কবিতা - গৌতম সেন



কুরুক্ষেত্র
গৌতম সেন

জীবনানন্দের সোনালি ডানার চিল আপন মনের ভুলে
নদীকূল ছেড়ে কখন যেন শহুরে চৌহদ্দিতে এসে
উড়ান জমালো ধূসর আকাশের বুকে।
ডানা তার বিবর্ণ বিবাগী হাওয়ায় –
শ্যেন দৃষ্টিতে তার
নীচে ওই মৃতপ্রায় শহর দেখা যায়।

উড্ডীয়মান চিল নির্বাক বিস্ময়ে ভেবে মরে
নীচে ওই কসের এত মৃত্যুমিছিল!
হায় চিল, শোনো তবে মিথ্যা নয়, এ নির্মম বাস্তব
দুর্জন মানবসত্তা মেতেছে আজ মানব হত্যা মোচ্ছবে,
অধর্মের উস্কানি আর শয়তানির উদ্ভট তাণ্ড
মিশল করে জ্বালিয়েছে এক হিংসানলের মশাল।

নারীকে আবার করেছে পণ্য, নগ্নীকরণ, নির্যাতন, ধর্ষণ
কিছুই রাখেনি বাদ। শিশু থেকে যুবক, তরুণ –
নির্বিচারে দেহ হতে শিরঃছেদন। দিকে দিকে পৈশাচিক উল্লাসরণন।
নানা ধর্মের নামে বিকৃত এক বিরোধানলে উত্তপ্ত চরাচর -
কে কার দোসর!
বিনা প্রতিরোধে ধূলিসাৎ  যত সৃষ্টি-সোপান
বর্বর অট্টহাসির মাঝে যত মিথ্যা ওজর।

হায় চিল, উড়ন্ত ডানার বেঁচে থাকা বর্ণালী নিয়ে ফিরে যাও
শান্ত নদীর তীরে, স্বর্ণালী ফসলের মাঠে, এখনও সময় আছে
এ পৃথিবী ধ্বংসস্তুপ হতে। যদি কোনদিন এ ধ্বংসলীলা হয় শেষ,
মানবতার চিতাভস্ম হাওয়ায় হাওয়ায় ভেসে যাবে, খবর পাবে -
সেই দিন এসো না হয় ফিরে – দেখে যেও শোকস্তব্ধ শ্মশান
এ মহাবিশ্বের কুরুক্ষেত্রটিরে।


0 মতামত:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন