চিলেকোঠা সরগরম

এই সংখ্যার বিষয়ঃ
"মেয়েদের অতি আধুনিক বস্ত্র-অল্পতা সাম্প্রতিক কালের নারী নির্যাতনের অন্যতম প্রধান একটি কারণ"

(বিশেষ সূচনাঃ এই বিভাগে প্রকাশিত প্রতিটি মন্তব্য অংশগ্রহণকারীর একান্তই নিজস্ব মতামত, এ বিষয়ে চিলেকোঠা অয়েবজিন কোনোভাবে দায়ী নয়)



পক্ষেঃ

১) সুস্মিতা সিং

মাননীয় বিচারক মণ্ডলী ও সভার বিপক্ষের বন্ধুরাঃ

সভার মতে, " মেয়েদের অতি আধুনিক বস্ত্র-অল্পতা সাম্প্রতিক কালের নারী নির্যাতনের অন্যতম প্রধান একটি কারণ " – এখানে দুটি শব্দবন্ধ বিশেষ উল্লেখযোগ্য। এর মধ্যে প্রথমটি হোল ‘নারী নির্যাতন’ । নির্যাতন শব্দটিকে কাটাছেঁড়া করলে একদিকে যেমন Rape, Molestation, Eve Teasing, Physical Assault, ইত্যাদি পড়ে, অন্যদিকে মানসিক নির্যাতনটিকেও কিন্তু উপেক্ষা করা উচিত নয়। আর দ্বিতীয়টি হোল ‘অন্যতম প্রধান একটি কারণ’ – অর্থাৎ নারী নির্যাতনের ক্ষেত্রে খোলামেলা পোশাক পরিধানকে একমাত্র কারণ বলে মনে না করে সভা এটিকে অনেক গুরুত্বপূর্ণ কারণগুলির একটি বলে মনে করছে। আমি সভার এই মতকে সম্পূর্ণ সমর্থন করি।

যে দেশের সাম্প্রতিক অতীতের একেবারে প্রথম সারির একদল কবিসাহিত্যিক কলকাতা থেকে সুদূর সাঁওতাল পরগনায় দৌড়ান, ‘মাথার প’রে দেয়নি তুলে বাস’ ও ‘মুক্তবেণী পিঠের প’রে লোটে’ বলে সুঢৌল শরীরের অধিকারিণী সাঁওতাল রমণীরা সহজলোভ্যা ভেবে এবং অবশেষে সাঁওতাল পুরুষদের তাড়া খেয়ে নিজেদের পিঠ বাঁচিয়ে কোনোরকমে ফিরে আসেন নিজের ডেরায়, সেই দেশের মানুষের কোনোরকম Hypocrisy সাজে না।

যে দেশে মেয়েদের চায়ের ভাঁড়ের সঙ্গে তুলনা করে ‘খাওয়া’র পর ছুঁড়ে ফেলে দেওয়ার উপমা টানা হয়, সে দেশে Tatoo আঁকা খোলা পিঠ বা Clean n Clear বাহুমূল, অথবা মাত্র এক-চতুর্থাংশ আবৃত রোম-বিসর্জিত চিক্কণ Chicken Legs, কিম্বা Deep n Dark Cleavage আর Piercing করা গভীর উন্মুক্ত নাভিদেশ দেখলে অবশ্যই অধিকাংশ পুরুষেরই সংযমে টান পড়ে বৈকি।

সব পুরুষই তো আর নারী নির্যাতনকারী হন না; কিন্তু যাঁরা হন, তাঁদের চিত্তবিকৃতিতে নারীর খোলামেলা পোশাক নিশিতরূপে ইন্ধন জোগায়। অবশ্যই তা উপযুক্ত শিক্ষা ও পরিমার্জিত মননশীলতার অভাবে, এই নিয়ে বিতর্কের কোন অবকাশই নেই।

আসলে যে সমস্যাটিকে চিনলে আমাদের আস্তিনে দাগ পড়তে পারে, সেটিকে না চেনার জন্য আমরা সযত্নে অন্তত একশোটা কুযুক্তি খাঁড়া করি। আবারও বলছি, সভা জানতে চায়, খোলামেলা পোশাক নারী নির্যাতনের অনেক কারণগুলির মধ্যে একটি কারণ কিনা। আমার মতে অবশ্যই এটি একটি কারণ। আগে সমস্যাটি ঠিকমতো চিহ্নিত করে স্বীকার করতে হবে। সেখানে ভাবের ঘরে চুরি করে লাভ নেই। তারপর না হয় ঠিক করা যাবে, মেয়েরা বোরখা পরবে, না ছেলেদের মানসিক চিকিৎসা ও নীতি শিক্ষার ইঞ্জেক্‌শান দেওয়া হবে!।




বিপক্ষেঃ


১) রুমনি সেন

এখানে নারী নির্যাতন বলতে নিশ্চয়ই রেপ ও মলেস্টেশন বোঝানো হচ্ছে। বস্ত্রস্বল্পতার কারণে রেপ ও মলেস্টেশন হচ্ছে এটা অযৌক্তিক কথা।

আমরা দেখি চকোলেট বা ক্যান্ডিতে মোড়ক থাকে, তা না হলে মাছি বা পিঁপড়ে ধরতে পারে। মোড়কটা থাকলে মাছি বা পিঁপড়ে ভাবে ওটা তাদের খাদ্য নয় তাই আর ধারে কাছে আসে না।

কিন্তু মানুষরা এত বোকা নয়। মেয়েরা নিজেদের আপাদমস্তক কাপড়ে মুড়ে রাখলেও তারা বোঝে পোষাকের আড়ালে একটা দেহ আছে। আর পোষাকটা এমন কোন বর্ম নয় যে তার দ্বারা অপরাধীরদের নিরস্ত বা পরাস্ত করা যাবে। বরং খুব বেশি পোষাকে আবৃত মহিলারাই আক্রান্ত হলে প্রতিরোধ করতে পারবে না, পোষাকের কারণেই। একবার একটি মেয়ে বলেছিল, জিনস পরা থাকলে আক্রমণকারীকে লাথি মারতে সুবিধে হয়।

এমন কোন পরিসংখ্যান নেই যে বিকিনি পরা মেয়েরাই বেশি রেপড হয়। স্কুল কলেজের ছাত্রী থেকে শুরু করে কর্মরতা মহিলা, সর্বস্তরেই রেপ হচ্ছে। এরা কেউ মিনিস্কার্ট পরে চলাফেরা করে না। আর যদি চলাফেরা করেও থাকে সে জন্য তাকে রেপ করার অধিকার জন্মায় না। শিশুরা (স্ত্রী পুরুষ নির্বিশেষে) রেপিস্টদের সহজ শিকার। এমন কি গৃহপালিত পশুরাও। এদের ক্ষেত্রেও কি মিনিস্কার্ট তত্ত্ব খাটে? আসলে এই সব অপরাধের জন্য দায়ী হল পুরুষের অসুস্থ মানসিকতা, তৎসহ মদ ড্রাগ, পর্ন ভিডিও ইত্যাদিও রয়েছে আগুনে হাওয়া দিতে এবং সর্বোপরি রয়েছে দুর্বল প্রশাসন ও বিচারব্যবস্থা, যা অপরাধীর মনে কিছু মাত্র ভীতিসঞ্চার করে না।

সমস্যাকে সঠিকভাবে চিহ্নিত করতে হবে, তাহলেই সমাধানের পথ বেরিয়ে আসবে। তা না করে ভিকটিম ব্লেমিং করলে সমস্যাটা থেকেই যাবে, শুধু তাই নয়, দিন দিন বাড়তেও থাকবে।



২) অরুণ চট্টোপাধ্যায়


অলক্তরাঙ্গা পায়ে, সিন্দুর-শোভিতা ভালে, শাড়ী পরিহিতা অঞ্চলে অবগুন্ঠিতা নারী – এক কালে নারীর এই বধূরূপ ও মাতৃরূপ ছিল বাঙ্গালী তথা ভারতীয় সমাজের নারীর প্রিয় ভূষণ । সেই কালের হয়ত কথা বলছি, যখন নারীরা সংসারে আবদ্ধ ছিলেন স্বামীর বাহুডোরে, রন্ধন-কর্মে ও শিশু-পালনে । স্বামী, সংসার ও সন্তান এই তিন স-এর সু-পালিকা ছিলেন তিনি । পিতৃ-তান্ত্রিক সমাজের ধারা অনুযায়ী স্বামী-শ্বশুরের বা সমাজের তথাকথিত অভিভাবক বা সমাজপতিদের বাঁধাছকের পোশাক তাঁরা হয়ত মানিয়ে নিয়েছিলেন খানিকটা বাধ্য হয়ে ।

ইংরেজ শাসনাধীন থাকা কালে পুরুষরা কাজের সুবিধার জন্যই হোক বা অনুকরণ-প্রিয়তার জন্যই হোক ইংরেজদের পোশাক ধারণ করেছিলেন । কিন্তু অন্দরমহলে প্রবেশাধিকার পায় নি সে পোশাক । আজ ছেলে ও মেয়ের মধ্যে কোনও ফারাক নেই। প্রত্যেকেই স্বীকৃত একজন মানুষ হিসেবে । প্রত্যেককেই নিজ নিজ ক্ষেত্রে আপন আপন কর্তব্যপালনে দায়বদ্ধ । কাজের সুবিধার জন্যও মেয়েদের কিছু সুবিধাজনক পোশাক যেমন চুড়িদার, জিনস- টপ ইত্যাদি বা পুলিশ, নার্স, মিলিটারি ইত্যাদি ক্ষেত্রে তাদের নিজ নিজ বিভাগীয় ইউনিফর্ম পরতে হয় ।

এটা ছাড়াও রয়েছে অভিনয়, মডেলিং ইত্যাদির ক্ষেত্রে প্রয়োজনানুসারে পরিচালকের পরামর্শ মত পোশাক পরিধান স্বীকৃত । এই শেষোক্ত ক্ষেত্রগুলিতে অবশ্য পোশাকের মাপকাঠি বলতে বর্তমানে আছে শুধুই তার হ্রস্বতা । টি-আর-পি বা বক্স-অফিসের সাফল্যের খাতিরে এই হ্রস্বতা যেন ক্রমেই বেড়ে চলেছে ।

এ কথা ঠিক যে, আজ নারীদের মধ্যে পোশাক-হ্রস্বতার প্রতিযোগিতা লেগে গেছে । আর এই প্রতিযোগিতার ফলশ্রুতি উপহার দিচ্ছে নানান অশালীনতাও । এমন কি বাচ্চা মেয়েদেরও ফ্যাশানের খাতিরে যেগুলো পরানো হচ্ছে সেগুলো রুচির সীমাও হয়ত অতিক্রম করে যায় । উঠতি মেয়েদের শরীরের রেখাগুলি অত্যন্ত স্পষ্ট হয়ে ধরা পড়ে পুরুষের, বিশেষভাবে উঠতি বয়সের পুরুষের কাছে । তারা নারীর সৌন্দর্যের আড়ালে উপভোগ করে যৌন-উন্মাদনা আর উত্তেজনা ।

নারীর এই অশালীন পোশাক নিন্দনীয় হতে পারে, সেটা পুরুষের চোখে জ্বালাতে পারে কামের আগুন । কিন্তু তা নারী- নির্যাতনের কারণ কেন হবে সেটা সুবোধ্য নয় । তাহলে তো এই নিগ্রহ অনেক অনেক বেড়ে যাওয়ার কথা । মনে রাখতে হবে পশুরা কিন্তু কোনও পোশাকই পরে না । তবু পশুরা তাদের একটি নির্দিষ্ট সময় ছাড়া কাম-পীড়িত হয় না । তবে কি মানুষের অবস্থান পশুর নীচে নেমে গেছে ? নারী-নিগ্রহ সম্পূর্ণ একটি ভিন্ন বিষয় । এটি নির্ভর করে পুরুষের সামগ্রিকতার মধ্যে নয় বরং কিছু বিকৃত-কাম পুরুষের বিকৃত দৃষ্টি আর পরিণতি-বোধের অভাবের জন্যই । যৌন-আবেদনকারী পোশাকে কাম-পীড়িত হওয়া আর নারী- নির্যাতন সম্পূর্ণ দুই ভিন্ন মানসিকতার বিষয় । একের সঙ্গে অন্যকে গুলিয়ে ফেলা এক ধরণের সরলীকরণ প্রচেষ্টা ছাড়া আর কিছু নয় । নারীর পোশাক অবশ্যই রুচিশীল হওয়া বাঞ্ছনীয়, তবে এই বিকৃত-কাম পুরুষগুলির মানসিকতার সু-পরামর্শ বা কাউন্সেলিং খুব জরুরী ।



৩) স্বপন দেব

“কার্যেষু দাসী, করণেষু মন্ত্রী, ভোজেষু মাতা, শয়নেষু রম্ভা, রুপেষু লক্ষ্মী, ক্ষমায়েষু ধরিত্রী, সৎ ধর্মযুক্তা, কুলধর্ম পত্নী”

যে সমাজের নীতিশাস্ত্র নারীকে দিনে দাসী আর রাতে সেবাদাসী হওয়ার বিধান দেয়, সেই সমাজে নারী নির্যাতনের দায় যে একান্তভাবেই নির্যাতিতার ওপর বর্তাবে তাতে আশ্চর্যের কোন কারণ নেই। বক্তব্য রাখার আগে আমার প্রশ্ন হল, এখানে নির্যাতন বলতে কোন নির্যাতনের কথা বলা হচ্ছে ? শারীরিক, মানসিক নাকি, যৌন-নির্যাতন ? তর্কের খাতিরে যদি ধরেও নি, এখানে নির্যাতন বলতে শুধুমাত্র যৌননির্যাতন বোঝানো হচ্ছে, তাহলে সাম্প্রতিককালের কয়েকটি দৃষ্টান্তঃ- দিল্লী গণধর্ষণ, বারাসাত গণধর্ষণ, গৌহাটি গণযৌননির্যাতন, মুম্বাই জার্নালিস্ট গণধর্ষন, চেন্নাই মেডিক্যাল ছাত্রী গণধর্ষণ এর কোনোটাতেই কিন্তু চেষ্টা করেও আধুনিক বস্ত্রাল্পতা কে নারী নির্যাতনের কারণ দর্শানো যায়নি……। তর্কের খাতিরে যদি ধরেও নি যে, স্বল্পবস্ত্র পরিহিতা নারীকে পণ্য হিসাবে দেখা হয়, তাহলেও প্রশ্ন ওঠে, পণ্যকেও কি তার বিনিময় মূল্য ছাড়া ভোগ করা যায় ? বাজারে আলু, পটল পেঁয়াজ, পেট্রলের দাম বাড়ে, কিন্তু নারী নামক পণ্যের কোন মূল্যবৃদ্ধি হয়না ! তাই নারীর ওপর নির্যাতন হলে, নারীকে পণ্য বানিয়ে তার আধুনিকতার ওপর দায় চাপিয়ে দেওয়া হয়। পুরুষতান্ত্রিক সমাজে কোন সামাজিক অপরাধের জন্যই পুরুষকে দোষারোপ করা হয়না। পুরুষজাতি মহান। তারা অন্যের স্ত্রীর সাথে নিষিদ্ধ প্রেম করেও যুগে যুগে পূজিত হন মহান প্রেমিক রূপে, কলঙ্কিনী হন শুধু রাধা রা !! অপহৃত হওয়ার অপরাধে অগ্নিপরীক্ষা দেন সীতা। রাম পূজিত হন যুগশ্রেষ্ঠ স্বামী রূপে! স্ত্রীকে পণ রেখে জুয়া খেলে প্রকাশ্য রাজসভায় স্ত্রীর যৌননির্যাতনের নির্বাক সাক্ষী হয়েও ধর্মেরধ্বজা ওড়ান ধর্মপুত্র যুধিষ্ঠির! ভারতবর্ষের হাজার হাজার গ্রামের লক্ষ লক্ষ মহিলা প্রতিদিন, প্রতি রাতে নির্যাতিতা, ধর্ষিতা হচ্ছেন যাঁরা খবরের কাগজের হেডলাইনে আসেন না। তারা কিন্তু কেউ মিনি স্কার্ট পরে ঘুরে বেড়ান না। ভারতীয় সমাজব্যবস্থায় নারীনির্যাতন এক চিরকালীন প্রশ্ন-চিহ্ন। নারী সব নির্যাতন......সব যন্ত্রণা মুখ বুজে সহ্য করে যাবে—পুরুষতান্ত্রিক সমাজের এটাই দাবী। আধুনিক নারী যদি তার প্রতিবাদ করে, তবে নির্যাতনের অপরাধে নির্যাতনকারী নয়, নির্যাতিতার আধুনিকতাকেই দায়ী করার এই জঘন্য চক্রান্তে, আধুনিকার স্বল্প-বস্ত্রতা নয়, বরং পুরুষতান্ত্রিক সমাজের কুৎসিত নগ্নতাই প্রকট হয়।



৪) অনুপম দাশশর্মা।

সকালে কাগজ খুললেই আতঙ্কে শিরশির করে শরীর। আবার দেখব নাতো তিনবছরের কোন শিশুকন্যার ধর্ষনের খবর! শুধু এইটুকুই বুঝিয়ে দেয় সমাজের নরকজাত মানুষগুলো যখন ধর্ষকামী ইচ্ছার বলিকাঠে একটি শিশুকে চড়াতেও একচুল সরে আসতে পারেনা। তাদের কাছে জঘন্য লালসাই প্রধান উৎসেচক। ওই শিশুটির ক্ষেত্রে পোষাকের কোন তাৎপর্য থাকে না। পথেঘাটে প্রবল পশ্চিমী আবহাওয়ায় নিশ্চই কিছু যৌন ক্ষুধায় সুড়সুড়ি দেয় কিন্তু নারী নির্যাতনের একমাত্র কারণ ওই আপাত উদ্দেশ্যমূলক পোষাক হতে পারে না।

কালের বয়স বাড়ার সাথে সাথে সংস্কৃতির চরিত্র পালটে যায়, পালটে যায় মানুষের ভাললাগার রসদ। ক্ষুরধার আকর্ষণের সীমা লঙ্ঘন করে বিজ্ঞাপনের নারী শরীরের অপব্যবহারের বিপনন।

যে শিশু দীপাবলিতে তারাবাতি জ্বালায় সে ঘুরেও তাকায়না তারাবাতির প্যাকেটে অর্ধ নগ্ন নারী শরীরের ছবিটির দিকে। অথচ সুক্ষ্মভাবে পণ্যকে গণিকাবৃত্তিতে নামিয়ে এনে নারী অবমাননা করেই চলেছে দিনরাত অসাধু চরিত্ররা। শিল্পের বকলমে রিপুর তাড়না দমিত হয়, কখনও কবিতায় কখনও বিদেশী নাটকের চরিত্রায়নে।

এ সবই একটা দুষ্ট শ্রেণীকে উৎসাহিত করে নোংরা কাজে, নারীর অবমাননায়। সুতরাং কিছু অসংলগ্ন পোষাক পরিহিতা কখনই একক দায়ী হতে পারে না।


2 মতামত:

  1. চিলেকোঠা সরগম বিভাগটি দিনে দিনে আক্ষরিক অর্থেই "সরগরম" হয়ে উঠছে । কিন্তু দুঃখের সঙ্গে এটাও এবারে লক্ষ করা গেল যে সভার মতের পক্ষে মাত্র একজন লেখিকাকে পাওয়া গেছে । যে কোনও বিষয়ের কিন্তু সর্বদাই দুটি অভিমুখ থাকে । এখেত্রেও আছে । মেয়েদের পোশাক- বিতর্ক আজকের নয় - আবহমান কাল ধরেই চলে আসছে । মাঝে মাঝে কিছু ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের এ ব্যাপারে এক তরফা সিদ্ধান্ত সমস্যার সৃষ্টি করছে এবং খবরের কাগজ বা টিভি চ্যানেলের সংবাদ হয়ে তাদের সেল বা টি-আর-পি বৃদ্ধিতে সাহায্য করছে । আসলে স্বাধীনতা শব্দটি বড়ই আপেক্ষিক । প্রকৃতপক্ষে সমাজবদ্ধ প্রাণীরা কিন্তু কেউই প্রকৃত অর্থে স্বাধীন নয় । সমাজবদ্ধতার খাতিরে একজনের হাত আর একজনকে ধরতেই হয় । আর তখনই একের সিদ্ধান্তের ভাগীদার অন্যকে হতেই হয় । সেদিক থেকে দেখতে গেলে এই পোশাক বিতর্কের যথেষ্ট অবকাশ রয়েছে ।
    চিলেকোঠা বহু জ্ঞানী গুণী মানুষের সুন্দর এক মিলনস্থল । এই প্ল্যাটফর্মটিকে যথেষ্ট ইতিবাচক পটভূমিতে ব্যবহারের সুযোগও রয়েছে । সুতরাং আমার আশা ভবিষ্যতে আরও বহু মানুষ বিতর্কে অংশগ্রহণ করে এই বিভাগটিকে একটি সফল বিতর্কের মঞ্চ হিসেবে তুলে ধরতে সমর্থ হবেন আর তার ফলশ্রুতি হয়ত সমাজকে একটা ইতিবাচক দিক দেখাতে সমর্থ হবে ।

    উত্তরমুছুন
  2. স্বপনদা চমৎকার লিখেছেন। আসলে মেয়েদের সেক্স অবজেক্ট ভাবা বন্ধ না করলে রেপ হবেই। অনেকে বলে মহিলারা বোরখা পরলে রেপ হবে না, অনেকে আবার বলে পতিতা বৃত্তি আইনসিদ্ধ না হলে রেপ বাড়বে। এ সব কথা আসলে রেপকেই পরোক্ষে উৎসাহিত করে। কোন মহিলা উলঙ্গ হয়ে রাস্তা দিয়ে চললেও তোমার অধিকার নেই তাকে রেপ করার। একজন দায়িত্বশীল নাগরিক হিসেবে তুমি বরং তাকে পাগলা গারদে পাঠাতে পারো। প্রসঙ্গত উল্লেখযোগ্য, এ দেশে বেওয়ারিশ পাগলিরা সব চেয়ে বেশী রেপড হয় এবং বিচার পায় না। :)

    উত্তরমুছুন