মিষ্টি মধুর
গল্প
অরুণ চট্টোপাধ্যায়
প্রিন্সেপ ঘাট নাকি মিলেনিয়াম পার্ক। দুপুর থেকে বিকেল গড়িয়ে চলল
কিন্তু এটার মিমাংসা এখনও হল না। মিলেনিয়াম পার্ক নাকি এর মধ্যেই বার ছয়েক হয়ে
গেছে। কিন্তু প্রিন্সেপ ঘাট তো দুবারের বেশি হয় নি। তার মানে থ্রি ইজ টু ওয়ান।
-প্রিন্সেপ ঘাটই বেশ ভাল। গঙ্গার পাড়ে বাঁধানো সিঁড়িতে বসে গঙ্গার ঢেউ
গোনা। একভাবে শোন শুধু জলের কল কল শব্দ। একটানা স্রোত চলেছে মোহানার দিকে। সেই
স্রোতের টান ভাসিয়ে নিয়ে যাবে তোমাকে একেবারে সেই সাগরের দিকে। অনন্ত বিস্তৃত
সমুদ্র। চারিদিকে জল আর জল। দেখে দেখে চিত্ত তোমার হয়ে যাবে বিকল-
-না না সইবে না আমার অত ধকল। বিরক্ত হয়ে মিষ্টি বলল, সইবে না তোমার
কবিত্বের ধকলও। আহা কতবড় কবি যেন হয়েছ। শুধু ট্যাবের পাতাগুলোই নষ্ট করছ কাব্য
করে। ডাকল তোমায় কেউ কবি সম্মেলনে?
-ট্যাবে কোনও পাতা নষ্ট হয় না। বোকার মত কথা বল না তো। মধু বলল, শুধু
মেমারি নষ্ট হয়। তা সে না হয় বাড়তি মেমারি চিপস লাগিয়ে নেওয়া যাবে। আর আমার দোষ
আমার কবিতার মানে বোঝা যায়। মধু অভিমানে ঠোঁট ফোলাল, জানোনা আজকাল কবিতার মানে বোঝা
গেলে তাকে কেউ আর কবি বলে স্বীকার করে না। বলে একটা কবিতা শোনাতে লাগল। কিন্তু
মিষ্টি ধমক দিয়ে তাকে থামালো।
-আমিও তবে বলি শোন। যেটা সহজে বোঝা যায় সেটা তো সহজে লেখাও যায় নাকি?
আর যেটা সহজে লেখা যায় সে তো হারান মুদি কি বিশে পাগলাও লিখতে পারে? তার জন্যে
তারা তোমাকে কবি বলবে কেন শুনি?
মধুর প্রিন্সেপ ঘাট প্রোগ্রাম বাতিল হল। বহাল রইল মিষ্টির মিলেনিয়াম
পার্ক প্রোগ্রাম। মধু অবশ্য ঠিক করে এসেছিল বাবুঘাট থেকে গঙ্গার পাড়ের সেই ছায়া
ছায়া মিষ্টি বাঁধানো পথ ধরে দুজনে হাত ধরাধরি করে হেঁটে যাবে। মিষ্টি খুব মিষ্টি
মিষ্টি কথা বলবে আর মধু গড়িয়ে গড়িয়ে পড়বে হাসতে হাসতে। তারপর সেই গঙ্গার কল কল
ডাক। মাঝে মাঝে চক্ররেলের আনাগোনা। প্রিন্সেপ স্টেশনে একটা ছোটখাট ফোটো স্যুটও হয়ে
যাবে।
মধুর আবেগময় বক্তৃতা মাঝপথে থামিয়ে দিল মিষ্টি, আহা গঙ্গা যেন আর
মিলেনিয়ামে নেই। যেন ওটা যমুনার তীরে সেই তাজমহলের পাশে। তাছাড়া তোমার হাত ধরতে
বয়েই গেছে। এ ম্যা মাথায় টাক। ছাব্বিশ বছরেই যেন ছেচল্লিশ বছরের বুড়ো।
মাথায় আলতো হাত বুলোল মধু। যেন তার মাথার সামনের দিকের হাতে গোনা চুল
কটাকে একটু সান্ত্বনা দিল। মুখ কাঁচুমাচু করে বলল, এমনভাবে টাক টাক বল না মিষ্টি।
বল অ্যালোপেসিয়া। এ যে আমাদের বংশের স্ট্যাটাস সিম্বল ডার্লিং। বাবার আছে, দাদুর
ছিল। এমন কি তার দাদুরও ছিল শুনেছি। জান তো টাক হলে টাকা হয়।
-টাকা হয় না টাকা যায়। মিষ্টি দাঁত কিড়মিড় করল, টাকে চুল গজানোর মিথ্যে
ওষুধ খেতে লাখ লাখ টাকা জলে ফেলা।
টাকের অপ্রশংসা মধুর তো রেগে যাবারই কথা। বলল, জান এ আমার ফ্রন্টাল
অ্যালোপেসিয়া। সৌভাগ্যের চিহ্ন? এক জ্যোতিষী বলেছেন।মাথার পেছন দিকে কি ঘন ঘন
কোঁকড়া চুল বল কি সুন্দর তাই না? তুমি বলতে না? সেই যে প্রিন্সেপ ঘাটের চাতালে
গাছের ছায়ায় বসে আমার মাথার চুলে আদর করতে করতে-
প্রিন্সেপ ঘাটের কথায় আবার জ্বলে উঠল মিষ্টি। তার প্রিন্সেপ ঘাট মোটেই
ভাল লাগে না। ভাল লাগে মিলেনিয়াম। কিন্তু কে আর বলে এই বোকারামটাকে। প্রেম করছে
বলে কি মাথা কিনে নিয়েছে নাকি? বলে আজকাল কি প্রেমিকের আকাল পড়েছে? চারিদিকে প্রেম
কত বাড়ছে হু হু করে। ফেসবুক, টুইটার, হাই ফাইভ, টু, মাই জমানা, ইয়াহু মেসেঞ্জার
আরো কত কত। লোক লাগবে না এত প্রেম করার?এক একজন তো দিনে তিন চার শিফট প্রেম করে।
সকালে, ফেসবুক, দুপুরে অফিসে কাজের ফাঁকে কাজে ফাঁকি দিয়ে হাই ফাইভ কি মাই জমানা।
রাত দুপুরে মেসেঞ্জারে সারা গা মাথা ডুবিয়ে বসে থাকে চোখে ঘুম না আসা পর্যন্ত। ঘুম
তো পিছু হটতে হটতে কখনও কখনও ভোরের দরজায় আর না পেরে এলিয়ে পড়ে।
-শুধু ফ্রন্টাল নাকি? আর রগের দুপাশ থেকে যে দুটো উঠেছে পশ্চিম ঘাট আর
পূর্ব ঘাটের মত?
বিড় বিড় করে মধু বলল, হ্যাঁ একটু টেম্পোরালের ভ্যাজাল অবশ্য আছে কিন্তু
তাতে তো আরও বিঊটিফাই হয়েছে কি না বল?
শেষ কথাটা বেশ জোর আর তেজের সঙ্গে বলল। সেটা শুনে মিষ্টি তো হেসে
একেবারে কুটোপাটি। হাসতে হাসতে লুটোপুটি খেতে খেতে বলল, বিউটিফাই হা হা হা। হ্যাঁ
তা বটে। যেন সুন্দর বনের ম্যানগ্রোভ। ক্রমশ কমতে কমতে একেবারে গভীর জলে গিয়ে ডুব
গেলেছে।
হাসতে হাসতে বার বার তার গায়ে ঢলে পড়ছিল মিষ্টি। মধুর বেশ ভালই লাগছিল
প্রেমিকার এই দামাল স্পর্শটা। তাই সে আর এ হাসি থামাতে চায় নি। চুপ করে হাসতে দিল
কিছুক্ষন। শীতের সময় সন্ধ্যেটা বড্ড হড়বড় করে নেমে পড়ে। যদিও পার্কের এদিকে ওদিকে
আলো জ্বলেছে কিন্তু মধু ইচ্ছে করেই একটু আগে এমন জায়গায় এসে বসেছিল যেখানে আলো বেশ
একটু কম। তার হাত আর ঠোঁট যেন ঠান্ডার সেই আধা অন্ধকারে খুঁজে বেড়াচ্ছিলকোনও গরম
নরম বস্তুকে। কিন্তু মিষ্টি সেটা টের পেয়ে ঝট করে তাকে হাত দিয়ে ঠেলে দিল বেশ কিছু
তফাতে।
যেন কাঁদতে ইচ্ছে করছে মধুর। বিড়বিড় করে সে শুধু বলল, সব ঝুট হ্যায় সব
ঝুট হ্যায়। তফাত যাও তফাত যাও।
মিষ্টি তার দিকে কিছুক্ষন তাকিয়ে থেকে ভাবল চুমু না পেয়ে শেষে পাগল হয়ে
গেল না তো ছেলেটা? জিজ্ঞেস করল, কি বলছ তুমি পাগলের মত মধু ডার্লিং?
মধুর বুকটা কান্নায় টনটন করছিল। কোনরকমে সামলে নিয়ে বলল, কিছু না এই
একটু মেহের আলির কথাটা মনে পড়ে গেল তাই-
-রবিঠাকুর? তুমি রবিঠাকুর আবৃত্তি করছ লজ্জা করে না?
মধু তো অবাক। বলল, রবিঠাকুর আওড়ানো লজ্জার কেন হবে সে তো গর্বের?
-হবে আলবাত হবে। রবিঠাকুরের কত চুল ছিল জান? সারা মাথা ভর্তি কি সুন্দর
কোঁকড়া চুল। আর দাড়ি? আর তোমার? সারা মাথায় কটা চুল আছে সেটা না গুনেই বলে দেওয়া
যায়।
মধু উঠতে চায় না। কিন্তু মিষ্টি উঠতে চায়। এরপর বাবা অফিস থেকে ফিরে
এলে কেলেংকারি হবে। মিষ্টি জানে তার বাবা এই একুশ শতকেও মধ্য যুগে রয়ে গেছে। মধু
তো মিষ্টিকে প্রোপজ করে রেখেছে সেই কবে। কিন্তু সেই প্রপোজালের আবেগময় মানেটা কে
আর বোঝাতে যায় এই হিটলার বুড়োটাকে। রাগ করে মনে মনে বুড়োই বলে মিষ্টি। কিন্তু
ভদ্রলোকের বয়েস এখনও পঞ্চান্ন ক্রশ করে নি। এই এত অল্প বয়েসেই প্রেমটেমগুলো সব ভুলে
গেল? মেয়ের যে প্রেমের বয়েস হয়েছে আর তেমন হলে যে একটু এদিক সেদিক ঘুরতে হয় সে
খেয়াল আছে লোকটার? সর্বক্ষন শুধু তাস খেলা আর তাস খেলা। সকালে ট্রেনের
কম্পারটমেন্টেকোলে তোয়ালে মেলে বন্ধুদের সঙ্গে তাস খেলা। অফিসে টেবিলে তাস খেলা।
বিকেলে ফেরার সময় আবার ট্রেনে তাস খেলা। বাড়ি ফিরে চা খেয়ে আবার ক্লাবে গিয়ে রাত
এগারটা পর্যন্ত তাস খেলা। লোকটা যেন তাস ছাড়া আর কিছু জানে না। মিষ্টির তো খুব
তেঁতো লাগে বাবাকে। আর মাকে লাগে খুব টক। সব সময় শুধু এটা কর না ওটা কর না বলে টক
টক করে শুধু টক। খুব টকেটিভ। তার এই টকের মধ্যে একটু সময় করতে পারল না মধুর সঙ্গে
তার মধুমিলনের কথাটা। ফুরসতই পেল না ছাই।
তাই বাড়িতে দেরি করে গেলে বিপদ। বাবাটা পোস্টাফিসের কর্মী না হাইকোটের
উকিল বুঝতে পারে না মিষ্টি। এমন সব চোখা চোখা প্রশ্ন করে যে তার চোখ দিয়ে জল
বেরিয়ে যাবার জোগাড়।
মধু ভাল চাকরি করে। কম্পিউটার এক্সপার্ট। মিষ্টি ডিজাইনিং শিখছে। এ তো
একেবারে রাজজোটক। কিন্তু বাবাটাকে কে বোঝায়। হরতন রুইতন ইস্কাবনের গোলামি করবে তবু
প্রেমে টেক্কা মারতে চাইবে না কাউকে।
সেদিন তো প্রচন্ড ঝগড়া হল মধুর সঙ্গে। বিয়ের পর কি হবে না হবে তার প্রোগ্রাম
কষা হচ্ছিল। মিষ্টি বলছিল তার ভাবি কেরিয়ারের কথা। ডিজাইনিং শিখে সিনেমায় জয়েন
করতে চায় সে।মধু বলল, তুমি চাকরি করবে?
-কেন? আমি কি ফেলনা? আমায় কেউ চাকরি দেবার উপযোগী মনে করে না বুঝি?
-আহা তা কেন? একটুতেই এমন রেগে উঠলে কি চলে? মধু এবার মিষ্টির কানে মধু
ঢালার চেষ্টা করে, রাগ করে না সোনা। তুমি চাকরি করবে কেন? বালাই ষাট তোমার অমন কচি
কচি নরম হাত। সে কি শক্ত শক্ত কাজ করার জন্যে বল?
-তবে কি করার জন্যে শুনি? মিষ্টি তো ঠান্ডা হয় না কিছুতেই। তোমার সেবা
করার জন্যে?
-না না সে তো আমার মাথায় বোলানোর জন্যে। এই জন্যেই তোমার সঙ্গে কথা বলি
না। মধু মুখ ঘুরিয়ে নিল। তার অভিমান বুঝল মিষ্টি। বাচ্চারা যেমন হাত ঘোরালেই নাড়ু
পায় তেমনি মিষ্টি কিন্তু এ পর্যন্ত মধুর আধা টাক আধা চুল মাথায় হাত বুলিয়ে অনেক
কিছু পেয়েছে। কিন্তু সে সবের জন্যে মধুকে যত না বাহবা দেয় তার চেয়ে বেশি বাহবা দেয়
তার এমপ্লয়ারকে। আহা সে মাইনে এত বেশি দেয় বলে তাই না?
আজ একটা পুকুরের পাড়ে বসে আছে ওরা। সেই পুকুরের জলের দিকে তাকিয়ে তার
জলে কি যেন দেখতে লাগল মধু। মিষ্টির খুব বিরক্ত লাগছিল। বেশ কিছুক্ষন তাকে দেখতে দেখতে
বিরক্ত হয়ে বলল, ওই পচা পুকুরের জলে কি রস পাচ্ছ শুনি?
একবার পেছনে তাকিয়ে মুচকি হেসে মধু বলল, খুব মিষ্টি।
-ফাজলামি হচ্ছে? মিষ্টি খুব রেগে গেল।
-ফাজলামি নয় সত্যি। এই তো দেখনা দেখ-
মিষ্টি উকি পেড়ে জলের ভেতর দেখতে লাগল। জলে মিষ্টির মুখের ছায়া পড়েছে।
মধু বলল, তোমার ছায়াটা মিষ্টি কিনা বল?
মিষ্টি সে সব কথায় পাত্তা না দিয়ে বলল, আমি চাকরি করব তুমি কিন্তু করবে
না। এ চাকরিটা ছেড়ে দেবে।
অবাক হয়ে তার দিকে তাকিয়ে রইল মধু। মিষ্টি বলল, কি এমন ফ্যাল ফ্যাল করে
ভ্যাবলার মত দেখছ?
-দেখছি না ভাবছি। ভূতের মুখে রামনাম? এমন কোন মেয়ে কোন দেশে আছে শুনি
যে চায় না তার স্বামী চাকরি করুক?
মিষ্টি রেগে উঠে বলল, আমি ভূত?
-না পেত্নি। কিন্তু আমি চাকরি করি কেন চাও না শুনি?
পেত্নি কথাটায় পাত্তা না দিয়ে খুব নরম হয়ে মিষ্টি মধুর মাথার পেছনের
চুলগুলো আলতো করে ধরে আদর করতে করতে বলল, চাকরি করবে না তুমি কবিতা লিখবে। বড় কবি
হবে।
ভূতের মুখে রামনাম? কথাটা আবার বলতে গিয়েও থেমে গেল সে। কেননা রেগে
যাবে মিষ্টি। শেষে ভাবল লোহা দিয়েই লোহাকে কাটতে হবে। সেও রেগে গিয়ে বলল, আমার
কবিতার মানে বোঝা যায়। আমি যা লিখি সেটা হারান মুদি কি বিশে পাগলাও লিখতে পারে।
যাও ওই হারান মুদির সঙ্গে প্রেম করবা বিশে পাগলাকেই বিয়ে কর গে। আমি চললাম। আর
যাবার আগে বলে রাখি শোন। চাকরি আমি করবই। কম্পিউটার আমার প্রাণ। তোমাকে ছাড়তে পারি
কিন্তু কম্পিউটারকে ছাড়তে পারব না।
একগাদা চোখের জল নিয়ে ফোঁপাতে ফোঁপাতে মিষ্টি বলল, যাও যাও তোমার
মিষ্টিকে তুমি ছাড়তে পার। বেশ বেশ। ছাব্বিশ বছরেইতো মাথায় টাক
গজিয়েছ। আর মিষ্টিকে ছাড়তে চাও কেন তাও তো বুঝতে পারছি। নির্ঘাত সুগারটাও বাধিয়েছ।
এ ম্যা গো। মাথাভরা টাক আবার ডায়াবেটিস!
যেতে যেতে একবার পেছন ফিরে চেঁচাল মধুও, টাক নয় টাক নয় ওটা
অ্যালোপেসিয়া। ফ্রন্টাল অ্যালোপেসিয়া।
মিষ্টি নাক সিটকে বলল, হ্যাঁ টেম্পোরালের ভ্যাজাল দেওয়া।
মিষ্টির হিটলার বাবা কিংবা হাই টকেটিভ মাকে অবশেষে বোঝানো গেছে। ওরা
মিষ্টির বিয়েটাকে স্বীকৃতি দেবে বলেছেন। মধুর মামাকেও জপানো গেছে। মামা তো
প্রাণখোলা হাসি হেসে বলেছেন, নরানাং মাতুলোক্রম। আরে আমিও যে প্রেম করেই বিয়ে
করেছিলাম।
তিনমাস পরে ওরা মিলেনিয়াম পার্ক থেকে বাঁধানো রাস্তা দিয়ে হাটতে হাঁটতে
প্রিন্সেপ ঘাটে গিয়ে হাজির হয়েছে। একটা ঝোপের পাশে বসে পকেট থেকে একটা ফর্ম বার
করেছে মধু।
-উকিলের বাড়ি থেকে এলাম। ম্যারেজ রেজিস্টারের অফিস থেকে। বিয়ের নোটিশটা
তো দিতেই হয় কি বল?
-আমিও উকিল বাড়ি থেকে আসছি। বলে ব্যাগ
থেকে মিষ্টি বার করেছে আর একটা ফর্ম।
-এটা আবার কিসের ফর্ম? মধু অবাক।
-একটা ডিভোর্সের ফর্ম। বলা যায় না কখন কি হয়। তোমার যা মেজাজ! আগে থেকে
প্রিকশনটা নিয়ে রাখাই ভাল। কথায় বলে না প্রিভেনশন ইজ বেটার দ্যান কিয়োর?
-তাই বলে বিয়ের আগেই ডিভোর্সের ফর্ম? মধু রেগে উঠল।
-দেখলে? সামান্য এইতেই কেমন রেগে উঠলে? তাহলে বুঝছ এটা দরকার কিনা?
মধু হো হো করে হেসে উঠল, আমি কবিতা লিখব মিষ্টি। নিশ্চয় লিখব। তবে সেটা
চাকরি সামলে।
মিষ্টিও হাসল প্রাণখুলে, আমিও তোমার টাক মাথায় বিলি কাটব গো। তবে সেটা
ডিজাইনারের চাকরি সামলে।
দুজনের মনখোলা প্রাণখোলা হাসির মধ্যেই রেজিস্ট্রেশনের ফর্ম ফিল আপ হয়ে
গেল। প্রিন্সেপ ঘাটের গঙ্গার জলে তখন দুজনের ছায়া ভাসছে। মিলেনিয়াম পার্কের গঙ্গার
জলও মিশছে সে জলে।
৮/৫/২০১৬
দাদা মিষ্টি -মধুর একটা বেশ মিষ্টি গল্প উপহার দিলেন ।
উত্তরমুছুন