একা খোকা
সারা উবনের –কে
গাব্রিয়েলা মিস্ত্রাল
অনুবাদ- জয়া চৌধুরী
কান্নার শব্দ কানে আসতেই, চড়াইয়ের গায়ে থেমে গেলাম
পথের মাঝে থাকা র্যাঞ্চের দরজার কাছে এগিয়ে গেলাম।
মিষ্টি মুখের এক খোকা ওর বিছানা থেকে আমার দিকে তাকাল
এক অসম্ভব কোমলতা , ঠিক যেন ওয়াইন আমাকে মাতাল করে তুলল!
মা-টি দেরী করছিল, পতিত জমিতে নুয়ে পড়েছিল;
খোকা জেগে গিয়ে সেই গোলাপের বৃন্ত খুঁজছিল
কান্নায় ভেঙে পড়ল... আমি ওকে বুকে জড়িয়ে নিলাম,
একটা কাঁপা কাঁপা ঘুমপাড়ানি গান, আমার গলায় উঠে এল।
খোলা জানলা দিয়ে চাঁদটা আমাদের দেখছিল।
ততক্ষণে খোকা ঘুমিয়ে পড়েছে , আমার বুকটা ভরে উঠছিল।
আর ঠিক তখন, মা-টি ভীরু হাতে দরজাটা খুলে দিল,
যে মানুষটা আমার কোলে ঘুমন্ত ছেলেটি রাখতে দিয়েছিল সেই
ভাগ্যবতী মুখটা আমার এত দেখতে ইচ্ছে করছিল!
গাব্রিয়েলা
মিস্ত্রাল
কবি পরিচিতিঃ
লুসিলা গোদোই আলকাইয়েগা ওরফে গাব্রিয়েলা মিস্ত্রাল
হিস্পানিক সাহিত্য জগতের এগার জন নোবেল পদক জয়ী সাহিত্যিকদের মধ্যে একমাত্র মহিলা
কবি ছিলেন। ১৮৮৯ সালে চিলের ভিক্যুনিয়া শহরে জন্মগ্রহণ করেন। বাল্যকালে অর্থাভাবে
লেখাপড়া অর্ধসমাপ্ত রেখে ছেড়ে দিতে হলেও পরবর্তী কালে সম্পূর্ণ লাতিন আমেরিকা জুড়ে
তিনি সর্বজন শ্রদ্ধেয় শিক্ষাবিদ হিসাবে পরিচিত হন। ১৯৪৫ সালে “তার শক্তিশালী আবেগ
সমৃদ্ধ লাতিন আমেরিকার আদর্শগত উচ্চাশার প্রতিরূপ লিরিক্যাল পদ্যের জন্য” সুইডিশ
অকাদেমি নোবেল পুরষ্কার প্রদান করে। এরপর তিনি আমেরিকান চিলের কনসাল নিযুক্ত হন।
সেখানেই ১৯৫৭ সালে প্রয়াত হন তিনি। তাঁর অসংখ্য কাব্যগ্রন্থের মধ্যে কয়েকটি হল
“নির্জনতা”, “নারীদের জন্য পাঠ”, “মায়া” ইত্যাদি।
0 মতামত:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন