কবিতা - দেবযানী বিশ্বাস



রাজার হস্ত
দেবযানী বিশ্বাস



গলায় দড়ি দিল একজন
জ্বালাটা খিদের;
জ্বালাটা জীবন যুদ্ধে হেরে যাওয়ার
এক নিদারুণ অসহায়তা
মাধ্যমিক পড়ুয়া ছেলের মুখে
দুমুঠো ভাত তুলে দিতে না পারার


খালি পাকস্থলীতে কি বিদ্যাভ্যাস হয়?
মনের খিদে মেটাতে
নেই কি প্রয়োজন পেটের খিদে মেটানোর?
প্রশ্নগুলো ধাক্কা খেয়ে ফেরে
পাষাণ বুকে, নির্লজ্জ চেতনায়;
দায়টা কার, বুভুক্ষু পেটে অন্ন যোগানোর?


অতিরিক্ত খাদ্যাভ্যাসে রক্তনালিকায় জমে মেদ,
নড়তে চড়তে হাঁপ; তবু টুনি লাগানো দোকানের পাড়ে
দোকানের পাশে মাংস ঘি এর গন্ধ  মন কাড়ে,
হাতে হাতে ফেরে ফয়েলে মোড়া গরম প্যাকেট,
আর রঙিন কাচের গ্লাসে
টুংটাং শব্দগুলি নড়ে




আর ঠিক তখনি আঁধার শীতের রাতে
মাটির ঘরে কুঁকড়ে থাকে
ধুঁকতে থাকা জীবন্ত সব লাশ;
জল শুকনো ঘোলাটে চোখে শুধু
গরম ভাতের স্বপ্ন-
প্রাণ ধরতে বিসর্জনে বাকি সকল আশ

খেলায়, মেলায়, গাড়ির চাকায়
উড়তে থাকে টাকা;
মঞ্চ বেঁধে গরম গরম বিষাক্ত সব বুলি
বেহিসেবি কোটি কোটি ওড়ে টাকা  
ডাইনে বাঁয়ে সামনে পিছে,
ভরছে কেবল হাঙরের হাঁ মুখগুলি


যন্ত্র খোঁজে দুর্বল হাতগুলো;
ফুরোয় না যে শীত
ছাদফুটো ওই মানুষগুলোর ঘরে,
অট্টালিকায় জমাট পার্টি তখন
আধমরাদের বুকের উপর উঠে
থলথলে পেট উদোম নৃত্য করে


1 মতামত:

  1. অসাধারন লেখনী.. এ যুগের বাস্তব এক চিত্র ফুতে উঠেছে সমগ্র কবিতায়, মনকে নাড়া দিয়ে গ্যালো।

    উত্তরমুছুন