রাত্রি ও অন্যান্য
দেবাশীষ (বাংলাদেশ)
১
দিনান্তে সেই পরাজয়ের আখ্যান
ধ্রুপদী নোঙর দেয়নি নির্বাণ।
অপাংক্তেয় মেঘগুলিকে সরিয়ে নিয়তির হাঁস
উড়ে গ্যাছে জোনাকির দিকে, কেননা,
মায়ান সভ্যতার ক্যালেন্ডারের সাথে বিলুপ্ত হয়েছে
যাবতীয় ভালবাসাবাসি।
রাতগুলো ভালবাসা গিলছে চিরকাল বেহায়ার মতো।
২
মেয়েটার স্বপ্নে ছিল তিন কামরার বাড়ি,
একটা আয়না আর গ্র্যান্ড ফাদার ক্লক, সুসময়ের
ঘণ্টা বেজে যাবে ঢং ঢং ...
ছেলেটা ব্রিজের ওপর দাঁড়িয়ে গভীর মনোযোগে
জলের জ্যামিতি দেখছিল, ফিরল একটা সিদ্ধান্ত নিয়ে-
প্রতিটা রেখার পরিবর্তনে নতুন বৃত্তের জন্ম হয়।
ছেলেটা চিনি এবং লবণের মাত্রা সয়েছিল আর
মেয়েটা আনন্দগুলো তুলে রেখেছিল তোরঙ্গে, যদি কোনদিন...
রাত্তিরে গাড়িটা সমান্তরাল উপেক্ষা করে ব্রিজ থেকে
জলের বৃত্তে চলে এলো, আয়নাটা আজো আছে, বিকল হয়েছে
শুধু গ্র্যান্ড ফাদার ক্লক।
৩
যে রাত্তিরে তুমি কেঁদেছিলে আমার শবকে ঘিরে;
চিতার আগুন উস্কে দিয়ে লিখেছিলাম, শোনো
শ্মশানে কাঁদবেনা, ওখানে আমি নেই, কেননা
কবিতার মৃত্যু নেই।
৪
আমার শৈল্পিক নৈপুণ্যগুলো কেন যেন
রাত্তিরেই ডানা মেলে;
তখন আমার চন্দ্রমুখী প্রেমিকারা
যাবতীয় সমরাস্ত্র নিয়ে প্রস্তুত, আর ঠিক তক্ষুনি
আমি জানিয়ে দেই -
গোলাপ একটা অসুস্থ শিল্প, আর
প্রতিটা যুদ্ধ আমাকে আরও একটু সংগঠিত করে।
৫
প্রেমটাই সমস্ত নয়
জীবনের জন্য টাটকা বাতাস, বৃষ্টি প্রতিরোধে ছাদ আর
বেঁচে থাকবার জন্য খাবারের প্রয়োজন, অথচ
চিরকাল শুধুই আত্মকেন্দ্রিক প্রেমের কাব্য রচিত হল!
অথচ, এসমস্ত
বাসে প্রেম, গলিতে প্রেম, পার্কের বেঞ্চিতে, মুঠোফোনে,
ফেসবুকে গোপনে উথাল পাথাল প্রেমের আল পেড়িয়ে
ঘোলা রাতগুলো চলে যায় বারংবার জোয়ারের নিমন্ত্রণে।
এমনতো নয়,
শুধুমাত্র ভাটির দেশেই প্রেমের গোলাপ ফোটে!
dmaz.apex@gmail.com
0 মতামত:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন