ও
সুজয় চক্রবর্তী
সুজয় চক্রবর্তী
আমার বাড়ির পাশে ভৈরবদের আম বাগান। সন্ধে হলেই সেখানে ঘুটঘুটে অন্ধকার। সেই অন্ধকারের বুক চিরে রোজ একটা ছায়া মূর্তি আমার সামনে এসে দাঁড়ায়। আমি তার জন্য অপেক্ষা করে থাকি। ছায়া মূর্তিটাকে আগে পাশ কাটাতে চাইতাম, কিন্তু এখন পারি না।
আজ যখন ও এলো আমিই প্রথম মুখ খুলি, "কেমন আছো?"
ও বললো, " যেমন তুমি রেখেছিলে, তেমনই...।"
বেশ বিমর্ষ দেখাচ্ছিল ওকে।
ও বললো, " যেমন তুমি রেখেছিলে, তেমনই...।"
বেশ বিমর্ষ দেখাচ্ছিল ওকে।
বুঝি, ও খুব একটা ভালো নেই। ওকে ভালো রাখার কথা তো আমারই ছিল। চেষ্টা করিনি কোনওদিনও। ওর চাহিদা তো ছিল যৎসামান্যই। ত্যানা কাপড়েই চালিয়ে দিত মাসকে মাস। আর সপ্তাহে একবার বাটামাছের ঝোল; তাতেই ওর আনন্দ! কোনও বাড়তি স্বাদ-আহ্লাদ ছিল না। তবুও ও আমাকে ভালবাসতো। খুব।
তবে মাঝে মাঝেই বাড়ি ছেড়ে চলে যাওয়ার কথা বলতো ও। আমি ওর কথায় খুব একটা পাত্তা দিতাম না।
একবার যখন বিষ খেল, তখন হাসপাতালের বেডে শুয়ে আমার হাতদুটো ধরে বলেছিল, " ছেলেটা বড় হচ্ছে।.....বলো, তুমি আমাকে ছেড়ে কোথাও যাবে না।"
কথা দিয়েছিলাম। কিন্তু মাস চারেক পরেই আবার টুম্পার সাথে পরকীয়া সম্পর্কে মেতে উঠেছিলাম। জানি না কার কাছ থেকে সে কথা ও জেনে ফেলেছিল। তারপর সেদিন রাতেই ও ভৈরবদের আমবাগানে.....
ছেলেটা তখন উচ্চমাধ্যমিক দেবে।
ও নেই সতেরো বছর হল। আমি ছেলে-বউয়ের সংসারে একাই থাকি। কেমন একা একা লাগে এখন। আমার পঁয়ষট্টি। ও বেঁচে থাকলে ওর ঊনষাট হতো। আমার থেকে ছ' বছরের ছোট ছিল।
ওর সাথে আমার রোজ দেখা হয়। কিন্তু কি অবাক ব্যাপার ওর কিন্তু বয়স বাড়েনি এতটুকু!
তবে আজ ভালো করে খেয়াল করলাম, ওর চোখের কোণে কালি পড়েছে।
ও বললো, " তোমার বুকের ব্যথাটা কেমন আছে? একবার অ্যাটাক হয়ে গেছে, সাবধানে চলাফেরা ক'রো।"
না, একথা আর কেউ বলে না।
আর তাই তো আমিও ধীরে ধীরে কাঙাল হয়ে উঠছি।
ওর ভালোবাসার।
খুব ভাল হয়েছে।
উত্তরমুছুনবেশ লাগল
উত্তরমুছুনখুব ভাল লাগল।
উত্তরমুছুনসুন্দর অনুগল্প ।
উত্তরমুছুনবেশ ভালো লাগলো ।