কবিতা - মৌ দাশগুপ্তা

পঙ্কজ
মৌ দাশগুপ্তা



অনাদরে অবহেলায় পুকুরের কর্দমাক্ত তলদেশ থেকে,
যেখানে সন্দেহাতুর মনের মত কালো ছায়াটি জমানো আছে জলে,
যেখানে ঈষৎ কাঁপা কাঁপা সবজেটে জলে ঘাই দিয়ে
কৌতুহলী প্রতিবেশীনির মত মাছের ঝাঁক উঁকি মেরে যায়,
সেখানেই পাঁকের দুর্গন্ধময় দেহের নাভি থেকে উত্থিত হয়ে,
চোখ মেলে নগ্ন মনসিজ।

কোরকের ঘুমভাঙ্গা চোখ থেকে ঝরে পড়া আড়ষ্ট স্বপ্নগুলো
বড় আদরে জড়িয়ে নেয় দিনের প্রথম আলো-কে।
স্বৈরিনী দ্বিচারিকার মত কখনো আলোর বুকে,
কখনো হাওয়ার কাঁধে,ঢলে পড়ে,
কখনো বা মধূপের তীব্র দংশন খোলা বুকে সয়ে
হাসিমুখে যৌবন-লীলায় মাতে নেশাগন্ধী পদ্মবালা।

তারপর পরিবর্তন আর পরিবর্তন,
বর্ণহীনা কমলকলি শুচিশুভ্র পোশাক বদলে সেজে ওঠে অভিসারিকার
লাজ-রাঙা বসনে, গর্বোদ্ধত ভঙ্গীমায় ভরে ওঠে কামদীপ্ত লালিমায়,
অরন্যসুলভ অস্ফুট উচ্চারণে গুনগুনিয়ে আসে প্রেমদূতের দল,
শিকড়বদ্ধ কমলিকার সন্ধানে এগোয় লালসার হাত,
মধূলোভীরা চাহিদা মিটিয়ে উড়ে যায়
অন্য-উদ্ভিন্নযৌবনার সন্ধানে।

তারপর...তারপর আরকি?
পদ্মের ঝরে পড়া পাপড়ির আড়াল থেকে, নবীন শিকড়ে
একটা গোটা কবিতা হয়ে জন্ম নেয় আরেকটা নতুন কোরক।
বুকভরা মধু নিয়ে নিস্তরঙ্গ জলের বুক চিরে কোরক থেকে কুমুদে -
আত্মপরিচয়,পিতৃপরিচয়, খুঁজতে মাথা কুটে মরে।
গল্পটা এখানেই শেষ,এর বেশি কিছু ছিল না ,
এর বেশি তো সে জানায় নি কখনো...



0 মতামত:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন