কবিতা - অরিন্দম চন্দ্র



ভাসান
অরিন্দম চন্দ্র


দুগগাপুজো আজকে শেষ
ভাসান সাঁঝের বেলা,
নীলকন্ঠ পাখি ডানায়
মেঘ রোদ্দুর খেলা।
আলোর বাতি তাসা পার্টি
সাজছে একে একে,
বাবান একা বারান্দাতে
দুগগা-মাকে দেখে।
গেল বছর নদীর ঘাটে
বাবার দেহ পুড়ল,
বাবার গাড়ি বাবার বাড়ি
দেনার দায়ে উড়ল।
সবাই বলে বাবা না কি
লোকের টাকা মেরে,
গাড়ি-দালান হাঁকিয়ে শেষে
নিজেই গেছে মরে।
কে যেন এক দুষ্টু লোকের
অনেক টাকা কড়ি,
তাদের লোভের জ্বালায় বাবা
দিল গলায় দড়ি।
বাবা চলে যাওয়ার পরে
দাদুর বাড়ি এসে,
দিন আগে মা-টাও গেল
জাপানীএনসেফালাইটিসে
দাদুর ঘরের জানালা থেকে
দূরের পাহাড় ডাকছে,
কৈলাশ কি ওইখানেতে
বাবান বসে ভাবছে।
দাদু-দিইয়া বলে কি না
ওই পাহাড়ের বাঁকে,
ঝর্ণা-তলায় ঘর বানিয়ে
বাবা আর মা থাকে।
ভাবতে ভাবতে সন্ধে এল
সবাই এখন পথে,
কপাল জুড়ে সিঁদুর পরে
দুগগা-মা তার রথে।
নদীর ঘাটে বেবাক লোকের
চোখ এড়িয়ে ছেলে,
কখন কোন ফাঁকে জানি
নামল গিয়ে জলে।
ভাসান শেষে ফিরছে সবাই
বাবান গেল কোথায়,
দাদুর হাতে সেল-ফোন আর
দিইয়া কেঁদে ভাসায়।
এমন সময় ভিজে গায়ে
ত্রস্ত বাবান ঢোকে,
দুগগা মায়ের মুন্ডুখানা
কেউ যাতে না দেখে।
সবাই যখন চেঁচিয়ে ওঠে
দুষ্টু ছেলে বলে,
দুগগা মায়ের মুখখানা
তার মায়ের আদলে।
বাবা-মা তো কৈলাশেতে
আমার কথা ভাবে?
শাস্তি দিলাম দুগগা-মা কে
কন্ধকাটা হবে


3 মতামত:

  1. দেবাশিস কাঞ্জিলাল৭ অক্টোবর, ২০১৪ এ ৬:১৩ AM

    অন্য এক পুজোর গল্প বলল এই কবিতাটি ।
    সবার কাছে পুজো তো এক নয়,
    কারো কাছে আনন্দ তা,
    কারোর আবার পুজো কষ্টময় !

    উত্তরমুছুন