সম্পাদকীয় - ১ম বর্ষ ৫ম সংখ্যা

সম্পাদকীয়


বাংলা সাহিত্যে হেমন্তকাল নিয়ে তেমন চর্চার কথা বিশেষ জানা নেই। সাহিত্য-সরস্বতীর সমস্ত কৃপাদৃষ্টিটুকু গ্রীষ্ম-বর্ষা-শরৎ-শীত-বসন্তই ভাগ করে নিয়েছে। শরতের উৎসব যাত্রার শেষে শীতল অতিথির আগমন বার্তা নিয়ে আসে হেমন্ত।

কার্তিক-অগ্রহায়ণ, এই দুই মাস হেমন্তকাল। এক সময় পূর্ববাংলার ঘরে ঘরে প্রচলন ছিল আশ্বিন মাসের শেষদিনে রান্না করা অন্নে জল ঢেলে রেখে পরের দিন অর্থাৎ কার্তিক মাসের প্রথম দিন খাওয়া হতো; কেননা প্রবাদ ছিলঃ “আশ্বিনের ভাত কার্তিকে খায়, যেই বর মাঙ্গে সেই বর পায়”......... এই সংস্কৃতি হয়তো আজ ইতিহাস।।

বাংলা সনের প্রবর্তন করেছিলেন বাদশাহ আকবরের নবরত্ন সভার প্রভাবশালী সদস্য ফতেহ্‌উল্লাহ্‌ সিরাজ। এক-একটি নক্ষত্রের নামানুসারে বাংলা মাসগুলির নামকরণ করা হয়। সেই অনুসারে কৃত্তিকা ও মৃগশিরা – এই দুই নক্ষত্র থেকে কার্তিক ও মার্গশীর্ষ – এই দুই মাসের নামকরণ হয়। এই সময় এই মার্গশীর্ষ মাসটি থেকে বছর শুরু হতো; অগ্র অর্থাৎ শুরু এবং হায়ন অর্থাৎ বৎসর – এই সূত্র ধরে পরবর্তী কালে মার্গশীর্ষ বদলে হয়ে গেল অগ্রহায়ণ।

হেমন্ত শরতের পরিনতি, শীতের প্রস্তুতি। হাল্কা কুয়াশার আচ্ছাদনে নরম সূর্যকে আরও নরম করে দিয়ে শিশিরের নিঃশব্দ চরণে আসে বাংলার এই চতুর্থ ঋতু, হেমন্ত; সেই হেমন্তে যেন আজ কোন্‌ বসন্তেরই বাণী –

আর হেমন্তের এই মায়াবী বাসন্তী আলো মেখে একেবারে ঝলমলে সাজে প্রকাশিত হোল চিলেকোঠা ওয়েবজিন প্রথম বর্ষ, পঞ্চম সংখ্যা। এই সংখ্যায় থাকছে রম্য রচনা, কবিতা, অনুবাদ কবিতা, অনুগল্প, ছোটগল্প, প্রবন্ধ, ধারাবাহিক ‘নাড়ু রহস্য’, সম্পর্ক নিয়ে লেখা একটি মনোজ্ঞ প্রবন্ধ, ছোটোদের পাতা, ভ্রমন কাহিনী; এছাড়া, মহাভারতের কথা, রান্নাঘরের মতো নিয়মিত বিভাগগুলি তো থাকছেই। আশা করি, ভালো লাগবে।

সংশয় নেই, প্রতিবারের মতই এবারও পড়বেন মন দিয়ে; নিজে পড়ুন, অন্যকে পড়ান, সুচিন্তিত মতামত জানিয়ে পত্রিকাটিকে সমৃদ্ধ করুন। আপনাদের আন্তরিক সহযোগিতা পত্রিকাটির মানোন্নয়ণে আমাদের সহায়তা করবে।

জানি, সঙ্গে আছেন, সঙ্গে থাকবেন, ভালো থাকবেন, শুভেচ্ছা জানবেন।।
নমষ্কারান্তে,

চিলেকোঠা ওয়েবজিনের সম্পাদকমণ্ডলী


1 মতামত:

  1. দেবাশিস কাঞ্জিলাল১৪ ডিসেম্বর, ২০১৩ এ ১১:৪৮ PM

    অভিষেক চট্টোপাধ্যায়ের 'চণ্ডালিনী-রাধা' আলেখ্যটি পড়ে মুগ্ধ হলাম ! প্রকৃতিকে উপজীব্য করে পদাবলী আধারিত মনোজ্ঞ লেখাটি আমাদের পত্রিকার একটি সম্পদ হিসেবে থেকে যাবে ! অভিষেকের মৈথিলী ভাষায় দখল আমাদের অনেকেরই সুবিদিত। তাঁর লেখা কিছু কবিতা রবিঠাকুরের ভানুসিংহ রচনাবলীর কবিতার মতই সুললিত।
    অভিষেকের সাহিত্যকৃতি নানা দিকে বিস্তীর্ন পরিসরে ব্যপ্ত আজ। তাঁর ভ্রমন-কাহিনীগুলি পড়ে কবিতা পড়ার বোধ জাগে ! অভিষেকের কাছে একটি শুধু অনুরোধ রাখি, যদিও জানি সে বড়ো ব্যস্ত থাকে বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় লেখার কাজ নিয়ে, তবু সে যদি আমাদের এই ওয়েবজিনে নিয়মিত কিছু লেখা লেখে, তবে তার কাছে ঋণী হয়ে থাকি ! আশা করি আমার এ আবেদনে সে সাড়া দেবে !

    উত্তরমুছুন