কবিতা - তাপস নন্দী


ডুবডুবাডুব
তাপস নন্দী



পুজোর ছুটি পুজোর ছুটি পুজোর ঘন্টা বাজল,
বাইরে যাওয়ার  ইচ্ছাটা ভাই হঠাৎ জেগে উঠল।
কিন্তু এখন যাব কোথায়, না পাই ভেবে কুল,
সমুদ্র পাহাড় অরণ্যের ডাক, হলাম ভেবে আকুল।
হাতের কাছেই দিঘা পুরী, গেলে কে-ই বা আটকায়,
গেলেই হল দল বেঁধে সব, ট্রেন ত সেই আটটায়।
কী জানো ভাই কথাটা হল, গত বারের ভ্রমণ,
মনের ভিতর দাগ ফেলেছে, ফের কি হবে অমন।
ভেবেছিলাম ওই কথাটা নিজে কাউকে বলব না,
কেলোর কীর্তি হয়েছিল এক, কাউকে রাষ্ট্র করব না।
যতই ভাবি চেপেই যাব, ঘটনাটা আর ভাববো না,
বন্ধুরা সব ভারি নচ্ছার, গসিপ্‌ করা ছাড়ল না।
চুপি চুপি বলি তোমায় পাঁচ কান ভাই করো না,
পাড়ায় ক্লাবে বাড়িতে তাহলে, মুখ রক্ষা হবে না।

পুজোর ছুটি পড়তেই সেবার নান্টু এসে বলল,
যাচ্ছি পুরী আমরা সবই, পাঁচটা টিকিট কাটল।
নেড়ু হাড়ি পচা আমি নান্টুকে নিয়ে পাঁচজন,
চুটিয়ে আড্ডা গল্প মজা সব নিয়ে ভাই সাতকাহন।
পুরী মানেই সমুদ্র স্নান, ঢেউয়ের দোলায় নাচা,
নাচতে নাচতে উথাল পাথাল আনন্দে ভেসে থাকা।

আসল কথা সমুদ্র স্নান কখন শুরু হবে,
এই নিয়ে কথায় কথায় তরজা জুড়ল সবে।
কিন্তু ভাই ভয় একটাই, আমি সমুদ্রে নামছি না,
ওরে বাবা! অনেক জল, আমি ত সাঁতার জানি না।
নেড়ু বলে ভয় কীসের আমরা ত সঙ্গে রয়েছি,
মাভৈঃ বলে ঝাপিয়ে পড়িস, নুলিয়া সঙ্গে নিয়েছি।
অভয় শুনে, মনে মনে ভয়কে দূর করেছি,
অফুরন্ত কৃষ্ণ নাম মনের ভিতর জপেছি।
কৃষ্ণ নামের মাহাত্মে, প্রহ্লাদ পার পেয়েছে,
কৃষ্ণপ্রেমের জোয়ার যেন আমার মধ্যে নেমেছে।
গামছাটাকে প্যান্টের উপর কোষে বেঁধে নিয়েছি,
সবার সাথে পা মিলিয়ে সমুদ্রের ধারে চলেছি।
জলের ধারে এসে দেখি মহা লোকের মেলা,
সবাই দেখি জলের ঢেউয়ে করছে কেবল খেলা।
মোহিত হয়ে দেখছি খালি ঢেউয়ের পরে ঢেউ,
ওরই মধ্যে চলছে স্নান থামছে না তো কেউ।
হুটোপুটি চিৎকপাটি চিৎকার আর গর্জন,
আছাড়ি পিছাড়ি চলে গড়াগড়ি কথায় কথায় তর্জন।
ঢেউয়ের সাথে ভিড়ের মাঝে চার মর্কটকে খুঁজছি,
পাবো কোথায়, লোকের ভিড়ে নিজের মনে হাসছি।

তারই মধ্যে দেখি ওদের হুটোপুটির মেলা,
ঢেউয়ের মাঝে ডুব ডুবা ডুব ভেসে থাকার খেলা।
বড় ঢেউয়ের জলোচ্ছাস, যখন তীরে ভাঙছে,
উথাল পাথাল সবাই তখন গড়াগড়ি খাচ্ছে।
এমন সময় পাশে দেখি পচা নেড়ু দাঁড়িয়ে,
আমায় তারা জলে নেবে, হাত ধরে তাই টানছে।
এই না ভেবে আঁৎকে উঠে জুড়ি চেঁচামেচি,
কার কথা কে শুনবে,


0 মতামত:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন