মুখোমুখি - নূপুর বড়ুয়া



মুখোমুখি
অজেয় বিক্রম শিবুর সাক্ষাৎকার নিয়েছেন নূপুর বড়ুয়া


এবারে আমরা হঠাৎই পেয়ে যাই আমাদের অত্যন্ত প্রিয় বন্ধু অজেয় বিক্রম দাশ (শিবু) কে, যদিও সে লেখালেখিতে পরিচিত অজেয় বিক্রম শিবু বলে সুদূর বাংলাদেশ থেকে কিছুদিনের জন্য কলকাতায় আসা..তার মধ্যেই সময়করে একটু কথোপকথন...

চিলেকোঠা - আচ্ছা শিবু তুমি এত ভাল লেখো, এর উৎস কোথায়?
শিবু - বাড়িতে সবাই খুব সংস্কৃতমনা ছোটবেলা থেকে অনেক বই পড়ার সুযোগ পেয়েছি, বাবাকেও পড়তে দেখেছি, সে রাত জেগে পড়া সেখান থেকে লেখার আগ্রহ জন্মায় আর এখনও লেখছি তারপরেই অজেয় বলতে শুরু করে ছড়া, স্কুল-এর দেওয়াল পত্রিকাতে প্রথম লেখা
তখন আমি ক্লাস এইটে উঠেছি -
"কাজি ভাইয়ের পোষা বেজি
ওজন তাহার আড়াই কেজি
বেজায় মোটা ভীষণ পাজি
পেলে ছাড়া দেয় না ধরা বেড়ায় সারা গাঁ ,
কোথায় খুঁজে পাবো তারে কচি মোরগ ছা "

চিলেকোঠা-বাহ্! খুব সুন্দর আচ্ছা তোমার নাম থেকে এই দাশ-টা সরে গেল কী করে?
শিবু - সরেনি, শুধু লেখালেখির ক্ষেত্রেই এই নামের ব্যবহার আমার যখন প্রথম বই বের হয় তখন প্রকাশক নাম দেখে বলল, একটা রিকোয়েস্ট, নাম থেকে দাশ-টা ছাটাই করে দেই এই লেখালেখির ক্ষেত্রে, মেনে নিলাম। মা বাবাকে সেই কথা বলা হয়নি তখন। বাবা বইটা হাতে পেয়ে অবাক হয়ে মা কে গিয়ে প্রশ্ন করলো, আমার এখনো মনে পড়ে
চিলেকোঠা - তোমার ছেলেবেলার কথা কিছু বল

শিবু - ছেলেবেলাটা ঠিক ছেলেবেলার মতোই কেটেছে, তবে ডানপিটে ছিলাম খুব পুকুরে স্নান, গাছে ঢিল ছোড়া, বাইসাইকেল, মায়ের হাতে পিটুনি বকুনি সবমিলিয়ে চ্যাম্পিয়ন বলতে পার। দুই দিদি বাবা মা সবার ব্যস্ত সময় কাটতো আমাকে নিয়ে

চিলেকোঠা - অজেয়, তুমিতো নাটক এর সাথেও জড়িত। কবে কীভাবে এই জগৎটা তোমার অন্যতম ভালবাসা হয়ে উঠলো?

শিবু - নাটক আর আমি... স্কুলের পাশেই টাউনহল সেখানে দেখতাম নাটকের রিহার্সেল মাঝেমাঝে, ভাললাগতো। আমি তখন ক্লাস এইটে, একদিন পরিচিত এক দাদা জানতে চাইলো আমি নাটক করবো কি না, রাজি হয়ে গেলাম, / দিন বিকেলবেলা রিহার্সলে গেলাম, হয়ে গেল এই তোর বায়োস্কোপ দেখবি? দেখুম... এই হল নাটকের ডায়লগ, বায়োস্কোপ দেখালো চান মিয়া ৫০ পয়সা টিকেট, এই হল শুরু। তারপর এই দলের হয়ে ২৫ বছর ধরে আজও কাজ করছি। তবে মঞ্চের পিছনে কাজ করে আজকাল সাচ্ছন্দ্য বোধ করি বেশি মঞ্চ চলছে, চলবে। গণ মানুষের কথা বলবে, নাটক হোক গণ চেতনার হাতিয়ার, গণ মানুষের হাতিয়ার

আলোচনা চলতে থাকে, বুঝতে চেষ্টা করি মানুষ শিবুকে। খুব সহজ সাধাসিধে একজন মানুষ যার মধ্যে কোন জটিলতা নেই, খুব সহজেই আপন হয়ে যায়। এই কথা বলতেই শিবু বলে উঠলো... জটিল অংকের হিসেব বরাবরই মাথায় কম ঢোকে, সেই ছেলেবেলা থেকেই জটিলতা, কঠিন অবস্থা বুঝি কম। তাই নিজের ভাবনাগুলো কবিতায় প্রকাশ করেছি সহজ সরল ভাবে, মন্দ ছন্দে। এমনি করেই নিজের ভেতর ছন্দ খুঁজি। চারপাশের জটিল অবস্থা কখনও আমার ভেতর ঝড় তুলেছে, খুঁজেছি শান্তি। নিজেকে প্রকাশ করতে চেয়েছি কবিতার মধ্যে দিয়ে
পরের প্রশ্ন, ভবিষ্যতে আর কী কী করার কথা ভাব?
সময় চলে যাচ্ছে, দিনান্তে পৃথিবী ঘুরছে এই আলো আঁধারের মাঝে, আমার সকল কাজে। জীবন চলে যায় যাবে, বেশিরভাগ ব্যাপারেই সময় গেলে টের পাই ভালমন্দটা। যাই হোক, ভালো সবকিছুর কথা ভাবি, ভালোর পাশে থাকবো তাই ভাবি
চিলেকোঠা সম্পর্কে তোমার ভাবনা....
শিবু - চিলেকোঠার গল্প শুনেছিলাম আমার দিদি নন্দিনী সেনগুপ্তার কাছে, দিদি আমাকে এই গ্রুপে অ্যাড করেছিলেন প্রথম দিকে দেখতে থাকি তারপর মাঝেমাঝে লিখতে থাকি এরপর থেকে চলতে থাকি, চলছি চলবো আরও বলবো, জয় হোক চিলেকোঠার, জয়তু চিলেকোঠা নিঃস্বার্থভাবে কাজ করে যাক চিলেকোঠা এমন করেই আপন করে নিক সকলকে |



0 মতামত:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন