কবিতা - পলা



কে আমি ?

পলা
অনেক কথা বলার ছিল,
ইতস্ততঃ করছিলাম এতদিন
কিন্তু অনুভূতিগুলো চাপা থেকে থেকে 
কি রকম ভারি ঠেকছে,
মিলিয়ে নেওয়া বড় দরকার।
জন্মের পর থেকেই মনে হত 
আমি যেন জন্মজন্মান্তর ধরে জীবন যাপন করে চলেছি।
সেই কবে পাশের বাড়িতে নিয়ম করে কালিপদদা যে গামছাটা 
বাগানে শুকোতে দিত কাঠের ক্লিপ আটকে,
আমি ওকে পাখি মনে করতাম, 
হাওয়ায় উড়ত না যেন ডানা ঝাপটাতো।
আমাকে না জানিয়ে সেই সময়টা কখন পাখি হয়ে উড়ে গেল
এই কথাটাই জানানো দরকার, আসলে কালিপদদা বা গামছা 
অথবা সেই সময়টা কোনটা কে আপন করেছিলাম জানিনা,
যেরকম বৃষ্টির সময় খেলার মাঠে জল জমলে
সঙ্গীসাথীরা গল্পের বইএ ডুব দিত,
এদিকে গোনাগুনতি চারটে ব্যাং এর সাথে আমার ভাল আলাপ ছিল,
তাদের সাথে দেখা করতে যেতেই হত।
লোকে বলত সোনাব্যাং, কিন্তু আমি ভালো করে দেখেছি ফ্যাকাশে হলুদ রঙ
তাও যেই না গল্প শুরু হত, নীলচে কালো লাগত দেখতে।
বাক্যির অন্ত নেই, গলাসর্বস্ব, গলা ফুলিয়ে এত কি যে কথা আমাকেই শুনতে হত।
এখানেও একটা প্রশ্ন, আমি কাকে খুঁজছি এখন?
ব্যাংগুলোকে না বৃষ্টির বিকেল নাকি সঙ্গী সাথী ভরা সেই সময়টাকে।
নবমীদি যখন কাপড় কাচত কলতলায়,
সাবানের ফেনায় হাজার হাজার রঙিন ঘুড়ি উড়ত,
আবার তক্ষুনি আকাশের দিকে তাকালে দেখতাম
আমার চোখে ভেসে যাচ্ছে রথের মেলায় বিক্রি হওয়া সাদা লম্বা বেলুন
তবে পুরো সাদা না, স্বচ্ছ বুদ্‌বুদের মতন নীল আকাশে,
আমার ইচ্ছে মত তাদের ভাসিয়ে দিচ্ছি তুলে নিচ্ছি
আজও দেখতে পাই, তবে সেই স্বচ্ছতা নেই।
বড় ধুলো ময়লা ভরা, আসলে নবমীদির মত সুন্দর করে কাপড় কাচতে কেউ পারে না,
তাই আমার চোখে এত ধুলো, আমি কি তাহলে নবমীদিকেই খুঁজে যাবো।
এরকম সব কিছু নিয়েই আমার জগত,
কখনো কখনো আকাশ থেকে বালির চর হাতের মুঠোয় লুকোই মনে মনে,
যদিও এতটা আমার দরকার নেই, আমি শুধু চাই
আমার খুব আদরের গোল একটা পাথর,
বরফের নারায়ণ শিলা যেন এক দিকে একটু চাপা,
কোনো সুন্দরী গর্বিতার চাপা ঠোঁটের মত।
এবারে ভাবতে সত্যি কি আমি চাই,
এটাই মিলিয়ে নিতে হবে, না হতে পেরেছি সুন্দরী গর্বিতা, 
না ধরে রাখতে পেরেছি প্রিয় সময় , প্রিয় জাগতিক বস্তু।


0 মতামত:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন