সম্বোধন
শ্রীশুভ্র
আমরা বাঙালিরা নিজেদের নামের আগে মিঃ মিসেসঃ মিসঃ বসাই কেন? এমনকি বাঙালি জেনেও পরস্পরকে মিঃ মিসেসঃ মিসঃ বলে সম্বোধন করাকেই
সুশিক্ষিত সংস্কৃতি (কালচার) বলে গণ্যই বা
করি কেন? বিজাতীয় সম্বোধনে নিজেদের পরিচয় জ্ঞাপন তো সুশিক্ষা, সুস্থ রুচি বা সুসংস্কৃতির কোনোটাই নয়!
জার্মানরা একই খ্রিস্টান সম্প্রদায়গোষ্ঠী
হয়েও পরস্পরকে হের, ফ্রাউ, ফ্রয়লাইন না বলে ইংরেজদের মতো মিঃ মিসেসঃ মিসঃ বলে সম্বোধন করে না
নিজেদের মধ্যে। ফরাসিরাও তদ্রুপ! মঁশিয়ে, মাদমোয়াজেল না বলে নিজেদেরকে
কখনোই মিঃ মিসেসঃ বলবে না! স্প্যানিশরা যেমন সেনোর, সেনোরা, সেনোরিয়েটা বলেই
নিজেদের পরিচয়
দেবে! পৃথিবীর সব উন্নত স্বাধীন সার্বভৌম জাতিই এই বোধকেই স্ব স্ব জাতির প্রেক্ষিতে
সুশিক্ষা, সুস্থ রুচি ও সুসংস্কৃতি বলে
গণ্য করে!
শুধু আমরা বাঙালিরাই নিজেদের পরিচয়ের সম্বোধন জ্ঞাপনের
ক্ষেত্রে, শ্রী ও শ্রীমতীকে সযত্নে এড়িয়ে মিঃ, মিসেসঃ, মিসঃ বলে বেশ শ্লাঘা
বোধ করি! আবার আমরা
মুসলমান হলে পরস্পরকে জনাব,
বেগম ইত্যাদি সম্বোধনে সম্বোধিত করে ইসলামের ঐতিহ্য বহন
করছি ভেবে শান্তি পাই!
আমরা বাঙালি হিন্দু মুসলমান কেউই স্মরণে রাখি না মিঃ মিসেসঃ মিসঃ বা জনাব, বেগম ইত্যাদি সম্বোধনগুলি ইতিহাসের বিভিন্ন পর্যায়ে ভিন্ন ভিন্ন বিদেশি শক্তির অধীনে পরাভূত হয়ে শতাব্দীব্যাপি পরাধীন থেকেই মজ্জাগত করে
ফেলেছি! এবং এমন ভাবেই মজ্জাগত করে ফেলেছি, যে হাজার পাতার ডিগ্রি অর্জন করেও তাতে লজ্জা পাই না আর! কি লজ্জার কথা!
আদৌ কি কোনদিন আমরা আর স্বাধীন মনোবৃত্তির আলোকে নিজেদের প্রকৃত শিক্ষিত করে তুলতে পারব?
চমৎকার লেখা শুভ্র দা। কিন্তু এটা কবিতা বলা হল কেন?
উত্তরমুছুন