৌন কামনার প্রকার ভেদের কি কোনও শেষ আছে ? অর্থাৎ ঠিক কোন যায়গায় আপনি লক্ষণ রেখাটি টানবেন? যার পর, আর এক পা এগোলেই সেটা অপরাধ কিম্বা বিকৃত রুচি বলে বিবেচিত হবে?

আজ যদি সমকামিতাকে মানুষের মৌলিক অধিকার বলে মেনে নেয়া হয়, তাহলে তো আগামীকাল দুজন প্রাপ্তরয়স্ক polygamist, incest বা এইরকম আরও অনেকে আছেন যারা তাদের সপক্ষেও নানান যুক্তি দেখিয়ে বলবেন যে তারাও অপরাধী নন । আর এদের সবাইকে ছাড় দিলে আমাদের সমাজটা কোথায় পৌছবে ভাবতেও আতঙ্ক হয়।

কথাটা হচ্ছে ‘ভারতীয় সংস্কৃতি’র সঙ্গে খাপ খায় কি না? অনেকে এ ব্যাপারে আমাদের প্রাচীন শাস্ত্রের উদাহরণ টানেন, তাঁদের সবিনয়ে বলি, এই শাস্ত্রগুলি ‘তৎকালীন’ সমাজ ব্যবস্থার অভিজ্ঞতায় আমার আপনার মত সাধারন মানুষেরই লেখা । সেযুগের সমাজে সামগ্রিক অনুশাসন ছিল খুবই দুর্বল। আসলে তৎকালীন সমাজের উচ্চস্তরের ব্যক্তি যথা রাজা, ব্রাহ্মণরাই ছিলেন আইনের প্রণেতা, নিজেদের ইচ্ছে মতন যৌন কামনা চরিতার্থ করার কথা ভেবেই তারা আইন প্রণয়ন করতেন, সেজন্য সমাজে অনেক স্বেচ্ছাচারিতাও ছিল। আচ্ছা, আজকের দিনে কি শুধু কূল রক্ষার তাগিদে আপনার অষ্টম বর্ষীয়া কন্যাকে একজন সত্তর বর্ষীয় বৃদ্ধের ত্রয়োদশ পত্নী হিসেবে বিবাহ দেবেন ?

তাই শাস্ত্রের কথা যত কম বলা যায় ততই ভালো। এবার একটি আসল কথায় আসা যাক, সমকামিতায় সন্তান জন্মানো সম্ভব নয়, সমর্থকেরা বলবেন, “কোই বাত নেহি, সন্তান দত্তক লেগা,”। একবার ভাবুন তো-- একটি শিশু জ্ঞান হয়ে দেখছে তার কোন মা নেই, আছে দু-দুটো মূলোর মতো গোঁফ আর খোঁচা খোঁচা দাড়িওয়ালা টেকো-মাথার বাবা, অথবা শাড়ি কিম্বা শালোয়ার-কামিজ পরা দু দুটো পটেশ্বরী মা যারা কেউই তার জন্মদাত্রী নন।

সেক্ষেত্রে সে কি আর পাঁচটি সাধারণ শিশুর মত স্বাভাবিক ভাবে মানুষ হবে ? অথচ পাশের বাড়িতেই তার বন্ধুর একটা টেকো বাবা আর একটা পটেশ্বরী মা দুই-ই আছে, শুধু তাই নয় একদিন সে দেখলো তার বন্ধুটি মায়ের কোলে বসে মায়ের বুকের দুগ্ধ পান করছে, তবে সে কেন বঞ্চিত ?

সব শেষে একটা কথা বলি, পৃথিবীতে যে কোন মতবাদেরই সমথর্করা মনে করেন যে, তাঁর মতবাদটাই শ্রেষ্ঠ এবং সবাই সেই মতবাদ অনুসরন করুক। যেমন একজন রাজা চান সারা পৃথিবীতে আবার রাজতন্ত্র ফিরে আসুক, একজন সাম্রাজ্যবাদী চান সারা পৃথিবী তার অধীনস্ত থাকুক, একজন কম্যুনিস্ট চান সারা পৃথিবী কম্যুনিজমের দীক্ষায় দীক্ষিত হোক।

সমকামের সমথর্করও নিশ্চই চাইবেন যে সবাই তাদের প্রতি সহানুভুতিশীল হোক এবং দিনে দিনে তাদের গোষ্টির সংখ্যা বৃদ্ধি পাক। এবার আগামী সেই দিনগুলির কথা কল্পনা করুন যখন পৃথিবীর আটশো কোটি জনসংখ্যার অধিকাংশই সমকামী… পুরুষ নারীকে নিয়ে, কিম্বা নারী পুরুষকে নিয়ে আর কোন কবিতা রচনা করবে না….চলচ্চিত্রে ধুমশো চেহারার দুজন পুরুষ পরস্পরকে জড়িয়ে ধরে নাচছে আর গাইছে…. “কানে কানে শুধু একবার বলো ওগো তুমি যে আমার…” একবার ভাবুনতো দৃশ্য -টা ?

৫) বেলাল হোসেন

সমকামিতা স্বাভাবিক মনের বিকাশ নয় -

সমকামিতা নিয়ে এত হৈ চৈ ! সমকামিতা স্বাভাবিক মনের বিকাশ নয়। মেডিক্যাল সায়েন্সে এই বিষয়টি ফোরেন্সিক মেডিসিনের অন্তর্গত। একটি ফ্রেশ কিশোর কিংবা কিশোরী সমকামিতার প্রথম সন্ধান কার কাছে পায়? তার এক বিকৃতকাম সিনিয়রের পাল্লায় পড়ে তার প্রথম অভিজ্ঞতা হয়। এর পর সে যদি সুস্থ সঙ্গ না পেয়ে থাকে, সেও কালক্রমে ঐ পথের পথিক হয়ে পড়ে।

আমি জীবনে এরকম অভিজ্ঞতার মধ্যে দুবার পড়েছি। প্রথম অভিজ্ঞতা আই আই টি হোস্টেলে, র‍্যাগিং পিরিয়ডের সময়। দ্বিতীয় অভিজ্ঞতা, যখন মেডিক্যালে ফার্স্ট ইয়ারে যখন পড়ি । তখন একবার আমার হাত ভেঙে যায়, যে অর্থোপেডিক সার্জেন আমাকে দেখেছিলেন, তিনি কলকাতার একজন স্বনামধন্য ডাক্তার হওয়া সত্ত্বেও আমার সঙ্গে সমকামীদের মত ব্যবহার করেছিলেন; শুধু তাই নয়, জীবনে উন্নতির জন্য গোপনে নিয়মিত সম্পর্ক রাখতে বলেছিলেন। আমার ভাগ্য ভাল, আমি খুব বন্ধুবান্ধব নিয়ে চলতে ভালবাসি, জীবনের কোন অধ্যায়েই কোন গোপনীয়তা প্রায় কিছুই রাখিনি। তাই বেঁচে গিয়েছি। স্বাভাবিক জিনিসের আনন্দ স্বাভাবিক ভাবে নেওয়ার শিক্ষাটা মনের মধ্যে থেকে গিয়েছিল বলে ঐ গোপন জগৎটাকে ঘৃণা করতে পেরেছি।

কলেজ লাইফে শুনেছি, কলকাতার অনেক পার্কে নাকি অনেক অল্পবয়সি ছেলে এভাবে কিছু বিকৃতকাম মধ্যবয়সি পুরুষদের আনন্দ দিয়ে অর্থ উপার্জন করেছে। সেটা যে নিশ্চিন্তভাবে এবং নিশ্চয়ই নোংরা কাজ, তা বলার অপেক্ষা রাখেনা।

ফোরেন্সিক মেডিসিনে সমকামিতা, পশুর সংগে কামে লিপ্ত হওয়া ও সঙ্গীকে ব্যাপক নিপীড়নের মাধ্যমে নিজের কামাবেগ অর্জন করাকে একই অধ্যায়ের অন্তর্ভুক্ত করে পড়ানো হয়, যার সোজাসুজি অর্থ হল, এগুলি অসুস্থ মনের বিকাশ যার চিকিৎসা প্রয়োজন।

আজ যাঁরা এই বিষয়টিকে আধুনিক প্রজন্মের দাবী বলে খুব সায় দিচ্ছেন, তাঁদের বাড়ীর ছেলেমেয়েদের এই রোগ ধরলে খুশি হব। এই নেতাগুলো বরং নিজের ছেলের বিয়ে আরেকজন ছেলের সঙ্গে কিংবা নিজের মেয়ের জীবনসঙ্গী হিসেবে আরেকজন মেয়েকে নির্বাচিত করে একটু পথ দেখাক না! তাদের তো অনেক ধনসম্পত্তি...সেই ব্যাপারটাও আইনানুযায়ী কী করে সামলায় একটু দেখাক ! এই নেতাদের কাজকারবার দেখে সেই পুরোনো গ্রাম্য প্রবাদটা মনে পড়ে যাচ্ছে ...পরের ছেলে পরমানন্দ, যত ভোগে যায়, তত আনন্দ।

অন্ধ পাশ্চাত্য অনুকরণের ফল যা হয় আর কি! তাদের ভাল জিনিসগুলো নেবোনা, বিকৃত জিনিসটা চাই!

সুপ্রীম কোর্ট ঠিক কাজটাই করেছে। বাঁচিয়েছে। ভয় হয়, আবার কোন নতুন বাবু এসে আইনটাকেই না আবার পাল্টে দেয়!!!



বিপক্ষেঃ



১) ঋত্বিক দাশ শর্মা


আমি দুটি মানুষের, একই লিঙ্গ বা বিপরীত লিঙ্গের ব্যক্তিস্বাধীনতার পক্ষে। আমি মানুষের নিজের পছন্দ অনুযায়ী ভালবাসার মানুষকে খুঁজে নেওয়ার পক্ষে। আমি দুটি মানুষ উভয়েই দুজনকে ভালবেসে, সুখে একসাথে ভাল থাকার পক্ষে। আমি মানুষের নিজস্ব রিপুর অবধারিত প্রকাশের পক্ষে । আমি প্রাকৃতিক নিয়মে, ভালবাসার হাত ধরে আসা শেষ পর্যায় পর্যন্ত শারীরিক সুখ ও তৃপ্তি অনুভুতির পক্ষে। আমি মানুষের কামজ স্বাধীনতার পক্ষে।

আমি শুধু সন্তান উৎপাদনের জন্যই শারীরিক মিলনের বিপক্ষে। আমি দুটি মানুষের অনৈতিক ব্যভিচারের বিপক্ষে। আমি কামজ কুঅভ্যাসের বিপক্ষে। আমি মানুষের মানসিক অবসাদে বা আদিম রিপুর তাড়নায় কামনার বিকৃত রুচি প্রকাশের বিপক্ষে। আমি একটি মানুষের ভালবাসা ও ভাললাগার দোহাই দিয়ে অন্য প্রাণীর সহিত সহবাসের বিপক্ষে। আমি ভারতের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের নামে ভণ্ডামির বিপক্ষে।


২) বৃষ্টি ব্যানার্জী


মাননীয় বিচারক মণ্ডলী ও মোশনের পক্ষের বন্ধুরাঃ

সমকামী, সমকামিতা শব্দগুলি এতই নতুন যে বাংলা অভিধানে এখনও এদের স্থান হয়নি। কিন্তু এই নামের দ্বারা প্রকাশিত মানুষের যে সহজাত চিত্তবৃত্তি, সেটি আদৌ নতুন নয়। ভারতবর্ষের ইতিহাসের দিকে ফিরে তাকালে দেখতে পাবেন, এদেশে সমকামিতার ইতিহাস বহু পুরানো, Indian culture-এ alredy তাঁরা accepted.

আর তাছাড়া, সমকামিদের সংখ্যা সমাজে অল্প বলেই তাদের অস্তিত্বকে সংকটাপন্ন করতে হবে, এটা কোনো সভ্য সমাজের সিদ্ধান্ত হতে পারে না। আমাদের সমাজে তো transgender-রাও আছেন, তাঁরাও সংখ্যায় লঘু, তাঁরা সমাজের কোন্‌ কাজে লাগেন? তাঁদের তো আমরা মেনে নিয়েছি!! শারীরিক বিশিষ্টতার কারণে যাঁরা লঘু সম্প্রদায় তাঁদের যদি মেনে নিতে পারি, তবে মানসিক বৈশিষ্টগত কারণে যাঁরা সংখ্যালঘু তাঁদের মানতে পারব না কেন?

সবচেয়ে বড় কথা, ‘কাম’ শব্দটির আভিধানিক অর্থ যেমন যৌন সম্ভোগেচ্ছা, তেমনি, কামনা, অভিলাষ, অনুরাগও বটে। সুতরাং, একটি মানুষের প্রতি অপর একটি মানুষের গভীর অনুরাগও তো থাকতে পারে!! সেটি যদি সমজাতি বা সমলিঙ্গের প্রতি হয়, তাতে বাঁধা কোথায়?

যাঁরা reproduction-কেই যৌনমিলনের একমাত্র উদ্দেশ্য বলে মনে করেন, বন্ধুরা, বলতে বাধ্য হচ্ছি, কেবলমাত্র মনুষ্যতর প্রাণীরাই শুধু reproduction-এর জন্য মিলিত হয়। মানুষের কাছে it is a superlative stage of love making.

সবার আগে ব্যক্তি আমি, আমিই রাষ্ট্রের কারণ এবং উদ্দেশ্য। তাই আমার মৌলিক আধিকার আগে সংরক্ষিত হওয়া প্রয়োজন। নিজের যৌনসঙ্গী নির্বাচন করাও আমার মৌলিক অধিকার গুলির মধ্যে একটি অন্যতম প্রধান শর্ত। সেখানে সমাজকে reproduction-জাত ফসল দিতে পারব না বলে, আমাকে আমার মৌলিক অধিকার বর্জন করে স্ব-ইচ্ছার গলা টিপে হত্যা করতে হবে, এটা ভারতবর্ষের মতো মহান, উদার, সহনশীল, গণতান্ত্রিক সংস্কৃতির সিদ্ধান্ত হতে পারে না।

যাঁরা সমকামিতার ক্ষেত্রে এক পক্ষের আনন্দ এবং অন্য পক্ষের শারীরিক নির্যাতন-এই মতের সমর্থক, তাঁদের কাছে জানতে চাই, তাঁরা কি কখনও কোন সমকামীর কাছে জানতে চেয়েছেন, তাঁরা উপভোগ করেন, না কষ্ট পান? নিজস্ব অভিজ্ঞতা বা যথেষ্ট প্রমাণ না থাকলে সিদ্ধান্ত টানা উচিত নয়।

Transgender এবং সমকামী- উভয় ক্ষেত্রেই শারীরিক বা মানসিক বিকৃতির আখ্যা দেওয়া যাবে না। বরঞ্চ শারীরিক ও মানসিক অস্বভাবিকতা বা অসুস্থতা তবু বলা যেতে পারে। কারুর অসুখ করলে সে কি দেশীয় সংস্কৃতির বহির্ভূত হয়ে যায় নাকি???

হাজার হাজার বছর পুরানো ভারতীয় সংস্কৃতিতে সমকামিতা, সহবাস, বিবাহ বিচ্ছেদ, বহুবিবাহ, সতীদাহ, ইত্যাদি সামাজিক প্রথাগুলি আগাগোড়াই ছিল, ইতিহাস ও সাহিত্য তার সাক্ষ্য বহন করে। প্রথাগুলির সামাজিক নামকরণ অপেক্ষাকৃতভাবে অনেকটাই নবীনকালের সংযোজন। বহুবিবাহ বা সতীদাহের মতো প্রথাগুলিকে আমরা সচেতন ভাবে বর্জন করেছি, তার কারণ, প্রথাগুলি সরাসরিভাবে সমাজের ক্ষতি করছিল। কিন্তু, সমকামিতা দুজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের যৌনসঙ্গী নির্বাচনের পৃষ্ঠপোষণ ছাড়া সমাজের আর কোন প্রত্যক্ষ্য উপকারে লাগে না বলেই তাকে ভারতীয় সংস্কৃতির পরিপন্থী আখ্যা দিতে হবে, এটা অযৌক্তিক। এমন অমানবিক সিদ্ধান্তই বরঞ্চ ভারতীয় সংস্কৃতির পরিপন্থী বলে আমি বিশ্বাস করি।।


৩) স্বপন দেব

যাঁরা এর সপক্ষে বলছেন এবং মাননীয় বিচারক মহোদয়,

আপনারা কোন ভারতীয় সংস্কৃতির কথা বলছেন ? প্রায় ৫০০ বছর মুসলিম ও ২০০ বছর ব্রিটিশ শাসনে থাকা, বহু-বিবাহ, সতীদাহ, বাল্য-বিবাহ, বৃদ্ধ স্বামীর প্রয়াণে কিশোরীর কঠোর বৈধব্য পালন, জন্মভিত্তিক জাত-পাত সমণ্বিত ভারতীয় সংস্কৃতির কথা ? ভারতীয় সংস্কৃতি বলতে আমি বুঝি, সভ্যতার শিখরে থাকা বৈদিক সংস্কৃতি। ভারতীয় সংস্কৃতি বলতে বুঝি, “দিবে আর নিবে, মিলাবে মিলিবে, যাবেনা ফিরে, এই ভারতের মহা-মিলনের সাগরতীরে।”সংস্কৃতি। এর বাইরে,যে সংস্কৃতি মানবিক মূল্যবোধ, মানবিক অধিকার, দুটি মানুষের ভালোবাসার বিরোধী, সেটাই অপসংস্কৃতি।

যৌনতা বিষয়ে ভারতীয় সংস্কৃতি বরাবরই খুব উদার। কোনারক বা খাজুরাহো তে যে মৈথুন মূর্তিগুলি আছে, তাতে সমকামে রত পুরুষ এবং সমকামে রত মহিলা মূর্তি আছে। বাৎস্যায়নের কাম-শাস্ত্রেও সমকামিতার উল্লেখ আছে। সমকামিতা কথা টা নতুন, প্রথাটা কিন্তু বহুদিন ধরেই চালু। বিধবা পুনর্বিবাহ, সমকামিতার থেকে অনেক বেশী আলোড়ন তুলেছিল তৎকালীন রক্ষণশীল সমাজে। ভারতীয় সংস্কৃতি কিন্তু সেটা মেনে নিয়েছে। লিভ-টুগেদার, ডিস্কো-থেক, বিবাহবিচ্ছেদ এ গুলি তো ভারতীয় সংস্কৃতির সাথে দিব্যি খাপ খেয়ে গেছে!

আসলে আপনারা ভারতীয় সংস্কৃতিটাকেই খুব সংকীর্ণ ও ছোট করে দেখছেন। ভারতীয় সংস্কৃতি এতোটাই উদার, এতোটাই সহনশীল যে, যীশুর জন্মদিনে কেক কাটা বা মুসলিম দের ঈদের মত, বিজয়ায় কোলাকুলি করাটা আমাদের সংস্কৃতিতেই ঢুকে গেছে! দুজন অভিন্ন হৃদয় বন্ধুকে দেখে আমরা বলি, “হরি-হর” আত্মা। তো, দুজন পুরুষ বা নারীর যদি আত্মার মিলনে বাধা না থাকে, তবে, যৌন মিলনে বাধা কোথায়...?

আর অধিকার এবং সংস্কৃতি দুটি কিন্তু ভিন্ন বিষয়। নিজের এবং দেশের স্বাধীনতা আমার অধিকার। আমার যৌন-সঙ্গী বেছে নেওয়াটাও আমার মানবাধিকার। আমি আগে মানুষ, পরে ভারতীয় । সংস্কৃতির সঙ্গে এর কোনও যোগ নেই।

আর একটি কথা, মার্ক্সীয় দর্শনে, অর্থনীতি হোল স্ট্রাকচার আর সংস্কৃতি হোল সুপার-স্ট্রাকচার । একটি অপরটির সাথে অঙ্গাঙ্গী ভাবে যুক্ত। আপনি অর্থনৈতিক সুবিধার জন্যে গ্লোবালাইজেসন এর দরজা হাট করে খুলে দিয়ে বিদেশী পুঁজি কে স্বাগত জানাবেন আর তার পেছন পেছন আসা বিদেশী সংস্কৃতিকে ঢুকতে দেবেন না , এটা হয় না।


৪) অনুরাধা দাসগুপ্তা

আমি বিচারকের ভূমিকায় না। প্রথমে 377 ধারাটিকে দেখা যাক, 377 states that “whoever voluntarily has carnal intercourse against the order of nature with any man, woman or animal shall be subject to a punishment up to life imprisonment”. এর সঙ্গে সমকামিতার যোগাযোগ দেখিনা, সম্পূর্ণ ভাবে ব্যাক্তিগত। শুধু পুরুষ মহিলার যৌন মিলন সামাজিক, বাকি অসামাজিক এটা মানতে নারাজ। প্রতিটি মানুষের ব্যাক্তিগত স্বাধিনতাকে সন্মান করা উচিত। এটা mental distortion বলা যেতে পারে, তার জন্য medical science improve করার দরকার।



হিজরা যেমন প্রাকৃতিক নিয়মের বহির্ভূত নয়, সমকামিতাও প্রাকৃতিক নিয়মের মধ্যে।

What really bugs me the most is that these religionists think they're such an authority on nature. Actually, they know nothing about nature and they are the ones who are completely clueless about nature. They are too brainwashed by their religions of male domination that they don't even try to analyse how and why gays are created.


৫) সুস্মিতা সিং

সভার সপক্ষের বন্ধুরা ও মাননীয় বিচারক মণ্ডলী-

সবার প্রথমে খুব ভাল করে বিতর্কের বিষয়টি কি, তা বুঝে নেওয়া প্রয়োজন। এক্ষেত্রে, প্রশ্নটি ‘আমি মানি কিনা’ নয়, ‘ভারতীয় সংস্কৃতি মানে কিনা’। আসুন দেখে নেওয়া যাক, ভারতীয় সংস্কৃতিতে তথা ইতিহাস ও সাহিত্যে সমকামিতার স্থান কোথায়।।

ভারতীয় সংস্কৃতি সমকামিতার পরিপন্থী – এ কথা মেনে নিতে গেলে ভারতীয় সংস্কৃতির মূল আধার বৈদিক পুরাণ সাহিত্য এবং সমকালীন ইতিহাসকে সম্পূর্ণ বিস্মৃত হতে হয়। অনেকানেক কাহিনীর মধ্যে বিতর্কের এই স্বল্প পরিসরে মাত্র কয়েকটি উদহরণ উপস্থাপিত করা গেল। পুরাণ মতে, দেবী পার্বতী ও গজাননা রাক্ষসী নামে দুই নারী গনেশের জন্ম দেন। কৃত্তিবাসী রামায়ণে সূর্যবংশীয় রাজা দিলীপের অপুত্রক দুই বিধবা স্ত্রী মহাদেবের আদেশে সমকামে লিপ্ত হয়ে জন্ম দেন পুত্র ভগীরথের। ঋগ্বেদের বহু কাহিনীতেও নারী সমকামিতার চিত্র পাওয়া যায়। আবার মহাভারতে শিখণ্ডিনী প্রথম জীবনে ছিলেন নারী, তা সত্ত্বেও এক নারীর সঙ্গেই তাঁর বিবাহ হয়। এই মহাভারতেই দেখি, স্বাহার পতি অগ্নির সঙ্গে সোমদেবতার সমকামী সম্পর্ক ছিল। বৈদিক সাহিত্য ও মহাভারতের দুই দেবতা মিত্র ও বরুণ-এর মধ্যে গভীর সমকামের সম্পর্কের উল্লেখ পাই। ভাগবত পুরাণ মতে, এই মিত্র ও বরুণ অযোনিজ কামে লিপ্ত হয়ে বাল্মিকী ও অগ্যস্ত নামে দুই পুত্রের জন্ম দেন। সুশ্রুত সংহিতাতেও পুরুষ সমকামীদের কথা পাওয়া যায়। বাৎস্যায়নের কামসূত্রেও সমকামিতার উল্লেখ রয়েছে, পরবর্তীকালে যার প্রত্যক্ষ প্রক্ষেপণ আমরা লক্ষ্য করি খাজুরাহ ও কোণারকের মন্দির গাত্রে।

দক্ষিণ ভারতে একেবারে আদিকাল থেকে ‘জোগাপ্পা’ নামে এক সম্প্রদায় আছে, যাঁদের পেশা গণিকাবৃত্তি। এঁদের এবং দক্ষিণ ভারতীয় দেবদাসীদের একটা বড় অংশ সমকামী। গত শতাব্দীর মাঝামাঝি সময়ের কিছুটা আগে কাশীর বিধবা মহিলাদের মধ্যে সমকামিতা ভারতীয় সমাজে যথেষ্ট আলোড়ন তুলেছিল, ইতিহাস যার নীরব সাক্ষী। সহনশীল ভারতীয় সংস্কৃতিতে মানুষের সহজাত প্রতিটি প্রবৃত্তিকেই সমান মর্যাদায় ইতিহাস ও সমকালীন সাহিত্যে প্রতিষ্ঠা দেওয়া হয়েছে অকুণ্ঠিত ভাবে।

সুমহান ভারতের ‘সংস্কৃত’ ইতিবৃত্ত আমার আপনার সহমতের অপেক্ষা না রেখেই সমকামিতাকে নির্দ্বিধায় স্বীকৃতি দিয়েছে একেবার আদি থেকে আধুনিক কাল পর্যন্ত। অতএব, বন্ধুরা, গর্বিত ভারতবাসী হিসাবে মানবিক ও মানসিক ঔদার্য্য খর্ব করার সংকীর্নতাকে প্রশ্রয় না দেওয়ার মধ্যেই সার্বিক আত্মিক উত্তরণ প্রতিষ্ঠিত হয় বলেই আমি মত পোষণ করি।।


0 মতামত:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন