শেক্সপিয়ারের চরিত্রদের মুম্বাই
দর্শন
পিয়ালী গাঙ্গুলী
ইন্টারকমটা বাজছিল। তুলতেই
সিকিউরিটির গলা “ম্যাডাম আপকে ঘর মে
কই পার্টি হ্যায়
কেয়া?” বললাম “নেহি তো”। ওদিক থেকে জবাব এল “কুছ আজিবও গারিব কাপড়ে পেহনে
লোগ আয়ে হ্যায়। আপসে মিলনা চাহতে
হ্যায়।”
একটু ভেবে বললাম “ঠিক হ্যায়, উপার
ভেজ দিজিয়ে”। খানিক বাদে বেলটা বাজল। ডোরফোনটার দিকে তাকাতেই
চক্ষু চড়কগাছ -
“একি? এ তো সব শেক্সপিয়ারের চরিত্র”।
দরজা খুলতেই এক বয়স্ক ভদ্রলোক (হাতে
জাদুর ছড়ি) একগাল হেসে বলল “মা, আমি
তোমার প্রস্পেরো জেঠু। দেখলাম দুদিন
ধরে তুমি আমাদের নিয়ে ভাবনাচিন্তা করছ, তাই
ভাবলাম, যাই তোমার সাথে একটু দেখা
করে আসি আর এই সুযোগে মুম্বাইটাও ঘুরে নেয়া
যাবে”। আমি কিছু বলার আগেই সবাই হইহই করে ঢুকে বসে পড়ল আমার লিভিং
রুমে।
মহারানী ক্লিওপেট্রা বললেন “এই তোমার ওয়াশরুমটা কোথায় গো? একটু ফ্রেশ হয়ে নিই।
কি পলিউশন রে বাবা তোমাদের শহরে”। সঙ্গে সঙ্গে মিরান্ডা বলে উঠল “হ্যাঁ হ্যাঁ আমিও
যাব”। আমার দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে ক্লিওপেট্রা বললেন “ওই আরেকজনও এখুনি
‘আউট ড্যামড স্পট আউট’ বলে হাত ধুতে এলেন বলে”। বুঝলাম ইঙ্গিতটা লেডি
অতিথি যখন এসেই পড়েছে তখন অভ্যর্থনা
তো করতেই হবে। ঢুকলাম রান্নাঘরে। কফি,
সসেজ আর চিকেন নাগেটস নিয়ে বেরিয়ে
দেখি হ্যামলেট মুখে কীসব বিড়বিড় করতে করতে
বারান্দায় পায়চারি করছেন। সিজারকে
দেখলাম একটু চিন্তিত। আমাকে দেখতেই
জিজ্ঞেস করল “আচ্ছা আমার রথটা তোমাদের গ্যারেজে রাখা যাবে না”? বললাম “না দাদা
ভেতরে ভিজিটার্স পার্কিং নেই। তাছাড়া
চিন্তা কোরো না, এখানে অডি বা বিএমডাবলুও
বাইরে রাখলে চুরি হয় না”।
কফি খেতে খেতে আড্ডা জমে উঠল। এসবের
মধ্যে মিরান্ডা হঠাৎ আবদার করে বসল
“দিদি আমায় ফ্যাশান স্ট্রিট নিয়ে যাবে? শুনেছি ওখানে নাকি খুব সস্তায় ভাল জামা,
জুতো, ব্যাগ এসব পাওয়া যায়”। ক্লিওপেট্রা বললেন “এখানের নাইট লাইফও
তো শুনেছি
খুব বিখ্যাত, ওটাও একটু দেখতে চাই”। আমি অনেক বোঝানোর চেষ্টা করলাম যে ২৬/১১-
র পর থেকে এখানে নাইট-লাইফ বলে আর
কিছু নেই।
সবাই যখন আড্ডায় ব্যাস্ত, ওথেলো চুপচাপ এক কোণে বসে মন দিয়ে কাগজের একটা
বিজ্ঞাপন দেখছেন। উঁকি মেরে দেখি
একটা ছেলেদের ফেয়ারনেস ক্রিমের বিজ্ঞাপন। মনে
মনে খুব কষ্ট হল। আহা রে, গায়ের রঙের জন্য বেচারাকে কত কটূক্তিই না শুনতে হয়।
আমার উৎসাহী অতিথিরা নিজেরাই একটা লিস্ট
করে ফেললেন মুম্বাইয়ের কী কী
দেখবেন। আমায় আর কিছু বলতে হল না, দেখলাম ওরা সবই জানেন। সত্যি, মুম্বাই শহরের
কি জাদু! ফোন করে কয়েকটা ‘ট্যাব ক্যাব’ ডেকে নিয়ে সকলে মিলে বেরিয়ে পড়লাম।
‘মেরিন-ড্রাইভ’ গিয়ে সবাই মহাখুশি। সমুদ্রের পাড়ে বসে হাওয়া খেতে খেতে আর আলোর
সারি দেখে সকলে মুগ্ধ। বললাম রাতে এই
আলোর সারি যখন জ্বলে তখন অপূর্ব দেখতে
লাগে আর একে বলে ‘কুইন্স নেকলেস’।” কিন্তু এত সুন্দর শহরে শহরবাসী সমুদ্রের জলে
এত নোংরা ফেলেছে দেখে সকলেই এর
সমালোচনা করলেন। আমার খুব লজ্জা লাগছিল সেই
মুহূর্তে। সত্যিই বলার কিছু নেই।
‘কোলাবা’ দেখেও সবাই দারুণ উত্তেজিত, বিশেষত মহিলারা। বললাম “আপনাদের কারুর
কিছু কেনার থাকলে...” আমার কথাটা শেষ হওয়ার আগেই মিরান্ডা লাফিয়ে উঠল “হ্যাঁ হ্যাঁ
আমি শপিং করব”। শপিং-এর নামে মহারানী ক্লিওপেট্রা, লেডি ম্যাক্বেথ এমনকী
পোর্শিয়ার মত বুদ্ধিমতী মেয়েও দারুণ
উত্তেজিত। পোর্শিয়া, মিরান্ডা আর
রোজালিন্ড
মিলে ‘কোলাবা কজ্ওয়ে’ প্রায় চষে ফেলল।
হাল ফ্যাশানের টপ, কেপ্রি, হারেম প্যান্ট,
শর্টস, জুতো,
ব্যাগ, জাঙ্ক জুয়েলারি আরও
কত কী। মহারানী ক্লিওপেট্রা নেড়ে
চেড়ে
সবকিছু দেখলেন বটে, কিন্তু কিছু কিনলেন না। ফুটপাথ থেকে জিনিস কিনতে বোধহয় তার
সম্মানে লাগল। লেডি ম্যাকবেথ আমাদের সঙ্গে সঙ্গে ঘুরলেন
বটে, কিন্তু তিনিও কেনাকাটায় কোন
উৎসাহ দেখালেন না। ম্যাকবেথ সিংহাসনে বসার পর থেকে
তাদের স্বামী স্ত্রীর সম্পর্কে যে
একটা দূরত্ব এসে গেছে, সবমিলিয়ে তিনি যে
মানসিক
ভাবে বিপর্যস্ত তা বেশ বোঝা যাচ্ছে।
একদিকে মহিলারা যখন শপিং-এ মত্ত, অন্যদিকে সিজার, ওথেলো আর ম্যাকবেথ
তখন জোর আলোচনায় ব্যাস্ত। ‘গেটওয়ে অফ ইন্ডিয়া’ দেখে আর ‘তাজ প্যালেস’ হোটেলের
সামনে দাঁড়িয়ে কাসবরা ঠিক কীভাবে ঢুকেছিল, তাজ হোটেলের সিকিউরিটির কোথায় কী
ফাঁক ছিল, ইন্ডিয়ান ইন্টেলিজেন্স আরেকটু সতর্ক হলে কীভাবে এত বড়
বিপর্যয় এড়ানো
যেত এই নিয়ে গম্ভীর আলোচনা চলছে, এমন সময় একগাদা শপিং ব্যাগ হাতে মহিলারা
এসে হাজির হলেন। আমি জিজ্ঞেস করলাম “এবার তাহলে আমরা কোথায় যাব”? সবাই
প্রায় সমস্বরে বলে উঠলেন “খিদে পেয়েছে”। আমি বললাম “এই অঞ্চলে প্রচুর বিখ্যাত
খাবারের দোকান আছে, কোথায় খাবেন আপনারা?” সিজার বললেন আচ্ছা কোন একটা
রেস্টুরেন্টে কাসবরা গোলাগুলি
চালিয়েছিল না?” বললাম “হ্যাঁ ‘লিওপল্ড ক্যাফে’। ওরা
দেয়ালে গুলির দাগ আর গ্রেনেডের
গর্তগুলো এখনও রেখে দিয়েছে। কেউ দেখতে চাইলে
দেখায়”। পুরুষরা প্রায় সকলেই একসাথে বলে উঠল “আমরা দেখব”। আমি বললাম “আমার
মাথায় একটা আইডিয়া আছে। এখানের সবকটা
বিখ্যাত রেস্টুরেন্টে ঢুকে অল্প অল্প করে
কিছু খেয়ে নেয়া যেতে পারে। তাহলে
একইদিনে সবকটা দেখা হয়ে যাবে। আমরা এরকম
পাগলামি আগে করেছি”। কথাটা সকলের খুব মনে ধরল।
গেটওয়ে থেকে আমরা প্রথম এলাম ‘পিকাডিলি’তে। খাবারের মেনু
কার্ডের সাথে নম্বর
অনুযায়ী খাবারের ছবিওয়ালা ক্যাটালগ
দেখে সবাই ভীষণ উত্তেজিত। ওখানে অল্প কিছু
খেয়ে আমরা ঢুকলাম ‘ক্যাফে মণ্ডেগার’-এ।
কচিকাচাদের অস্বস্তি না বাড়াতে কিং লিয়ার
আর প্রস্পেরো, দুই সিনিয়ার সিটিজেন এক পিচার বিয়ার নিয়ে আলাদা একটা টেবিলে
বসে
গেলেন। খাবারের দাম দেখে তো সকলে
হতবাক। আমি হেসে বললাম “এটা সাউথ বম্বে,
বড়লোকের জায়গা। এখানে সবকিছু এরকমই
দাম”। যাইহোক, খাবারের অর্ডার দিয়ে
আমাদের দলের প্রেমিক প্রেমিকারা
নিজেদের সেলফি তুলে ফেসবুকে পোস্ট করতে ব্যাস্ত
হয়ে পড়লেন। মিরান্ডার ছবি তোলায় কোন
উৎসাহ নেই। সে ফার্ডিনান্ডকে হোয়াটসঅ্যাপ
করতে ব্যস্ত। বিশেষ কাজ থাকায় ফার্ডিনান্ড
সবার সাথে আসতে পারেননি। এখানে টাকা
দিয়ে গান বাজানো যায় শোনামাত্রই
অর্লান্ডো উঠে পড়ে রোজালিন্ডের পছন্দমত
কয়েকটি গান চালিয়ে এলেন। খাওয়া
দাওয়ার মাঝে মহারানী ক্লিওপেট্রা চট করে আয়না
বের করে একবার দেখে নিলেন মেক আপ ঠিক
আছে কিনা। চোখের ইশারায় সিজারকেও
জিজ্ঞেস করে নিলেন। সিজার বুঝিয়ে
দিলেন সব ঠিক আছে। চোখ মুখ কালো লাগছে একথা
তাকে বলার মত সাহস সিজারেরও নেই।
‘ক্যাফে মণ্ডেগার’ পর্ব শেষ করে সবাই মিলে হইহই করে যাওয়া হল লিওপলড ক্যাফে।
এই ‘লিওপলড ক্যাফে’ নিয়েই সকলের খুব
উৎসাহ। ২৬/১১-র গুলির দাগ দেখতে চাওয়াতে
সেখানের ওয়েটাররা দেওয়ালে গুলির গর্ত, টেবিলের তলায় গ্রেনেডের গর্ত সব দেখালেন।
শুনলাম এখনকার কর্মচারীরা সবাই নতুন।
সেই রাতের ওই মর্মান্তিক ঘটনার
প্রত্যক্ষদর্শী যেসব কর্মচারী ছিলেন
তারা সকলেই কাজ ছেড়ে চলে গেছেন। ‘লিওপলডে’
সামান্য কিছু খেয়ে বেরিয়ে পড়লাম।
পেটে জায়গা রাখতে হবে তো। এরপর রাতে ‘বাড়ে
মিয়া’য় খাওয়া আছে। তাছাড়া খাওয়ার থেকে বেশি, আসল উদ্দেশ্য হল একদিনে মুম্বাইয়ের
কতটা স্বাদ নেয়া যায়। এই পাগলামিতেই
আনন্দ। ঘুরতে ঘুরতে আর খেতে খেতে ওদের
মুম্বাই শহরের অনেক গল্প বললাম, সেই পর্তুগীজ আমল থেকে। শহরের ইতিকথা, বাবরি
মসজিদ ধ্বংসের পরের রায়ট, ৯৩-এর সিরিয়াল ব্লাস্ট, এখনকার পরিস্থিতি, শহরের
আর্থসামাজিক অবস্থা, সাংস্কৃতিক পরিবেশ সবকিছু, খুঁটিনাটি জানতে ওঁরা আগ্রহী।
তবে সকলের সবচেয়ে বেশি উৎসাহ দুটো
ব্যাপারে – বলিউড আর মুম্বাইয়ের আন্ডার-
ওয়ার্ল্ড। মহিলারা ততক্ষণে ঠিক করে
ফেলেছেন কাল সকালে বলিউড স্টারেদের
বাংলোগুলো দেখতে যাবেন, বিশেষ করে শাহরুখ খানের ‘মান্নাত’ আর অমিতাভ বচ্চনের
“জলসা’’। পুরুষদের এ বিষয়ে অতটা আগ্রহ নেই। দাউদ, ছোটা রাজান, ছোটা শাকিল, আবু
সালেম এদের নিয়ে পুরুষরা বেশি
উৎসাহী। আমিও গড়গড় করে সব বলে চললাম, প্রায়
মুখস্তর মত। ভাগ্যিস সুকেতু মেহতার ‘দা ম্যাক্সিমাম্ সিটি’ বইটা পড়েছিলাম। অনবদ্য
বই। মুম্বাই সম্বন্ধে জানতে গেলে ওই
বইটা অবশ্যই পড়া উচিৎ। এর মাঝে সিজার আর
ম্যাকবেথ বললেন “আমরা কিন্তু সিএসটি স্টেশনটাও একবার দেখব”। বললাম “আচ্ছা
আজ ফেরার পথে দেখিয়ে দেব”। রাতে ‘বাড়ে মিয়ায়’ খেয়ে ‘সি লিঙ্ক’ ঘুরে বাড়ি ফেরা হল।
সারাদিন ঘুরে সকলেই ক্লান্ত। কিন্তু
উৎসাহর কারুর শেষ নেই। বাড়ি ঢুকেই মহিলারা
আমার বেডরুমটা দখল করে ফেললেন। সদ্য
কিনে আনা জামা, জুতোর ট্রায়াল পর্ব শুরু
হল। আয়না দখল নিয়ে প্রায় মারপিট।
পরদিন সকালে পাওভাজি আর বড়া পাও দিয়ে
ওদের ব্রেকফাস্ট করালাম। মুম্বাই এসে এই
দুটো জিনিস না খেলে তো মুম্বাই দর্শন
বৃথা। মাথায় আছে জুহু বিচে গিয়ে কালা খাট্টাও
খাওয়াতে হবে ওদের। সকাল সকাল ট্যাব
ক্যাবে করে বেরিয়ে পড়লাম। বলিউড স্টারদের
বাড়ি এক এক করে দেখে, ব্যান্ডস্ট্যান্ড, জগার্স পার্ক ঘুরে এসে হাজির হলাম
‘মহালক্ষ্মী মন্দিরে’। হঠাৎ করে ঝড় উঠেছে, সমুদ্রের জল উথাল পাথাল করছে।
ঝমঝমিয়ে বৃষ্টি নেমে এল। ছুটে আশ্রয়
নিলাম মন্দিরের ছাউনিতে। মন্দিরের অগুনতি
দর্শনার্থীদের মধ্যে আমার বিশেষ
অতিথিরা একেবারে মিলেমিশে একাকার। তাদের
চিরাচরিত পোশাক ছেড়ে হাফ প্যান্ট, কেপ্রি এসব পরে ওরা সকলেই এখন একেবারে
মুম্বাই কাটিং। বৃষ্টি থামতে ‘মহালক্ষী মন্দির’ থেকে বেরিয়ে ‘হাজী আলী’ দেখে রওনা
হলাম আমার প্রিয় জায়গার উদ্দেশ্যে – ‘সিদ্ধিবিনায়ক মন্দির’। আজ মঙ্গলবার, তাই
ভিড় উপচে পড়ছে। গণপতি বাপ্পার দর্শন
করে বাইরে ইঁদুরের কানে কানে প্রার্থনা
করলাম। এই ব্যাপারটা ওদের সকলের খুব
মজা লাগাতে ইন্দুরের কানে প্রার্থনা করার
হুড়োহুড়ি লেগে গেল। আমি একটু দূরে
দাড়িয়ে কল্পনা করতে লাগলাম কে কী চাইতে পারেন
মঙ্গলমূর্তির কাছে। লিয়ারের মনে বড়
কষ্ট। এত বড় ভুল তিনি কী করে করলেন? হয়ত তিনি মনে মনে কর্ডেলিয়ার কাছে ক্ষমা চাইলেন আর প্রার্থনা করলেন গনেরিল আর
রেগানের যেন
উচিৎ শাস্তি হয়। এদিকে আরেক সিনিয়ার
সিটিজেন প্রস্পেরো নিশ্চয়ই চাইলেন মিলানের
রাজপুত্রর সাথে মিরান্ডার বিয়েটা
দিয়ে মিলানের সামরিক শক্তির সাহায্যে নিজের
হারানো রাজ্য পুনরুদ্ধার করবেন।
আচ্ছা,
ম্যাকবেথ কী চাইলেন? নির্ঘাত কামনা করলেন
ব্যাঙ্কোর সন্তানরা যেন তার সিংহাসন
দখল করতে না পারেন। আর ম্যাকডাফকে যেন
কোনোভাবে শায়েস্তা করা যায়। ও ব্যাটা
বড্ড বেড়েছে। ম্যাকবেথ যাইই চান, লেডি
ম্যাকবেথের যা ছেড়ে দে মা কেঁদে
বাঁচি অবস্থা, তাতে মনে হয় উনি বললেন “চাই না আমার
মহারানীর মুকুট, আমার হাত থেকে রক্তের দাগ যাক আর আমার দুচোখে যেন ঘুম আসে
গণপতি।” ওথেলো কি চাইলেন গায়ের রঙ ফর্সা হোক আর দেসডেমনার সাথে
সম্পর্কটা
আবার মধুর হয়ে যাক? পোরশিয়া নিশ্চয়ই চাইলেন অ্যান্টোনিওর মুক্তি। সিজার চাইলেন
সেনেটের খবরদারির হাত থেকে রেহাই।
মহারানী ক্লিওপেট্রা কী চাইলেন তা আন্দাজ করা
বোধহয় সবচেয়ে সহজ। চিরযৌবন আর পুরুষ
হৃদয়ে আধিপত্য - নির্ঘাত এইটাই চাইলেন।
হঠাৎ এক জোর ধাক্কা। আর একটা কর্কশ
গলায় কে যেন বলল “কী ইংলিশ লিটারেচার
পড়েছ? দুদিন ধরে আমার একটা শেক্সপিয়ারের প্রোজেক্ট করে দিতে পারছ না? পড়ে পড়ে
ঘুমোচ্ছ?” ধাক্কা খেয়ে নড়ে চড়ে উঠলাম। না, এ তো সিদ্ধিবিনায়কের ভিড়ের গুঁতো নয়।
চেয়ে দেখি এ
আমার সদ্য গোঁফ গজানো ছেলের ভাঙা, খ্যাসখ্যাসে গলা।
0 মতামত:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন