বিশেষ রচনা - কোলাঘাটে কোলাহল


ছবিঃ

১)
সৌভিক বিশ্বাস


২)
কৌশিক বিশ্বাস

৩)
দেবাশিস সেন



কোলাঘাটের কোলে –


১)
নস্টালজিয়া আর রোমান্টিকতার অন্বেষণে

অরুণ চট্টোপাধ্যায়





জীবন একটা প্রবাহ। এক স্রোতস্বিনী তটিনী। বরফ-শৃঙ্গে তার সৃষ্টি। পাহাড়ের কাঠিন্য ভেদ করে তার শৈশবের পথচলা। শৈশবের টালমাটাল অবস্থা কাটিয়ে সবে সমতলে এসে দুই পায়ে ভর করার অবস্থায় এসে দাঁড়িয়েছে। এখন দীর্ঘ চলার পথ তার। রয়েছে দীর্ঘ কাজের তালিকা। দীর্ঘ জনপদ সজীব করার পর সাগরের বুকে হারিয়ে যাওয়াই তার নিশ্চিত ভবিষ্যৎ।

নদীর বুকে রয়েছে ঢেউ যা শুধু তার চঞ্চলতার প্রতীক মাত্র নয়। এই তরঙ্গবিভঙ্গ হল জীবনের সুখ-স্বাচ্ছন্দ্য। জীবন কখনও নিরবচ্ছিন্ন সুখ বা দুঃখের আধার নয়। সুখের জীবন দুঃখের সাগরে কখনও হারিয়ে যায়। আবার দুঃখও কখনও মুখে করে সুখের ঠিকানা এনে হাজির করে।

আসলে আমরা জীবনকে শুধু দুঃখের একটা প্রবাহ বলে ভাবি, আর সুখকে যদি ভাবি সেই তরঙ্গ- বিক্ষুব্ধ জীবন-নদীতে হঠাৎ ভেসে আসা একটা কাঠের টুকরো- তাহলে মনে হয় সুখকে আরও বেশী করে উপলব্ধি ও উপভোগ করা সম্ভব ।

কাঠের গুঁড়ির ওপর বসে আমরা কিছুদূর যেতে পারি। তাকাতে পারি আকাশের দিকে, স্পর্শ পেতে পারি সুশীতল বাতাসের, কর্ণগোচর হতে পারে পাখীর কুজন। কিন্তু তবু কাঠের গুঁড়ির টালমাটাল অবস্থা প্রতি পদে আমাদের জানান দিতে থাকে সুখকে পেলেও তাকে ধরে রাখা কতই না কঠিন কাজ।

ধান ভানতে শিবের গীত হয়ত পছন্দ হবে না কারও। কিন্তু শিবের গীত যখন ধান ভানার কষ্টকে খানিক লাঘব করে তখন সেই গীত হয়ত আমাদের খারাপ লাগে না। যেমন ধরুন আমাদের জীবনে মাঝে মাঝে আনন্দের এক একটা ছোঁয়া আসে আবার চলেও যায়। কিন্তু এই যাওয়া আসার সাক্ষ হিসেবে তারা রেখে যায় কিছু সুখানুভূতি। যেমন চিলেকোঠার এই “কোলাঘাট ভ্রমণ”।

অসুখ যদি সুখ হারানোর কাব্য হয় তো আমার মত অসুস্থ মানুষের পক্ষে কোলাঘাট ভ্রমণ নিতান্তই ব্যর্থ হতে বাধ্য। কিন্তু তা হয় নি। আমার অসুস্থতা আমার শরীরকে যত পীড়িত করেছে, সুখ থেকে বঞ্চিত রাখার চেষ্টা করেছে, আমার মন ততই সজীব হয়ে তার প্রতিবাদ করে সুখের প্রতিটি ইঞ্চি পরিমাপ করে নিয়েছে। সুখের গ্রহণ আর আত্তীকরণের মধ্যে ফাঁকটাকে ন্যুনতম রাখার চেষ্টা করেছে।

১লা ডিসেম্বর দিনটির সকাল নটা ছিল এক আনন্দ-আহরণের সেই মুহূর্তের বর্তমান মাত্র। সাউথ ইস্টার্নের পনের নম্বর প্লাটফরমের গাড়ীটিতে সকলে হুড়মুড়িয়ে ওঠার পর সেই বর্তমান পিছিয়ে গিয়ে যতই তাকে অতীতের দিকে ঠেলে দিতে লাগল ততই একরাশ হুল্লোড় আর আনন্দ আর একটা ছন্দময় বর্তমানকে উপহার দিতে উদগ্রীব হল।

প্যাকেটের লুচি তরকারি আর দরবেশ খেতে না খেতেই একটা চমক এসে হাজির হল দুই বাউলের সুরের মধ্যে দিয়ে। সারা কম্পার্টমেন্টে অর্ধ-শতাধিক আমরা ছাড়া হাতে গোনা যারা ছিল তারা মহা আনন্দে নেচে নেচে উপভোগ করতে লাগল এই লাগাতার বাউল-সঙ্গীত।

গাড়িটি গ্যালপিং হওয়ায় আমাদের বাগনান স্টেশনেই যাত্রাপথের সাময়িক বিরতি দিতে হল। কারণ কোলাঘাট তুলনামূলক ছোট স্টেশন হওয়ায় এই গাড়ি ধরবে না। কিছুক্ষণের সেই অপেক্ষা আমাদের পীড়িত বা বিরক্ত করতে পারল না কারণ বাঁধভাঙ্গা আনন্দের একটা ভবিষ্যৎ আমাদের হাতছানি দিয়ে ডাকছিল।

পেছনের গাড়ীটি এসে পড়তে আমরা উঠলাম আর অবাক হয়ে দেখলাম সেখানে আরও কিছু নতুন বন্ধু। যারা মাঝপথ থেকে উঠবেন তাদের সঙ্গত কারণেই আগেই গ্যালপিং গাড়ীটি নেয় নি।

কোলাঘাটের প্ল্যাটফরমে ব্যানারের পেছনে সকলের ছবি তোলা হল। এই ছবি শুধুমাত্র একটি আনন্দের উপকরণ নয় ভবিষ্যতের মূল্যবান একটি দলিল বলে অনেকেই মনে করে।

প্ল্যাটফরমে পা দেওয়া মাত্রই কোলাঘাটের সুন্দর প্রকৃতি যেন এগিয়ে এল হাসিমুখে। আমার সঙ্গে আরও অনেক ক্যামেরা-প্রেমী মানুষের ক্যামেরা সেই প্রকৃতির সঙ্গে হাসিমুখে কোলাকুলি করল।

লাইনের পাশ দিয়ে মেঠো পথে নেমে যেতে হবে একটা গড়ান বেয়ে। কিন্তু গড়ানের মুখেই চোখ গেল বেশ একটু দূরেই। যেখানে রয়েছে রূপনারায়ণের ওপরের সুদৃশ্য একটি সেতু যার ওপর দিয়ে ট্রেন চলে। মনে হল কোনও ছবি দেখছি । আবার মনে হল সেই গানটার কথা। “ তুমি কি কেবলই ছবি – শুধু পটে লিখা ?”

সেই পটে লিখা ছবিকে “শুধু পটে লিখা” থাকতে দিল না আমার ছটফটে ক্যামেরাটা। তার ফ্ল্যাশের ঝলকানি দিয়ে দৃশ্যটাকে দিল একটি চুম্বন আর দিল আমার হৃদয়-কারাগারে যাবজ্জীবন কারাবাসের পুরস্কার। সেতুর ওপর দিয়ে একটা ট্রেন আসতে দেখে সবাই ব্যস্ত আর ব্যগ্র হয়ে পড়ল।

এরপর আবার সেই মেঠো পথ বেয়ে যাত্রা। একটু পরেই সেই মেঠো পথ বন্ধুত্ব করল এক পাকা পিচের রাস্তার সঙ্গে। আমরা সেই পথ ধরে চলতে শুরু করেছি। ইতিমধ্যে আমার ফুসফুস নামক যন্ত্রটি প্রচণ্ড বিদ্রোহ করতে শুরু করে আমার গতিপথে বাধা সৃষ্টি করার বাসনায় তার কাজ শুরু করে দিয়েছে। মেকানিকস বলে গতিবেগ যত কমে পথের দূরত্ব তত বাড়ে।

যাই হোক এরপর রূপনারায়ণ এসে পড়ল আমাদের ঠিক পাশে। রূপনারায়ণ কিন্তু নদ, নদী নয়। আকারগত পার্থক্য (বিশালতায়্) তাকে নদ অভিধায় অবিহিত করেছে।

রূপনারায়ণের কথা বহু শুনেছি ছেলেবেলা থেকে। নদনদীকে আমি ভয় পেলেও ভালবাসি এটা ঠিক। আমার স্বপ্নের রূপনারায়ণ– আমার স্বপ্নের রূপনারায়ণ আজ আমার পাশে পাশে চলছে। হাত বাড়িয়ে দিয়েছে উষ্ণ বন্ধুত্বের। এই সুখের স্মৃতি আমি সারাজীবন সঙ্গে নিয়ে বেড়াব এই চিন্তা যেন আমায় পাগল করে দিল।

নদীর ঘাটে আরও অনেকে নেমে পড়েছে। কেউ ছবি তোলবার আবার কেউ বা ছবি তোলাবার জন্যে। সকলেই আনন্দে মাতোয়ারা হয়ে নৌকোর কাছি ধরে নৌকোয় ওঠার ছবি তোলার জন্য আকুল। এ প্রসঙ্গে দেবাশিসদার (দেবাশিস কাঞ্জিলাল) উৎসাহের বর্ণনা না দিলে হয়ত বর্ণনায় কিছু ফাকি থেকে যাবে।

তিনি তো সটান নৌকোয় উঠে পড়লেন। তাঁর প্রারম্ভিক টালমাটাল অবস্থাটা আমার মনকে ক্ষণিকের জন্যে চিন্তিতও করে তুলেছিল কারণ রূপনারায়ণের রূপ আর গভীরতা দুইই আছে।

এরপর আমরা চললাম সেই রাস্তা ধরে। আমার ব্রঙ্কিয়াল কনজেশসন আমাকে সকলের থেকে পেছনে ফেলে দিলেও নৈকট্যের খাতিরে আমি পৌঁছে গেলাম একটু পরেই। নদীর ঠিক তীরে একটি সুন্দর লজ। সেখানে তখন চলছে ব্যানার টাঙ্গানোর পালা।

জায়গাটা আমাকে যেন দীঘা বলে মনে করিয়ে দিতে লাগল বারবার। রূপনারায়ণের বিশালতায় একটু ঢেউয়ের উচ্ছ্বাস আর পাড়টি আর একটু চওড়া হলেই যেন একে আর এক দীঘা বলে মনে হত।

অপূর্ব সুন্দর এই লজটি আমাদের জন্যে ব্যবস্থা করার জন্য চিলেকোঠা নিশ্চয় বন্ধু বেলাল হোসেনের প্রতি কৃতজ্ঞ থাকবে। এই ব্যবস্থায় আমরা সকলেই বেশ খুশী আর সুখী।

হলের ভেতরে তখন অধিকাংশ বন্ধু আসন গ্রহণ করেছেন। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি পর্ব চলছে। মাইক্রোফোন হাতে স্নেহের শ্রীরূপাকে হাসিমুখে দেখা গেল। এরপর অনেকেই অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করলেন।

আবার এলেন বাউল দম্পতি। একের পর এক বাউল গান একতারার সুরের সঙ্গে নাচতে লাগল। আর সেই তরঙ্গ আমাদের চোখ আর কানের ওপর বোলাতে লাগল মধুর এক পরশ।

বাউলভাইরা (অধীরদাস বাউল ও কৃষ্ণা দাসী) প্রায় বেশীর ভাগ জুড়ে থাকলেও তাপস বন্দ্যোপাধ্যায় ও বৈজয়ন্ত রাহার কবিতা আবৃত্তি, ইন্দ্রাণী মুখারজী আর পিলু ভট্টাচার্যের গান একটা উল্লেখযোগ্য উপহার ছিল।

দুপুরে খাওয়ার পর প্রচণ্ড অসুস্থতা নিয়েও ক্যামেরা হাতে আমি বেরোলাম। আমার লাগামছাড়া (আর হয়ত সৃষ্টিছাড়া ) মন আমাকে স্থির থাকতে দেয় না এতটুকু। সৃষ্টির কিম্বা সৃষ্টিকে ধরে রাখার চিন্তায় সে সদাব্যস্ত । আমার মন যখন তখন লিখে চলে অনেক কিছু । কিন্তু স্মৃতিশক্তি তার অক্ষমতার রবার ঘষে তুলে দেয় সব কিছু। তাই আমার ক্যামেরা আমাকে এ কাজে সহায়তা করে । সেই দ্বিপ্রহরে রূপনারায়ণের রূপ কি ভোলার? আমি ভুললেও ক্যামেরা ভুলতে দেয় নি।

এখানের একটি আকর্ষণ ছিল যাত্রাশিল্পী কুমার কৌশিকের মন-মাতান গান। ধরতে গেলে তিনি এই বিনোদন পরিবেশনার অন্যতম একটি গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ। অনুরাধা (অনুরাধা দাসগুপ্ত) দীর্ঘ সময় তার বিগত অভিজ্ঞতার কথা অত্যন্ত আকর্ষণীয়ভাবে বলেছিল,যা অবশ্য আমি আগেও শুনেছি।

সারা সময় জুড়ে আহুতির প্রাণোচ্ছ্বলতা ছিল লক্ষ করার মত। তার ব্যক্তিসত্বাকে সকলের আনন্দ মহাযজ্ঞে যেন সত্যিই সে আহুতি দিয়েছিল। আহুতি, তনিমা, মিমি এরা সকলেই নৃত্য আর সমবেত সঙ্গীতে ভরিয়ে রেখেছিল একটা দীর্ঘ সময়।

স্বরচিত কবিতা পাঠ করেছে আমার অত্যন্ত স্নেহভাজন তনুশ্রী চক্রবর্তী। আবৃত্তি করেছেন দেবাশিস কাঞ্জিলাল। এ ছাড়া প্রায় সকলেই এই মহামিলন যজ্ঞে নিজেদের সামিল করার প্রাণপণ চেষ্টা করেছেন।

বাউল এই ভ্রমণের একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ এটা আগেই জেনেছিলাম। আমার বাউলদের জীবনী নিয়ে একটি কবিতা “মনের কথক” ছাপা হয়েছিল কবিতা ক্লাবের এক বইতে। এটিকে প্রাসঙ্গিক ভেবে আমি ভেবেছিলাম এটি পাঠ করব। কিন্তু যখন আমার ডাক এক তখন গুরুতরভাবেই অসুস্থ আমি। যাহোক অতি কষ্টে তা আমি পড়লাম। এই উপস্থাপনা এই দিনের সবচেয়ে খারাপ এক উপস্থাপনা এ আমি গ্যারান্টি দিয়ে বলতে পারি।

অনুষ্ঠান সম্পর্কে আর একটা কথা না বললে হয়ত বলাটাই অসম্পূর্ণ থেকে যাবে। তিনি হলেন আমাদের শেখরদা অর্থাৎ শেখর রায়ের কথা। সারাক্ষণ সব সময় এই অনুষ্ঠানকে মাতিয়ে রেখেছেন কখনও নেচে, কখনও গেয়ে কখনও কিছু বলে। আবার কখনও কিছু না বলেই। তার ব্যক্তিত্বের উপস্থিতিই উপস্থিত করেছে অনেক কিছু।

সকলের কথা হয়ত বলা হল না। হয়ত উচারণ করা গেল না সকলের নামও। কারণ তাহলে এই প্রবন্ধ আর প্রবন্ধ থাকত না হয়ে উঠত একটি নামাবলী বিশেষ।

অনুষ্ঠান শেষ হতে হতে অন্ধকার এসে বাসা বাঁধল রূপ নারায়ণকে ঘিরে। রূপনারায়ণ তার রূপ পাল্টাচ্ছে ক্ষণে ক্ষণে। কিন্তু আপসোস এই রূপ বদলের সাক্ষী আমার ক্যামেরা হতে পারল না। কারণ বহু পূর্বেই সে তার বৈদ্যুতিক প্রাণশক্তি হারিয়ে ফেলেছিল।

আমরা এবার ফিরে চলেছি কোলাঘাট স্টেশনের দিকে। ফেরার পথে কি কি নিয়ে গেলাম এখান থেকে আর কি কি দিয়ে গেলাম এখানে তার হিসেব কষছি। নিয়ে গেলাম যত জিনিস তার হিসেব করা দুরূহ। কিন্তু রেখে গেলাম মাত্র একটা জিনিস যা হল আমার মনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশকে।

কোলাঘাট আজ অতীত। অতীত স্মৃতি হয় কিন্তু সব অতীত ইতিহাস হয় না। ইতিহাস হয় সেই অতীতগুলিই যে গুলির গায়ে স্বীকৃতির একটা তকমা পড়ে। কবরে শায়িত মানুষ অতীত বটে কিন্তু তারা ইতিহাস নয়। কিন্তু ইতিহাস হল ফারাওরা যারা পিরামিডের স্বীকৃতির নীচে আজও উজ্জ্বল।


চিলেকোঠার কোলাঘাট ভ্রমণ তাই আজ একটি গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস।



২)
আনন্দ ঝর্ণা


‘ চিলেকোঠা ’ শব্দটা শুনলেই যেন মনে হয় স্বতন্ত্র কোন স্থান। কিন্তু এই পরিবারের সদস্য / সদস্যারা একেবারেই চিলেকোঠায় বসবাসকারী কোন প্রাণীর মত নন ; তাঁরা আক্ষরিক অর্থেই স্বতন্ত্র। ফেসবুকের স্বল্প পরিচিতির মাধ্যমে আমি বুঝতে পারলাম এখনও কিছু মানুষের মধ্যে মানবিক গুণ যথেষ্ট পরিমাণেই বিদ্যমান। এতটা যত্ন , আন্তরিকতা , স্নেহ , বন্ধুপ্রীতি বোধহয় আজ খুব প্রয়োজন।

তবে আজ আমি এই আনন্দের অংশীদার হতে পারতাম না যদি দাদাই (শ্রী অলোক চৌধুরী মহাশয়) আমায় চিলেকোঠাকে না চেনাতেন। প্রথম যখন আমি এই পরিবারে পদার্পণ করলাম তার কয়েকদিন পরেই আমাদের কোলাঘাট যাবার আয়োজন শুরু হল। সেই প্রস্তুতিকে পরিপূর্ণ রূপ দিতে গত ১লা ডিসেম্বর ২০১৩ সকাল ৯টায় আমরা সকলে হাওড়া স্টেশনে মায়াজালের বাইরে নতুন করে একে অপরের সাথে পরিচিত হলাম।

প্রথমে কথা ছিল আমরা সরাসরি কোলাঘাটে পৌঁছবো কিন্তু ঘটনাচক্রে আমাদের বাগনান স্টেশনে সাময়িক বিরতির একটি সুযোগ ঘটে গেলো। তারপর? আবার কু... ঝিক ...ঝিক তালে তাল দেওয়া ; এবারের ট্রেনটি নিজেই সুসজ্জিতা– হলে কি হবে? চাঁদেও যে কলঙ্ক থাকে ... !

কোথা থেকে এক সুযোগসন্ধানী ছদ্মবেশীর প্রতারণার শিকার হলেন আমাদের প্রিয় দেবাশিস কাঞ্জিলাল কাকু এবং মহুয়া দি । অমন সাহসী অনুরাধা আন্টিও পরিত্রাণ পাননি !

মা লক্ষ্মীর কৃপা ভেবে সে মহানন্দে তাঁর (অনুরাধা আন্টির) পানের বটুয়া এবং চশমার খাপটি চক্ষুদান করেন । দেবাশিস কাকু ও মহুয়াদির টাকায় বনভোজন সেরে অবশেষে পান না চিবোলে যে যথার্থই বাঙালী বলে মনে হয়না এ বিষয়ে তস্করের দূরদর্শিতা সত্যিই প্রশংসনীয় । সবাইকে ঠকাতে এসে স্বয়ং তিনি যে নিজেই ঠকবেন এ বোধহয় তাঁর কল্পনার অতীত ছিল।

কোলাঘাটে নেমে এবড়ো খেবড়ো ছোট ছোট পাথরের ওপর পা দিয়ে রেললাইন পেরোনোর সঙ্গে দাদার (শেখর দা) কড়া নজরদারী দারুণ উপভোগ্য ; তারপর পায়ে পায়ে ইঁটের চওড়া সিঁড়ি দিয়ে খুশীর লহরী তুলে নামা – সে এক অনন্য অভিজ্ঞতা।

এবার এলাম সমতলে। রূপনারায়ণ তো সেজেগুজে তৈরী অভ্যর্থনা জানাতে ; আহুতি হৈ হৈ করে ছুটে চলে তার সঙ্গে আলাপ করতে , সঙ্গে কিছু বন্ধু বান্ধবী । রূপসী স্রোতস্বিনী জানতো যে ‘ আমরা নূতন যৌবনেরই দূত ’ তাই সে ঘাটে বেশ কয়েকটি নৌকা বেঁধে রেখেছে কিন্তু মাঝি রাখেনি (ভাগ্যিস রাখেনি নাহলে কি যে হতো)। আমাদের উৎসাহে ভাটা পড়বে তাবলে ? না না অকুতোভয় দেবাশিস কাকু নৌকায় উঠে পড়লেন এবং এমনভাবে ক্যামেরাবন্দী হলেন যেন তাঁর তরণী নিয়ে তিনি অতিথি আপ্যায়নের জন্য সদ্য আগত ।

এবার আমরা এলাম নীহার গেস্ট হাউসে । সারা ট্রেনে লোকগান শুনেছি অধীর দাস বাউল এবং কৃষ্ণা দাসী এই বাউল দম্পতির কণ্ঠে - কিন্তু সে গান অনেকসময়েই অস্পষ্ট ছিল ট্রেনের যান্ত্রিক কোলাহলের কারণে । এবার ইন্দ্রানী দিদি মুক্তকণ্ঠে সেই গানটি ধরলেন ;

‘তোমায় হৃদমাঝারে রাখিবো , ছেড়ে দেবো না ...’ –

ইন্দ্রাণীদির কণ্ঠজাদুতে আমরা মুগ্ধ । সেই ছন্দে মন তো দুললোই আর মন দুলে উঠলে তার প্রকাশ ঘটে নৃত্যে । বান্ধবীদের নৃত্য শুধু দেখা নয়, সঙ্গে সঞ্চালনা ও মাঝে মাঝে তাল দিয়ে সুন্দরভাবে সময়টাকে এগিয়ে নিয়ে গেল শ্রীরূপা । মৈত্রেয়ীদির কাছ থেকে প্রায় কেউই ‘উঠোন বাঁকা’ – এই অজুহাতে রেহাই পেলোনা । অমন সদাহাস্যময়ী দিদিকে কেই বা না বলতে পারে ? সুস্মিতা দি , তনিমা দি (সকলের নাম জানিনা বলে উল্লেখ করতে পারলাম না , ক্ষমা করবেন) এঁদের উৎসাহ ছিল চোখে পড়ার মত। আমার মত একজন অতি সাধারণ মানবীকে সুস্মিতাদি, শেখরদা এবং অন্যান্য বন্ধুরা যেভাবে অনুপ্রাণিত করলেন তাঁর জন্য আমি কৃতজ্ঞ ।

মঞ্চ জুড়ে কখনও গান , কখনও নাচ , কখনও মজার কথা , কখনও কিছু ভয়াবহ অভিজ্ঞতার কথা আবার কখনও আবৃত্তি – সবকিছু মিলিয়ে সে যেন এক স্বপ্নের বাতাবরণ ! এই সুন্দর মুহূর্তগুলোকে অমলিন রাখার প্রয়াস সর্বদাই জারী রেখে গেলেন দেবাশীষ চক্রবর্তীদা, দাদাই, শমিতা দি এবং আরও অনেকে ।

সবচেয়ে অবাক লাগলো যখন দেখলাম , ডাঃ অরুণ চট্টোপাধ্যায় কিভাবে নিজের শারীরিক কষ্টকে উপেক্ষা করে নিরলস ভাবে এই আনন্দকে উপভোগ করার চেষ্টা করে চলেছেন। যেখানে শারীরিক অসুস্থতা পরম প্রিয় মানুষের একটি ভালো কথাও বিরক্তির উদ্রেক করে সেখানে তাঁর চোখে মুখে সামান্যতম বিরক্তির আভাসটুকুও পরিলক্ষিত হয়নি।

পিয়ালী মজুমদার, যাকে চিনতাম না, সে কেমন মুহূর্তের মধ্যে বন্ধুত্বের বাঁধনে বেঁধে ফেললো তার ব্যবহারিক মাধুর্যে। ডাঃ বেলাল হোসেন দম্পতি তাঁদের স্থান তো মনের মণিকোঠায়। ওঁদের আন্তরিকতায় শত্রুও বশ্যতা স্বীকার করতে বাধ্য হবেন। অনেকের নাম হয়তো এই স্বল্প পরিসরে বলা সম্ভব হলো না, তবে এই চিলেকোঠা পরিবার হলো এমন একটি পরিবার যেখানে না এলে কেউ বুঝবে না বৃহত্তর পরিবার কাকে বলে। এ পরিবার জানে নতুনকে স্থান দিতে, ভালবাসতে ও আপন করতে। শুধু তাই নয় এখানে এসে আমি এটাও উপলব্ধি করলাম যে, স্বার্থপরতার নাগপাশ এখনও দুর্বল।

সর্বোপরি যাঁর কথা না বললে এই লেখা অসম্পূর্ণ থেকে যাবে তিনি হলেন আমাদের কোলাঘাট স্টেশনে ফেরার পথে পথপ্রদর্শনকারী এক অজানা তরুণ। তিনি নিজে পথ চেনাতে এগিয়ে এলেন এবং শুধু যে পথ দেখিয়ে নিয়ে চললেন শুধু তাই নয়, তাঁর তুলনা তিনি নিজেই।

চলতে চলতে হঠাৎ থমকে দাঁড়ানোয় আমি তাঁকে প্রশ্ন করেছিলাম, কি হলো ভাই? সেই প্রশ্নের উত্তরে তিনি আমাকে অবাক করে দিয়ে যা বললেন তা শুনে আমি অভিভূত – ‘দেখে নিচ্ছি একটু সবাই আসছে কিনা, কেউ যদি না আসে সে তো পথ চিনতে পারবেনা। আপনাদের সবাইকে আমি যদি ঠিকঠাক পৌঁছে দিতে না পারি , তবে যে আমাদের গ্রামের বদনাম হয়ে যাবে’।

অনতিবিলম্বে আমরা ট্রেনের সাময়িক অতিথি হয়ে কোলাঘাটকে হাসিমুখে বিদায় জানালাম। কিন্তু আমরা যে একটু সময়কেও খুশীর মোড়কে মুড়ে দেবার এক অদৃশ্য অঙ্গীকারে আবদ্ধ। সুর, তাল, ছন্দে ভাসতে, ভাসতে কখন যে ১ ঘণ্টা ২০ মিনিট পেরিয়ে গেলো বুঝতেই পারলাম না। তখনও কিন্তু আমরা অফুরন্ত প্রাণশক্তিতে ভরপুর; মনে হচ্ছিল যেন আমরা আবার নবউদ্যমে যাত্রা শুরু করতে চলেছি।


ফোন নাম্বার আদান-প্রদান করতে করতে কখন যে হাওড়া স্টেশনের বাইরে চলে এলাম বুঝতেই পারলাম না। ৬৩ জনের দলের নিবিড় বন্ধন যেন বলতে চাইছিল, ‘নয় থাকলে আরও কিছু ক্ষণ...’ কিন্তু সময় যে অবাধ্য; তাই বাধ্য হয়ে ‘আবার হবে তো দেখা, এই আশাটুকু সম্বল করে চিলেকোঠার কাছে আবার এমন একটি স্বপ্নরঙিন দিনের প্রতীক্ষায় রইলাম আমরা সবাই।





৩)
“এবার কথা কানে কানে”

নারায়ণ রায়


জীবনে প্রথম কবে পিকনিক করেছি আজ আর সেটা মনে নেই, কিন্তু তখন তো ‘পিকনিক’ শব্দটাই জানা ছিলনা, হয় চড়ুইভাতি কিম্বা বনভোজন বলা হ'ত। তবে বনভোজন শব্দটার মধ্যে একটা সুন্দর ব্যঞ্জনা আছে -- বনের মধ্যে অর্থাৎ প্রাকৃতিক পরিবেশে ভোজন।

সেই সময়ে বনভোজন করার জন্য আমরা পাড়ার ছেলেমেয়েরা সাধারণত নিজের নিজের বাড়ি থেকে সাধ্যমত আলু-পিঁয়াজ, কেউ চাল-ডাল, কেউ তেল বা মশলা এসব নিয়ে যেতাম।কখনো সখনো গামছা দিয়ে ছেঁকে কোন পুকুর কিম্বা আমাদের গ্রামের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া কাঁদরে কুচো মাছ ধরা হ'ত। তারপর গ্রামের পাশের কোন শাল পিয়ালের বনের ভিতরে একটা পুকুরের পাড়ে, মাটির ঢেলার তৈরী উনুনে গাছের শুকনো ডালপালার জ্বালে সেগুলো রান্না করা হ'ত।

অবশ্যই রান্নার দায়িত্বে থাকতো পাড়ার চতুর্দশী, ষোড়ষীরা । সেই রান্না যতই মুখে দেবার অযোগ্য হোক না কেন, আমাদের তা কাছে ছিল এক পরম প্রাপ্তি। কারণ বাঃ, দারুন হয়েছে বলে পরিবেশনের সময়ে ‘আমাকে আর একটু দে’ বলে অনিতার হাত স্পর্শ করার সুযোগ কি সহজে ছাড়া যায় ? অথবা মিনতিকে সোমেন ঠিক কতটা ভালোবাসে সেই কথাটা তার কানে কানে বলার নামে দুটি ঠোঁট দিয়ে তার কান স্পর্শ করার সেই সুবর্ণ সুযোগ একমাত্র এই বনভোজনের দিনেই পাওয়া যেত।

আবার আমাদের ছেলেদের জীবনেও প্রথম লুকিয়ে সিগারেট খাওয়া, একবার সবাইকে অবাক করে দিয়ে কল্যানী অজয়ের হাত থেকে টুক করে সিগারেটটা কেড়ে নিয়ে ফুক ফুক করে দুটো টান দিতেই সে কি কাশি ? আর সেই সুযোগে কল্যানীর মাথায় হাত রেখে ষাট ষাট বলার জন্য ছেলেদের মধ্যে কি হুড়োহুড়ি !

আর একটা জিনিস ছিল, খাওয়া দাওয়া হয়ে গেলে ঐ বাগানে গাছের আড়ালে আড়লে সবাই মিলে চোর পুলিশ খেলা। স্বাভাবিক কারনেই নানা ছুতোয় নাতায় সবাই চেষ্টা করত যাতে সব সময় মেয়েরাই চোর হয়, কারণ চোর-রূপী মিনতি দৌড়বে আর পিছন থেকে পুলিশ-রূপী সোমেন দৌড়িয়ে গিয়ে তাকে জাপটে ধরবে এই সুযোগ কি আর সহজে পাওয়া যায় ?

“Age is nothing but a number” এই কথাটা কে প্রথম ব্যবহার করেছিলেন জানিনা, কিন্তু কথাটা যে কি ভীষন ভাবে সত্য তা আবার মর্মে মর্মে উপলব্ধি ক’রলাম। আজ পাঁচ দশক পরেও চিলেকোঠার ব্যবস্থাপনায় সদলবলে কোলাঘাট ভ্রমণে গিয়ে সেই ছোটবেলার বনভোজনের দিনগুলোই যেন ফিরে পেলাম।

না এখানে আমাদেরকে বাড়ি থেকে চাল ডাল তরকারী নিয়ে যেতে হয়নি, জঙ্গলে কাঠ কাটতে হয়নি, মাটির উনুন তৈরী করতে হয়নি, আমাদের অনিতা, মিনতি বা কল্যানীদের রান্না করতে হয়নি কিন্তু বুকে হাত দিয়ে বলুনতো, বাউল অধীর দাস আর কৃষ্ণা দাসী যখন চলন্ত ট্রেনে …. “যেমন চিটে গুড়ে পিঁপড়ে পড়লে…….” বলে গেয়ে উঠলেন তখন পিঁপড়ে লড়তে চড়তে পারুক বা না পারুক, আপনার হৃদয়টা কি একটু নড়ে চড়ে ওঠে নি? আর বাউল বাবাজি, কুমার কৌশিক এবং পিলুর গান যে আবাল বৃদ্ধ বনিতার হৃদয়কে কতটা আন্দোলিত করেছিল সেটা তাদের সমবেত নৃত্যের প্রকাশ ভঙ্গিমার মাধ্যমেই সবাই জানতে পেরেছে।

তাই সেদিনের অষ্টাদশ কিম্বা পঞ্চদশীর সঙ্গে আজকের পক্ককেশ কিম্মা পক্ককেশীদের কোন তফাৎ খুজে পেলাম না। গোলাপ দেওয়া কিম্বা নেওয়ার নাম করে একটুকু ছোঁয়া লাগে, কিম্বা পাশাপাশি দুটি চেয়ারে দুজন বসে, একজনের কানের কাছে মুখটা নিয়ে একটুকু কথা শুনি…. কি করবে দুই বেচারা আর বেচারী, যা জোরে মিউজিক চলছে জরুরী কথাটা বলার জন্য মুখটা তো কানে ঠেকাতেই হবে! হোক না হেমন্ত, চলো না কিছুটা পলাশের নেশায় মেতে একটু ঘুরে আসি, যদিও দল বেধে, তবুও ঐ ভীড়ের মধ্যেও ঠিক পছন্দের লোকের হাতেই হাত রেখে রূপনারায়ণর তীরে কাঁচা আলকাতরার গন্ধে মাতোয়ারা হয়ে যায় ক্ষনিকের তরে।

হটাৎ কোন এক বেরসিক ঘড়ি দেখে বলে ওঠে “এই চলো চলো … সাড়ে পাঁচটা বাজলো ট্রেন ধরতে হবে।” দুসসস্ এই পড়ন্ত হেমন্ত কালটা বড্ড বেরসিক, কে তোমাকে দিব্বি দিয়েছিলো এত তাড়াতাড়ি সন্ধ্যে হওয়ার ? আবার …. ফেরার সময়েও কারও এনার্জীর কমতি কিছু দেখা গেল না….ট্রেনে যথারীতি কে কার পাশে বসবে তারি লাগি হুড়োহুড়ি ।

কিন্তু হাওড়ায় নামার পর অনেকরই মুখটি বেশ ভারাক্রান্ত। সবার শুকনো মুখে একটাই কথা ---“আবার কবে ?” হটাৎ দেখি সেই হাতে হাত, কানে মুখ রাখার গলায় উৎকন্ঠিত প্রশ্ন “আরে তোমার ফোন নম্বরটাই তো নেওয়া হ’ল না”...।।

৪)
আবার এসো

বেলাল হোসেন

প্রথম যখন শুনলাম, চিলেকোঠা , কোলাঘাটে আসছে , মনটা নেচে উঠেছিল । তারিখটা আমার কাছে সমস্যা হয়ে যায়। আমার অনুরোধে যখন ব্যাপক সাড়া পড়ে যায়, দয়াবান হৃদয়বান অ্যাডমিন ১লা ডিসেম্বর রাজি হয়ে যায়, তখনও বুঝিনি, কোলাঘাটের পিকনিক প্রোগ্রাম মানুষকে এত এত আনন্দ দেবে ! এই আনন্দের শুরু কুশলের pinned post থেকেই টের পাওয়া গিয়েছিল।

সুপার হিট আড্ডা পিকনিকের Tune তৈরি করে দিয়েছিল।সকাল সকাল উঠে, professional কাজগুলো দ্রুত সেরে নিয়ে অধীর অপেক্ষা , কখন দল বলের দেখা পাবো। স্টেশনে দাঁড়ানো ছেলেটি এক একটা ট্রেন দেখছে আর ফোন করছে "এখনও আসেনি .." আর আমি কেবলই শেখরকে ফোন করে চলেছি , আর কত দূর, কত দূর...। শেষমেশ ভিনি- ভিডি ভিসি..আপনার প্রত্যেকে যে এত উচ্ছসিত হয়েছেন আমি ভাবতেও পারছিনা..উচ্ছাস যে এত দীর্ঘস্থায়ী হবে, তাও আমার কল্পনার বাইরে ছিল। কোলাঘাটে এর আগেও আমি অনেকবার এরকম পিকনিকের আয়োজন করেছি..আমার ডাক্তার বন্ধুরা বেশ কয়েকবার এসেছেন, তবে চিলেকোঠার মত এত eventful হয়নি সেগুলো ।
এবারে একটা বিশেষ জিনিস চোখে পড়েছে, তুলনামূলক ভাবে বয়স্ক সদস্যরা বেশি সংখ্যায় যোগ দিয়েছেন , এবং তাঁদের ভীষণ প্রানবন্ত participation আমাকে খুব উজ্জীবিত করেছে। সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্র থেকে আপনারা এসে এখানে কাউকে বুঝতে দেননি কার কি status .ভীষণ Appealing. মাননীয়াদের অফুরন্ত এনার্জি দেখে কিছু আর বলার ছিলনা। ওনারা অক্লান্ত নেচে গেয়ে আমাদের অফুরন্ত আনন্দ দিয়ে গেলেন।
আর ফটো সেশন ! এখনও চলছে !
যারা আসেননি, তারা জীবনের একটা আনন্দময় মাইলস্টোন মিস করলেন।
বিশেষ প্রাপ্তি অর্থাৎ "উপরি" হিসেবে বন্ধু ও বাড়লো বেশ কিছু।
শুধু একটা আক্ষেপ রয়ে গেল। খাবারটা তেমন যুৎসই হয়নি। মেনুটা আরও একটু "ঘ্যাম" হলে জমতো ভালো।
চিলেকোঠার সকল সদস্যকে আমার অনেক অনেক অভিনন্দন।

আবার এসো ।


0 মতামত:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন